শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পরিবর্তন হবে

টিআইবির পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ড. গওহর রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৬ এএম

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গণমাধ্যম ও মানুষের বিবেক বন্দী করা হয়েছে বলে মন্ত্রব্য করেছেন বিশিষ্টজনেরা। গতকাল টিআইবি’র অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার ২০১৮ অনুষ্ঠানে তারা এসব অভিযোগ করেন। বক্তারা বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন গণতন্ত্র আইনের শাসনের অন্তরায়। প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. গওহর রিজভী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে এই ধরণের আলোচনাটা চলতে থাকুক। এটা একসময় অবশ্যই পরিবর্তন হবে।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এর ধানমন্ডিস্থ কার্যালয়ে তগতকাল অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কার ২০১৮ ঘোষণা উপলক্ষে আয়োজিত ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার চ্যালেঞ্জ’ বিষয়ক আলোচনা সভার আয়োজন করে। জাতিসংঘ ঘোষিত ৯ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উদ্্যাপনে টিআইবি’র সপ্তাহব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচীর অংশ হিসেবে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. গওহর রিজভী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন টিআইবি’র বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল। এ সময় উপস্থিত ছিলেন টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার চ্যালেঞ্জ বিষয়ক আলোচনায় মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টিআইবি’র আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক শেখ মনজুর-ই-আলম। প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার ছয়জন সাংবাদিকসহ অনুসন্ধানী অনুষ্ঠান স¤প্রচারের জন্য দুটি টেলিভিশন প্রামাণ্য অনুষ্ঠান এ বছর টিআইবি’র অনুসন্ধানীমূলক সাংবাদিকতা পুরস্কার অর্জন করেছে।
ড. গওহর রিজভী বলেন, সভ্যতার শুরু থেকেই মতপ্রকাশের স্বাধীনতার বিষয়টি প্রাসঙ্গিক। স্বাধীন মত প্রকাশ নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে এটা কোথায় গিয়ে থামবে তা কেউ জানে না। সরকার বা বিরোধী যেই হোক না কেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ছাড়া আমরা যে সমাজ চাই তা সম্ভব নয়। তাই একটা আইন হয়েছে মানে এটা পরিবর্তন করা যাবে না এমন নয়। অনেকবার আইন হয়, আবার তা পরিবর্তনও হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে এই ধরণের আলোচনাটা চলতে থাকুক। এটা একসময় অবশ্যই পরিবর্তন হবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে আইনের পাশাপাশি সামাজিক দন্ডের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি আরো বলেন, আমরা সামাজিকভাবে দুর্নীতিবাজদের বর্জন করতে পারি না। তাই যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দ্বৈত আচরণ থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত নাগরিক সমাজও দুর্নীতির জন্য দায়বদ্ধ থাকবে।
সুলতানা কামাল বলেন, একটা সমাজের বাক স্বাধীনতা থাকতে হবে, চিন্তার স্বাধীনতা থাকতে হবে এবং তার সাথে বিবেকের স্বাধীনতাও থাকতে হবে। আর আমাদের সজাগ হওয়ার জন্য বড় ভূমিকা রাখে গণমাধ্যম। যদি এটাই নিয়ন্ত্রণ করা হয় তাহলে আমাদের সজাগ হওয়ার আর সুযোগ নেই। আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সমালোচনা এজন্যই করছি, কারণ এখানে আশংকা আছে যে, এর মাধ্যমে বিবেক বন্দী আছে। আইনের বিভিন্ন ধারার অপব্যবহার হবে না মানে এই না যে তা কখনোই হবে না। তাই আমরা যদি হয়- এই ভয়ের মধ্যেই আছি। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি সরকারের স্ববিরোধিতার পরিচায়ক। কারণ জাতিসংঘের যে সনদের উপর ভিত্তি করে আমরা আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উদযাপন করছি তার ১৩ অনুচ্ছেদে দুর্নীতি প্রতিরোধে রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে জনগণ, সুশীলসমাজ ও গণমাধ্যমের সম্মিলিত প্রয়াসকে অপরিহার্য বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাই, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণ, গণমাধ্যম ও বেসরকারি সংগঠনসমূহ যাতে সোচ্চার ভূমিকা পালন করতে পারে, তার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার দায়িত্বও সরকারের। কিন্তু এই আইন সেধরণের উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিতে কোনভাবেই সহায়ক নয়। সুতরাং অবিলম্বে এই আইনটি পরিবর্তন, পরিমার্জন, সংশোধন এমনকি প্রয়োজনে বাতিল করে আবার নতুন করে প্রণয়ন করতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
Monir Ahmed ৭ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:২৮ এএম says : 0
বাবাজি এখন থেকেই ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করতেছে।
Total Reply(0)
Nasir Tushar ৭ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:২৮ এএম says : 0
ভোট আসছে আর তেলেসমাতি শুরু হয়ে গেছে।
Total Reply(0)
Hafizur Rahman ৭ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:২৮ এএম says : 0
তামাশা বাদ দিয়ে আগে পরিবর্তন করুন?
Total Reply(0)
Tanvirul Alam ৭ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:২৯ এএম says : 0
জাতির সাথে ভন্ডামি।
Total Reply(0)
G.M. Sydur Rahman Rahab ৭ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:২৯ এএম says : 0
যদি ক্ষমতা ছুটে যায় তাহলে লীগ'স এর কর্মীরা যদি ক্যাঁচিকলে পড়ে তাই অাগেই পরিবর্তন করে ফেলতে চায়,,,,,বাবুরা কি ভাবছো বিএনপিতে কি অাইন নিয়ে পড়া লোক নাই??
Total Reply(0)
Anwarul Azim Bahar ৭ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:২৯ এএম says : 0
নির্বাচনের আগে না পরে।
Total Reply(0)
Earshad Hossain ৭ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৩০ এএম says : 0
ভোট প্রয়োগ করার জন্যই তো এই আইন তৈরি করা হল!
Total Reply(0)
Ahmmed Topu ৭ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:৩০ এএম says : 0
কে তৈরি করছে? কে পরিবর্তন করবে?
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন