সাংস্কৃতিক রাজধানী কুষ্টিয়া। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ, কালজয়ী লেখক মীর মশাররফ হোসেন ও কাঙাল হরিনাথসহ অসংখ্য গুণীজনের স্মৃতিবিজড়িত এ জনপদ। বাংলাদেশে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কুষ্টিয়া উল্লেখযোগ্য ভ‚মিকা রয়েছে।
এ অঞ্চল থেকে ওঠে এসেছেন অনেক স্বনামধন্য জাতীয় রাজনীতিবিদ। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এখানে বইছে ভোটের হাওয়া। এ জেলায় রয়েছেন দুইজন হেভিওয়েট প্রার্থী। নানা আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রতীক পেয়ে আ.লীগ ভোটের মাঠ চষে বেড়ালেও ২০ দলীয় জোটের প্রার্থীরা মাঠে প্রচারণা চালাতে পারছেন না। হামলা-মামলার কারণে বাড়িঘর ছেড়ে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তবে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হলে আ.লীগ ও বিএনপি প্রার্থীদের মাঝে অল্প কিছু ভোটের ব্যবধানে জয়-পরাজয় নির্ধারিত হবে বলে মন্তব্য করেন জেলার সুশীলসমাজ। জয়-পরাজয়ের লড়াইয়ে নৌকা ও ধানের শীষের প্রার্থীরা প্রচারণার মাঠে নেমেছে। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে কে জিতবে জয়ের মালা এ প্রতিক্ষার প্রহর গুনছেন সাধারণ ভোটাররা।
জানা যায়, কুষ্টিয়ার চারটি আসনে মোট ২৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন।
কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে আ.লীগ প্রার্থী কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের ভিপি অ্যাডভোকেট আ ক ম সরওয়ার জাহান বাদশা (নৌকা), বিএনপি প্রার্থী সাবেক এমপি রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লা (ধানের শীষ), আশরাফুজ্জামান (বিএনএফ) টেলিভিশন, মাওলানা নাজমুল হুদা (ইসলামী আন্দোলন) হাতপাখা, শাহরিয়ার জামিল জুয়েল (জাতীয় পার্টি, এরশাদ) লাঙ্গল প্রতীক।
কুষ্টিয়া-২ (ভেড়ামারা-মিরপুর) আসনে মহাজোট প্রার্থী জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু (নৌকা), ২০ দলীয় জোট প্রার্থী সাবেক এমপি আহসান হাবিব লিংকন জাতীয় পার্টি-কাজী জাফর (ধানের শীষ), সাম্যবাদী দলের আনোয়ার হোসেন বাবলু (চাকা), বিএনএফের সাইফুল ইসলাম (টেলিভিশন), এনপিপির মোহাম্মদ সোহাগ হোসেন (আম), সিপিবির ওয়াহিদুজ্জামান (কাস্তে), ইসলামী আন্দোলন মোজাম্মেল হক (হাতপাখা) ও মুসলীম লীগ প্রার্থী মারফত আলী মাস্টার (হারিকেন) মার্কা।
কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে আ. লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ (নৌকা), ২০ দলীয় জোট প্রার্থী বিএনপি নেতা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার (ধানের শীষ), সম্মিলিত বাম দল বাসদ শফিকুর রহমান শফি (মই), বিএনএফের আশাদুল হক (টেলিভিশন), এনপিপির উজ্জল আহসান (আম), ইসলামী আন্দোলনের আমিনুল ইসলাম (হাতপাখা) প্রতিকে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন।
কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনে আ. লীগের প্রার্থী ব্যারিস্টার সেলিম আলতাফ জর্জ (নৌকা), ২০ দলীয় জোট প্রার্থী বিএনপি নেতা সাবেক এমপি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী (ধানের শীষ), জাতীয় পার্টি (জাপা-এরশাদ) আশারফুল হক (লাঙ্গল), এনপিপির তাছির উদ্দিন (আম), বিএনএফের আওলাদে পীরজাদা ইদ্রীস (টেলিভিশন) ও ইসলামী আন্দোলনের হাজী এনামুল হক (হাতপাখা) প্রতিকে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছেন। প্রতিক বরাদ্দের পর ৪টি আসনে আ.লীগের প্রার্থীরা নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। কুষ্টিয়া সদর বিএনপি প্রার্থী জাকির হোসেন সরকার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন। তার কর্মীরা মাঠে নামতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আ.লীগের নেতাকর্মীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘন করে বিভিন্ন কর্মকাÐ চালিয়ে যাচ্ছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি ভোট প্রচারণায় বাধা দিচ্ছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দেয়া হচ্ছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের অভিযোগ, তারা এখন পর্যন্ত পোস্টার টাঙাতে পারেনি। তবে তারা মাঠ ছাড়তে রাজি নয় বলে জানান। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হলে কুষ্টিয়ার চারটি আসনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে।
কুষ্টিয়া ছয় উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ জেলায় রয়েছে চারটি সংসদীয় আসন। এ জেলার মোট ভোটার সংখ্যা ১৪ লাখ ৫৯ হাজার ৫৬৯। যার মধ্যে পুরুষ ভোটার সাত লাখ ২৭ হাজার ৮০৫ জন আর নারী ভোটার সাত লাখ ৩১ হাজার ৭৬৪ জন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন