শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

গুম করে রাখা রাজকুমারীর ছবি প্রকাশ করল দুবাই

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ৫:৫২ পিএম

সংযুক্ত আরব আমিরাতের সুলতানের কন্যা রাজকুমারী শেইখ লতিফা বিনতে মোহাম্মেদ আল মাখতুম তার পরিবারের সঙ্গেই বসবাস করছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সোমবার এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে। চলতি বছর মার্চ মাসে পালানোর চেষ্টার পর থেকেই তাকে জনসম্মুখে আর দেখা যায়নি।

দুবাই রাজকন্যা শেইখ লতিফা (৩৩) দুবাইয়ের শাসক মুহাম্মেদ বিন রাশিদ আল মাখতুমের মেয়ে। গত মার্চ মাসে তিনি দুবাই ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন। এরপর তাকে উদ্ধার করে রাজপ্রাসাদে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার তার কয়েক দিন পর আচমকাই ইউটিউবে একটি ভিডিও সামনে আসে। যাতে রাজপরিবারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তুলতে দেখা যায় রাজকুমারীকে। ৩৯ মিনিটের ওই ভিডিও তে তিনি জানান, কড়া নিয়ম-কানুন রাজপ্রাসাদে। ব্যক্তি স্বাধীনতা বলে কিছু নেই। টানা তিন বছর তাঁকে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। চালানো হয়েছিল নিদারুণ অত্যাচার। ২০০২ সালে ১৬ বছর বয়সে একবার পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। আর একবার চেষ্টা করে দেখতে চান। বেঁচে থাকা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করতে দেখা যায় তাঁকে। ভিডিয়োটি যখন সকলের হাতে পৌঁছবে, তখন তিনি হয়ত বেঁচে থাকবেন না বলেও সংশয় প্রকাশ করেন। ভিডিয়োটি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়ে যায় গোটা দুনিয়ায়। রাজপরিবারের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে। এরপর প্রায় ৯ মাস ধরে তাকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। রাজকুমারী লতিফাকে জোর করে আরব আমিরাতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, এমন সংবাদের প্রেক্ষিতে মানবাধিকার সংস্থাগুলো আরব আমিরাতের সরকারের কাছে দাবি জানাতে থাকে তার অবস্থানের তথ্য জানাতে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে সব ‘গুজব’ বাতিল করে দিয়ে আরও বলা হয়েছে, রাজকুমারীর সঙ্গে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের সাবেক প্রধান ও আয়ারল্যান্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট ম্যারি রবিনসন দেখা করেছেন। সেই ছবি সংশ্লিষ্টদের দেওয়া হয়েছে। রাজকুমারীরকে হত্যা করা হয়েছে গণমাধ্যমে এমন গুজব ছড়িয়ে পড়ার প্রেক্ষিতে আরব আমিরাতকে বিবৃতি দিতে হলো।
মানবাধিকার কমিশনের সাবেক প্রধান ম্যারি রবিনসন লতিফার সঙ্গে দেখা করেছেন। তার সঙ্গে ছবি তুলেছেন। সেসব ছবি প্রকাশ করে আরব আমিরাতের বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, ‘লতিফার পরিবারের আমন্ত্রণে ১৫ ডিসেম্বর দুবাইতে শেখ লতিফার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।’
লতিফার আরব আমিরাত থেকে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাকে উপন্যাসের চেয়েও অত্যন্ত উত্তেজনাকর ছিল। দুবাই রাজকন্যার বন্ধু টিনা জাউহাইনেন ও ফরাসি গুপ্তচর হারভে জবার্টের সহায়তায় আরব আমিরাত থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন। তার খোঁজ না পাওয়ার বিষয়ে উদ্বগ জানিয়েছিল অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো মানবাধিকার সংগঠন। জাতিসংঘের গুম বিষয়ক সংস্থা তার বিষয়ে শুনানি পর্যন্ত আয়োজন করেছিল। তিনি ওমান হয়ে নৌযানে করে ভারত মহাসাগরের দিকে যাচ্ছিলেন। তার ইচ্ছে ছিল, ভারতের কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করা। কিন্তু গোয়া উপকূলেই তাদেরকে আটক করে ‘সশস্ত্র ব্যক্তিরা’। তারপর তাকে আরব আমিরাতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই শেষবারই তাকে দেখা গিয়েছিল জনসম্মুখে। সূত্র: সিএনএন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন