শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

প্রশ্নবিদ্ধ রাজনীতি কেউ নেই আপন ঠিকানায়

প্রকাশের সময় : ৫ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টালিন সরকার : রাজনীতিকরা হলেন পাবলিক ফিগার। জনগণকে নিয়েই তাদের কাজ-কারবার। রাজনৈতিক দল ও নেতারা যা করেন তা গণমানুষের মঙ্গলের জন্যই। পাবলিক ফিগার হওয়ায় মানুষ নেতাদের কথাকে অনুকরণ, কাজকে অনুসরণ করে থাকে। মানুষের কাছে রাজনীতিকরা হচ্ছেন ‘আদর্শের দৃষ্টান্ত’। আমাদের পূর্বপুরুষ এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা ভাসানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সে দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন। এমনকি রাজনীতির জীবন্ত কিংবদন্তী ন্যাপ নেতা অধ্যাপক মোজাফ্ফর আহমদের ‘রাজনীতির জন্য ত্যাগ’ প্রেরণার উৎস। খুচরো দলগুলো বাদ; ঐতিহ্যবাহী আওয়ামী লীগ ও জনপ্রিয় দল বিএনপি কি সেটা ধারণ করতে পেরেছে? নাকি আপন ধারা ছুঁড়ে ফেলে বদলে ফেলেছে রাজনীতি? জনগণকে উপেক্ষা করে বড় দুই দলের রাজনীতিই যেন এখন ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও দলীয় স্বার্থ রক্ষা করা। রাজনৈতিক দল বলতে মানুষ মনে করে ক্ষমতালোভীদের ফোরাম। নেতা বলতে অর্থলিপ্সু, দুর্নীতিবাজ, লুণ্ঠনকারী, মিথ্যার চর্চাকারী ব্যক্তিত্ব। কেন এমন হলো!
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ এবং শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ‘কর্মময় যাপিত জীবন’ এখনো দেশপ্রেমের প্রেরণা দেয়। কিন্তু বড় দুই দলের নেতারা নিজ নিজ দলের ‘আইকন’দের অনুসরণ করছে? অপ্রিয় হলেও সত্য যে আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর আদর্শে এবং বিএনপি জিয়ার আদর্শে তথা আপন ঠিকানায় কেউ নেই। আমজনতাকে উপেক্ষা এবং একে অপরকে ঘায়েল করতে ‘কথা বোমা, মিসাইল ক্ষেপণাস্ত্র’ ছুঁড়ে দুই দলের নেতারা রাজনীতিকে করেছেন প্রশ্নবিদ্ধ! দুর্নীতি, লুটপাট, সুবিধাবাদিতা, কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি, একে অন্যের নামে খিস্তিখেঁউর করে জনগণের কাছে নিজেদের করে তুলেছেন ‘খেলো’। মানুষ এখন রাজনীতিক মানেই মনে করেন কপট-মিথ্যাশ্রয়ী-লুণ্ঠনকারী-দুর্নীতিবাজ-প্রতিহিংসাপরায়ণতার চর্চাকারী।
রাজনীতিকে কেন জনগণের কাছে ‘অসুর’ করে তোলা হচ্ছে?
প্রথমে বিএনপির দিকে তাকানো যাক। বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক জিয়াউর রহমানের গড়া জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী বিএনপি যেন হয়ে গেছে কর্পোরেট হাউজ; লিমিটেড কোম্পানী। সুবিধাবাদিতা, বিত্তবৈভব, চাটুকারিতা, পদপদবি নিয়ে হিংসা-বিদ্বেষ যেন হয়ে উঠেছে দলটির নেতাদের প্রধান কাজ। জনগণের স্বার্থে গত ১০ বছরে দলটি কোনো কর্মসূচি দিয়েছে বা দলের নেতাকর্মীদের আদর্শিক ও নৈতিক শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ করেছে এমন নজির নেই। অথচ জিয়াউর রহমান দল প্রতিষ্ঠার পরপরই বিএনপির কর্মীদের রাজনৈতিক প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে কর্মশালা আয়োজনের উদ্যোগ নেন। যার মাধ্যমে দলের কর্মীদের দেশপ্রেম, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ, দলের আদর্শ, সাংগঠনিক নিয়ম-কানুন ইত্যাদি বিষয়ে শিক্ষা প্রদান করা হত। জিয়াউর রহমান ১৯ দফা কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের জাতীয় সংসদের ক্ষমতা বৃদ্ধি; বিচার বিভাগ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেয়া; কৃষি বিপ্লব; গণশিক্ষা বিপ্লব; শিল্প উৎপাদনে বিপ্লব; সেচ ব্যবস্থা চালু রাখতে ১৪০০ খাল খনন ও পুনর্খনন; গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রবর্তন করে অতি অল্প সময়ে ৪০ লক্ষ মানুষকে অক্ষরজ্ঞান দান; গ্রামাঞ্চলে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী (ভিডিপি) গঠন; হাজার হাজার মাইল রাস্তাঘাট নির্মাণ; ২৭৫০০ পল্লী চিকিৎসক নিয়োগ; নতুন নতুন শিল্প কলকারখানা স্থাপনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক বন্ধ্যাত্ব দূরীকরণে উদ্যোগ নেন। এসবগুলোই ছিল জনগণকে তার দলের আদর্শে অনুপ্রাণিত করে তোলা। কথা ও কাজের মাধ্যমে তিনি সব মত ও পথের মানুষকে এক ছাতার নীচে আনার চেষ্টা করেন। দেশের মানুষের মানসিকতা ধারণ করেই বিএনপিকে এগিয়ে নেন। জিয়া দেশের স্বার্ভভৌমত্ব, নাগরিক অধিকার, আমজনতার ভাগ্য উন্নয়নের বেশি প্রাধান্য দিতেন। সেই জিয়ার বিএনপিতে নেই জনগণের রাজনীতিতে; নেই দেশপ্রেমে। যা আছে শুধুই ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থ। আন্দোলনের নামে হাজার হাজার মানুষকে বিপদে ফেলে নিজেরা বিত্তবৈভব পাহারা দিচ্ছেন। এখন পদ পদবির জন্য কামড়াকামড়ি করছেন।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগকে জনগণের দল হিসেবে গড়ে তুলেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাকশাল গঠনের আগ পর্যন্ত দলটির পরতে পরতে ছিল জনমুখিতা। সেই জনগণের দল এখন জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। নির্বাচনের নামে প্রহসন করছে। গণতন্ত্র হলো জনগণের মতামত এবং জনগণের সঙ্গে নিয়ে দেশ শাসন। অথচ দলটি যেন গণতন্ত্রের সংজ্ঞা পাল্টে দিয়েছে। এখন গণতন্ত্রের সংজ্ঞা হচ্ছেÑ‘যে তন্ত্রে দেশ চালালে জনগণের টাকা নিজের টাকা হয়ে যায়; দেশের সম্পদ নিজের সম্পদ হয়ে যায়; লুণ্ঠন করে বিদেশে সম্পদের পাহাড় বানানো যায়; মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে জনগণকে বোকা বানানো যায়; উন্নয়নের ঢোল বাঁজিয়ে ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া যায়; মিথ্যাকে শত-হাজার বার উচ্চারণ করে জনগণের কাছে সত্য বানানো যায়।’ বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ যারা পড়েছেন তারা গোপালগঞ্জের খোকার বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠা সম্পর্কে জেনেছেন। বইটির ছত্রে ছত্রে রয়েছে শেখা-বোঝা ও জীবন গড়ার অনেক কিছু। ছাত্রলীগ ও যুবলীগ করার সময় বঙ্গবন্ধু পুরান ঢাকার ১৫০ মোগলটুলি পার্টি অফিসে থাকতেন। প্রচ- অর্থ কষ্টেও নিজের চিন্তা না করে মানুষের চিন্তা করেছেন। বাড়ি থেকে টাকা এনে মাসিক খরচ চালিয়েছেন। অথচ তারই আদর্শের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের নেতারা এখন শিক্ষা জীবনেই দামি গাড়িতে ঘুরে বেড়ান। ছাত্র রাজনীতি মধ্যেই ঢাকায় প্লট-ফ্লাটের মালিক। যুবলীগের নেতা শেখ মুজিব বাপের কাছ থেকে অর্থ এনে খেয়েছেন সহকর্মীদের খাইয়েছেন। অথচ তার গড়া যুবলীগের আজকের নেতারা ঢাকায় গাড়ী বাড়ির মালিক। ব্যবসা নেই তবুও বিরাট ব্যবসায়ী। কেউ কেউ শত শত কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। গত মাসে যুবলীগের এক নেতা ফেনিতে প্রতিপক্ষের দেয়া ‘পয়জন মিশ্রিত মাদক’ পান করে অসুস্থ হওয়ায় সেখান থেকে ঢাকায় হেলিকপ্টারে আনা হয়। অতপর ঢাকা থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়া হয় এয়ার এম্বুলেন্সে করে। যুব নেতাকে ৩০-৪০ লাখ টাকা খবর করে এয়ার এম্বুলেন্সে বিদেশে নেয়া কল্পনা করা যায়! একজন যুব নেতার কি পরিমাণ অর্থের মালিক হলে এমন খরচ করা সম্ভব তা সহজেই অনুমেয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর বইতে লিখেছেন, নবাবদাজা লিয়াকত আলী খান সভায় ঘোষণা দিলেন ‘যো আওয়ামী লীগ করেগা উসকো শের হাম কুচাল দে গা’। অথচ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এখন নিত্যদিন প্রতিপক্ষকে কুচাল দিচ্ছে! স্বৈরাচারের ‘তমকা’ পেলেও এরশাদের শাসনামলে দেশের উন্নয়ন হয়েছে। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে জেলা উপজেলা ইউনিয়ন এমনকি গ্রামপর্যায়ে অবকাঠামোর উন্নয়ন হয়েছে। প্রায় সবগুলো দল এরশাদবিরোধী আন্দোলনের রাজপথে থাকলেও সরকারের দমন-পীড়নের মধ্যেও মানুষ কথা বলতে পেরেছে। রাজনৈতিক দলগুলো কর্মসূচি পালন করেছে ফ্রি স্টাইলে। অবশ্য ’৯০-এর পর পাল্টেছে দৃশ্যপট। এখন এরশাদ মাঝে মাঝে গণমানুষের পক্ষ্যে কথা বললেও তার রাজনীতি কার্যত ‘বউ’ ভোলানো। তিনি চিত্র-বিচিত্র রাজনীতিতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ায় মানুষের দৃষ্টি  এখন তার দিকে নেই। ’৯০ এর এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দু’দলই ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করেছে। ’৯১ সালে বিএনপি ও ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেছে জনগণের সরাসরি ভোটে। সংসদকে কার্যকর করার ক্ষেত্রে কোনো দলের আন্তরিকতা না থাকলেও দু’দলের কর্মকৌশল কার্যত আপন আলোয় আলোকিত ছিল। দুই দল সাংগঠনিক ও রাজনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ ও পালনে নিজস্ব ধ্যান ধারণা প্রয়োগ করেছে। আওয়ামী লীগের প্রো-ই-িয়ান চিন্তাচেতনা এবং বিএনপির জাতীয়তাবাদী চেতনা মানুষের কাছে ছিল ওপেন সিক্রেট। কাঁদা ছোঁড়াছুড়ি হলেও ‘দুর্নীতি-লুটপাট’ শব্দগুলো তেমন উচ্চারিত হয়নি। যার কারণে রাজনীতিকদের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস অটুট ছিল। প্রশ্ন হলো সে বিশ্বাস এখন কি অবশিষ্ট আছে?
পরিবর্তন শুরু হয় মূলত ২০০৪ সালে। দুই দলের চলার শ্রোতে ‘দুর্নীতি’ শব্দটির আবির্ভাব ঘটে।  চার দলীয় জোট সরকারের শাসনামলে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাটের অভিযোগ তোলে আওয়ামী লীগ। বনানীর ‘হাওয়া ভবন’ থেকে প্যারালাল সরকার পরিচালিত হয় বলে অভিযোগ উঠে। অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে জনগণের রাজনীতি কার্যত দুর্নীতি চর্চার রাজনীতির শ্রোতে ভাসতে থাকে। আদর্শ নীতিতে দুই দলের মধ্যে ব্যপক পরিবর্তন ঘটতে থাকে। কথাবার্তায় যেন শালীনতা উধাও হয়ে যায়। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ সেক্টরের খাম্বা বাণিজ্যের অভিযোগ তোলা হয়। আওয়ামী লীগ সরাসরি অভিযোগ তোলে বিএনপির নেতারা রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাটে মহোৎসব করছে। সভা সমাবেশে আওয়ামী লীগ যত না নিজ দলের আদর্শ নীতি কর্মকৌশল জনগণের সামনে তুলে ধরে তারা চেয়ে কয়েকগুণ বেশি বিএনপির দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। রাজনৈতিক খিস্তিখেঁউরও বাড়তে থাকে। যা মিডিয়ায় ব্যপক ভাবে প্রচার পায়। আওয়ামী লীগের নেতারা স্পষ্টই অভিযোগ করেন রাষ্ট্রের সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। চাঁদাবাজী, দখলদারিত্বের রামরাজত্ব কায়েম করে বিএনপি। বিদ্যুৎ বিভাগের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ হাওয়ায় ভাসতে থাকে। আওয়ামী লীগের ওই সব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করলেও পরবর্তীতে বিএনপির সরকার বিরোধী আন্দোলনে সেটা বেশ আচ করা যায়। বেগম জিয়া একের পর এক আন্দোলন কর্মসূচি দেন; সেগুলো তৃর্ণমূলের নেতারা পালনে রাজপথে নেমে এলেও কেন্দ্রীয় নেতাদের অধিকাংশই ঘরে বসে থাকেন। কিছু নেতা পুলিশের জুলুম নির্যাতন এবং বার বার কারাভোগ করলেও অনেক নেতা সরকারের সঙ্গে সমঝোতা করে নিজেদের অর্থ সম্পদ রক্ষা করার কৌশল নেন। কেউ অর্থ পাচার করে বিদেশে ‘সেকে- হোম’ করেন। বেগম জিয়া আন্দোলনের ঘোষণা দিলেই তারা রাজনৈতিক ভাবে অসুস্থ হয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশ চলে যান। ক্ষমতায় থাকার সময় বিএনপির কিছু নেতা যে রাষ্টীয় সম্পদ লুট করে নিজেরা সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তা এখন প্রায় স্পষ্ট। মুদ্রার অপর পিঠেও একই অবস্থা। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর বিএনপি এখন আওয়ামী লীগে বিরুদ্ধে লুটপাট ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুণ্ঠনের অভিযোগ তুলছে। জিয়ার আদর্শ থেকে দূরে সরে এসে দিল্লি তোষণ নীতি গ্রহণের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে কোরাস গাইছে। তাদের এ অভিযোগের সত্যতার এখনো প্রমাণ না হলেও বাংলাদেশ থেকে ২০১৩ সালে ৯৬৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার পাচার হয়েছে। টাকার অঙ্কে যা ৭৬ হাজার ৩৬১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি (জিএফআই)। পানামা পেপার্স কেলেঙ্কারির ঘটনায় বাংলাদেশের যাদের নাম এসেছে তাদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন। কয়েকজনকে দুদক তলব করেছে। কানাডায় ‘বেগম নগর’ ও মালয়েশিয়ায় ‘সেকেন্ড হোম’ যারা গড়েছেন তাদের অনেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ২০১১ ও ২০১২ সালে বাংলাদেশী নাগরিকদের মধ্যে মালয়েশিয়ায় সেকেন্ড হোম সুযোগ গ্রহণের মাত্রা বেড়েছে। বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি রাজনীতিকরাও হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন। এর আগে ২০০৫, ২০০৬ ও ২০০৭ সালে চারদলীয় জোট সরকারের শেষ সময়ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এমন হুমড়ি খেয়ে পড়েছিলেন বাংলাদেশীরা। ২০০২ সালে এ সুবিধা চালুর পর ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত ২৩৭০ জন বাংলাদেশী ‘সেকেন্ড হোম’ সুবিধা নিয়েছেন।
জনগণের রাজনীতি নয়; এমনকি যে আদর্শ ও নীতির ওপর দল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সে নীতি আদর্শ আপন ঠিকানা থেকেও ক্রমান্বয়ে সরে গেছে বড় দুই দল। দুই দলই কার্যত বর্তমানে ইমের সংকটে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর ক্রমান্বয়ে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হচ্ছে; আর বিএনপি ক্ষমতার বাইরে থেকেও জনগণের কাছাকাছি না যাওয়ায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে দূরত্বের তৈরি হয়েছে। বড় দুই দলের এ অবস্থায় দেশের রাজনীতি সচেতন জনগণ কার্যত রাজনীতি বিমুখ হয়ে যাচ্ছে। এ কোন রাজনীতির চর্চা?

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন