গতকালের পর থেকে একজন বাংলাদেশী খেলোয়াড়ের জন্য হাহাকারটা নিশ্চয় আরো বাড়বে কলকাতা নাইট রাইডার্সের। আইপিএলে টানা সাত বছর (২০১১-১৭) ওপার বাংলার অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ছিলেন সাকিব আল হাসান। শাহরুখ খানের দলের হয়ে শিরোপা জয়েও রেখেছেন অবদান। সেই সাকিবকে গত মৌসুমে ছেড়ে দেয় কোলকাতা।
এর জবাব হায়দরাবাদের হয়ে বল-ব্যাট হাতেই কলকাতাকে দিয়েছেন সাকিব। সাকিরে অলরাউন্ডার নৈপূণ্য নিয়ে কোন প্রশ্ন নেই, সঙ্গে এপারের বাংলা-ভাষাভাষি বিশাল সমর্থকদের সমর্থন পেতেও ছিল ছিল সাকিবের বড় ভূমিকা। সাকিবকে ছাড়ার পর তা হাড়েহাড়ে টের পায় কলকাতা। এজন্য পশ্চিমবঙ্গের ভক্ত-সমর্থক তো বটেই গণমাধ্যমেরও সমালোচনা শুনতে হয়েছে কলকাতাকে। এক মৌসুম পর যখন তারা বাংলাদেশি সমর্থকদের গুরুত্ব বুঝল তখন ফেসবুকে এক পোস্টের মাধ্যমে তারা জানায়, দলে তারা একজন বাংলাদেশি খেলোয়াড় চায়। এজন্য বাংলাদেশের সমর্থকদের কাছ থেকে পছন্দের খেলোয়াড়ের নাম আহ্বান করে তারা। এই একটি পোস্টই বলে দেয় সাকিবের অভাব তারা কতটা বোধ করছে।
গতকাল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সাকিব যা করলেন তাতে কলকাতার আক্ষেপ বাড়ারই কথা। ব্যাট হাতে অপরাজিত ৪২ রান করার পর বল হাতে নিয়েছেন ৫ উইকেট। নিশ্চিতভাবেই এটি তার ক্যারিয়ার সেরা পারফম্যান্স। ব্যাট হাতে এর চেয়ে আগেও বেশি রান করেছেন সাকিব। তবে বল হাতে এবারই প্রথম নিলেন ৫ উইকেট। বাকি ব্যাটসম্যানরা যেখানে তুলোধুনো হচ্ছেন সেখানে ক্যারিবীয় বাঘা বাঘা ব্যাটসম্যানদের সামলে ৪ ওভারে সাকিব রান দিয়েছেন মাত্র ২১। যে উইকেটগুলো নিয়েছেন সেই নামগুলোও চমকে দেয়ার মত। রীতিমত এই নামগুলো নিয়েই দুই দিন আগে আইপিএলের নিলামে দলগুলোর মধ্যে চলে তুমুল টানাটানি। নিকোলাস পুরানকে শর্ট ফাইন লেগে তামিমের ক্যাচ বানিয়ে শুরু। এরপর একে একে তুলে নেন ভয়ঙ্কর রূপ নিতে যাওয়া সিমরন হেটমেয়ার, ড্যারেন ব্রাভো, কার্লোস ব্রাফেট ও ফাবিয়ান অ্যালেনের উইকেট। অ্যালেনকে সরাসরি বোল্ড করে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে প্রথম ৫ উইকেটের কোটা পূরণ করেন সাকিব।
এর আগে ব্যাট হাতেও মাহমুদউল্লাহকে নিয়ে শেষ ৭ ওভারে গড়েন অবিচ্ছিন্ন ৯১ রানের জুটি। যেখানে তার অবদান ২৬ বলে ৫ চার ও এক ছক্কায় ৪২ রান। বাংলাদেশও পেয়ে যায় ২১১ রানের বিশাল সংগ্রহ। পরে তার নেতৃত্বেই উইন্ডিজকে ১৭৫ রানে গুটিয়ে ৩৬ রানের জয়ে সিরিজে ফেরে বাংলাদেশ।
বলতে গেলে এক হাতেই ম্যাচটি জিতিয়েছেন সাকিব। কিন্তু টাইগার দলপতি জয়টাকে দেখেছেন দলীয় প্রচেষ্টার ফল হিসেবে, ‘ব্যাট অথবা বলে ক্রিকেট হলো একটা গতিশীল খেলা। দুই এক ওভারে খেলার মোড় ঘুরে যেতে পারে। ব্যাট হাতে আমাদের শুরুটা ছিল দারুণ এবং ২০ ওভার পর্যন্ত এটা অব্যহত ছিল। শিশিরে মধ্যে বল হাতেও কাজটা সহজ ছিল না। এটা ছিল দলীয় প্রচেষ্টার ফল, সবাই দায়ীত্ব পালন করেছে।’ আগামীকাল সিরিজ জয়ের ম্যাচেও নিশ্চয় এমন দলীয় প্রচেষ্টাই চাইবেন সাকিব
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন