পিরোজপুর-১ (পিরোজপুর সদর-নাজিরপুর-নেছারাবাদ) আসনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের প্রার্থী শামীম বিন সাঈদীর নির্বাচনী দৃশ্যমান কোন প্রচার-প্রচারণা দেখা যাচ্ছেনা। এ মুহুর্তে নেছারাবাদের সড়ক,হাট-বাজারের অলি-গলিতে আ.লীগের পোষ্টারে ছেয়ে গেলেও ধানের শীষের পোষ্টার দেখা মিলছেনা। প্রতীক বরাদ্দের পর আওয়ামী লীগের প্রার্থী শ ম রেজাউল করিম শিডিউল করে আসনের প্রত্যেকটি ইউনিয়ন, ওয়ার্ডে পালাক্রমে চালিয়ে যাচ্ছেন সভা-সমাবেশ। বাড়ী বাড়ী গিয়ে উন্নয়নের কথা বলে প্রার্থীর জন্য সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন নৌকা প্রতীকের জন্য। তবে শামীম সাঈদীর দেখা মিলছে না এখানে। প্রচারণায় মাঠেও নামতে দেখা যাচ্ছেনা দলের জোটের কোন নেতা-কর্মীদের। তবে জোটের নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন নির্বাচনী মাঠে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। ফিল্ড তৈরী হলেই তারা দৃশ্যমান প্রচারণায় নামবেন।
জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ জানিয়ে আওয়ামীলীগের সাবেক সাংসদ অধ্যক্ষ মো. শাহ্ আলম বলেন, বিএনপি জোটের প্রার্থী তো এখনো মাঠেই নামেনি। ধানের শীষের প্রার্থী একজন যুদ্ধ অপরাধীর ছেলে। ভোটে তাকে মানুষ সাড়া দেবেনা। পিরোজপুর সদর, নাজিরপুর ও নেছারাবাদ নিয়ে এক আসন। পিরোজপুর, নাজিরপুরের কথা বলতে পারিনা। তবে নেছারাবাদ থেকে কাষ্টিং ভোটের শতকরা আশি ভাগ ভোট আওয়ামীলীগের পক্ষে পড়বে বলে সাবেক সংসদ অধ্যক্ষ মো. শাহ্ আলম জানান।
এবারে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পিরোজপুর-১ আসনে ৬ জন প্রার্থী প্রতিদন্ধিতা করবেন। মূলত ভোট যুদ্ধে মোট ছয় প্রার্থী প্রতিদন্ধিতায় থাকলেও ভোটের মাঠে লড়াই হবে প্রধান দু‘দল আওয়ামীলীগ ও বিএনপির মধ্যে। যে কারণে বিজয় নিজেদের অনুকুলে রাখার জন্য মাঠে ঘাটে প্রচার-প্রচারণায় সরব রয়েছে আওয়ামীলীগ। পাশাপাশি ইসলামি আন্দোলন, জাতীয় পার্টি, প্রচার-প্রচারণায় দেখা গেলেও মাঠে দেখা মিলছেনা আওয়ামীলীগের প্রধান প্রতিদন্ধি দল বিএনপি।
নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় সরব আওয়ামীলীগ। ধানের শীষের করুন দশার কারণ জানতে চাইলে? বিএনপি জোটের প্রার্থী শামীম বিন সাঈদী বলেন, নির্বাচনী মাঠে তাদের দৃশ্যমান প্রচার-প্রচারণা দেখা না গেলেও কোন কর্মী ঘরে বসে নেই। যে যার জায়গা থেকে যতটুকু সম্ভব প্রচারকার্য চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, মাঠে নামলেই তাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। পুলিশের সাথে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা তাদের সমর্থকের বাড়ী বাড়ী গিয়ে নানা ধরনের হুমকি ধামকি ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করছে। এ মুহুর্তে মাঠে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরীতে সেনাবাহিনী দরকার।
নেছারাবাদ থানার ওসি (তদন্ত) মো. সহিদুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনী মাঠে আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে যতটুকু করা দরকার আমরা সেটুকুই করছি। সুনির্দিষ্ট তথ্য বা অভিযোগ ছাড়া কাউকেই গ্রেফতার বা হয়রানি করা হচ্ছেনা।
স্থানীয় বিএনপির সূত্রে জানা গেছে, পিরোজপুর-১ আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী চেয়েছিল। পিরোজপুর জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দরা জোট বদ্ধ হয়ে পিরোজপুর-১ আসন শামীম সাঈদীকে না দেয়ার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে দরখাস্ত দিয়েছিলেন। তারা শামীম সাঈদীকে পিরোজপুর-২ আসন ছেড়ে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু জামায়াত পিরোজপুর-১ আসনে নির্বাচন করার সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় আসনটি ছেড়ে দেয় বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট। এ জন্য দলীয় প্রার্থী না পেয়ে স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ রয়েছে।
নেছারাবাদ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো.ফকরুল আলম বলেন, যেখানে জোটের প্রার্থী দেয়া হয়েছে সেখানে আগে তারা প্রচারণায় নামবে। আমরা(বিএনপি) সেখানে গিয়ে অংশগ্রহণ করবো। তারা না নামলে আমরা কি করবো? আলোচনা হলেই আমরা একত্রিত হয়ে মাঠে নামবো।
এ সম্পর্কে জেলা বিএনপির জেষ্ঠ্য সহ-সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম খান বলেন, এখানে দল বলতে বিএনপি,আওয়ামীলীগ দুটো দল। কেন্দ্র থেকে মনোনয়ন দেয়ার আগে কেন্দ্রের কাছে আমরা একত্রিত হয়ে দলীয় প্রার্থী পাওয়ার জন্য আবেদন জানিয়ে ছিলাম। এখন দল থেকে ধানের শীষ দিয়ে যাকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে আমরা তার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ আছি। তবে জোটের প্রার্থীর পক্ষে এখনো মাঠে নেমে দৃশ্যমান প্রচার-প্রচারণা না চালানোর কারণ জানতে তিনি বলেন, কেন প্রচার চালাইনা সেকথা পুলিশকে জিজ্ঞেস করুন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন