দীর্ঘ ১০ বছর পর ডিসেম্বর ৩০ তারিখে সারা দেশের মত পাবনার-৫টি নির্বাচনী আসনে প্রায় সব দলের অংশ গ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে বলে সাধারণ মানুষ মনে করলেও তাদের মন থেকে শঙ্কা একবারে দূর হয়ে যায়নি। ধানের শীষ ও নৌকার নির্বাচনী ঝড়ে ফাইনাল রাউন্ডে খেলতে প্রস্তুত আ.লীগ, মহাজোট ও ঐক্যফ্রন্ট, বিএনপি ২৩ দলীয় জোট প্রার্থীরা। ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি প্রার্থীরা পাবনায় বলছেন, ফাইনাল রাউন্ডের নির্বাচনী মাঠে তারা লড়াই করতে যাচ্ছেন, কিন্তু মাঠ লেবেল প্লেইং ফ্লিড এখনও হয়নি। খাদ-খন্দ মাঠেই লড়াই হবে। সিইসিকে লেবেল প্লেইং ফ্লিড করার আহ্বান কেন্দ্র থেকে জানানো হলেও এখনও সেটা হয়নি। তারপরও তারা লড়াই করবেন। বিপুল ভোটে বিজয়ী হওয়ার প্রত্যাশা সবার। নৌকা প্রতীকের আ’লীগ প্রার্থীরা বলছেন, মাঠ ঠিক আছে, খেলতে না জানলে তাদের কিছু করার নেই। ভোট দেবে ভোটার। জয়-পরাজয়তো আছেই ।
পাবনা-৫ সদর নির্বাচনী আসনে লড়াইয়ে প্রাক প্রচারণায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান এম.পি গোলাম ফারুক প্রিন্স ব্যস্ত সময় পার করছেন। মাঝে মধ্যে ঐক্যফ্রন্ট বিএনপি জামায়াত প্রার্থী অধ্যক্ষ ইকবাল হুসাইনকে ভোট দিন মাইকে শোনা গেলেও মাঠে-ময়দানে তেমন তোরজোর নেই। পাশে বিএনপিকেও সেভাবে দেখা যাচ্ছে না। পাবনা-২ নির্বাচনী আসনে নৌকা প্রতীকের আহমেদ ফিরোজ কবীর প্রচার-প্রচারণা করছেন, রিং এ ফিরেছেন, বিএনপি প্রার্থী সাবেক এম.পি সেলিম রেজা হাবিব। পাবনা-৩ (চাটমোহর-ভাঙ্গুড়া-ফরিদপুর) আসনে প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন নৌকা ও ধানের শীষ প্রার্থীরা। শুক্রবার সকালে চাটমোহর পৌর সদরের বিভিন্নস্থানে সাধারণ মানুষের সাথে লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে গণসংযোগ করেন, আ.লীগ প্রার্থী মো. মকবুল হোসেন এমপি। এ ছাড়াও কয়েকটি পথসভায় বক্তব্য রাখেন তিনি। এ সময় তার সাথে কেন্দ্রীয় আ.লীগের উপ-কমিটির সাবেক সহ-সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক, চাটমোহর পৌরমেয়র ও উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক মির্জা রেজাউল করিম দুলালসহ নেতা-কর্মীরা ছিলেন। এ আসনে বিএনপি’র সাবেক এম.পি কে এম আনোয়ারুল ইসলাম। নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত । বিভিন্ন স্থানে পথসভায় বক্তব্য ও ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন। সাধারণ মানুষের হাতে লিফলেট তুলে দিয়ে ধানের শীষে ভোট দেয়ার আহবান জানাচ্ছেন। এ সময় তার সাথে উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সহ-সম্পাদক অ্যাডভোকেট আশরাফুজ্জামান হালিম, পৌর যুবদলের সভাপতি শেখ জিয়ারুল হক সিন্টু উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি রেজাউল সরকার, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান লেবুসহ উপজেলা ও পৌর বিএনপি নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এ আসনে আ’লীগ ও বিএনপি’র দুজন প্রার্থী নির্বাচন করে মানুষের কাছে আগে থেকেই পরিচিত। পাবনা-৪ নির্বাচনী আসন (ঈশ্বরদী ও আটঘরিয়া)। এ আসনে হেভিওয়েট প্রার্থী আ.লীগের প্রবীন রাজনীতিক ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফের সাথে লড়াইয়ের ময়দানে আছেন, তারুণ্য এখনও কাটেনি, ৯০-এর গণ অভ্যুত্থানের অগ্রনেতাদের একজন এবং এ আসনে ইতোপূর্বে নির্বাচন করে মাঠ-ঘাটে পরিচিত প্রার্থী বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব। তাকে বিএনপি’র সাবেক এম.পিসহ বিএনপি নেতা-কর্মীরা সমর্থনে রয়েছেন। পাবনা -২, ৩ ও ৪ এ আসনে দ্বিমুখী জোর লড়াই হবে। পাবনা-১ নির্বাচনী আসনে আ.লীগের সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নৌকা প্রতীকের হেভি ওয়েটের সাথে আর এক হেভিওয়েট প্রার্থী আ.লীগের সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী এ আসনে বর্তমানে ঐক্যফ্রন্ট গণফোরাম ধানের শীষ প্রার্থী অধ্যাপক আবু সাইয়িদ লড়াইয়ের মাঠে নেমেছেন। জামায়াতের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক বেড়া উপজেলা জামায়াতের ঘোষিত প্রার্থী ডা. আব্দুল বাসেত প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নিলেও জামায়াতের অপর পক্ষ প্রথম থেকেই নির্বাচনে অনাগ্রহী। মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর পুত্র ব্যারিস্টার নাজিবুর রহমানকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রাখায় এখানে ত্রিমুখী লড়াই হবে। উজ্জীবিত প্রার্থীদের সমর্থক নেতা-কর্মীরা। তবে শঙ্কা-আশঙ্কা কাজ করছে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে। এ শঙ্কা প্রথম দিকে ছিল না। সাম্প্রতিক সময়ে পাবনা-১ আসনে আ.লীগ ও বিএনপি’র মধ্যে সংঘর্ষ এবং ২- আসনে সাঁথিয়ায় দুর্বৃত্তরা গণফোরাম প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীকের অধ্যাপক আবু সাইয়িদ ও তাঁর সমর্থকদের ওপর হামলা করায় সাধারণ ভোটারদের মধ্যে এ শঙ্কা ফিরে এসেছে। এ ছাড়াও ঐক্যফ্রন্ট শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেনের ওপর, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সারা দেশে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় পাবনা জেলাতেও এর প্রভাব পড়ায় শঙ্কা বাড়ছে। সাধারণ ভোটররা এগুলো দেখতে চান না। জনরায়ে ফের আ.লীগ যদি ক্ষমতায় আসে তাতে তাদের কোন অসুবিধা নেই । কিন্তু গণতান্ত্রিক চর্চার সুষ্ঠু পথ বিঘিত হোক এটা তাদের কাম্য নয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন