কামরুজ্জামান টুটুল, হাজীগঞ্জ (চাঁদপুর) থেকে
হাজীগঞ্জ উপজেলার ১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরো কার্যক্রম চলছে ১ জন শিক্ষক দিয়ে। আরো ৬টি বিদ্যালয়ে ২ জন করে ১২ জন শিক্ষক পাঠদান করাচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়গুলোতে পদ থাকলে এ বিদ্যালয়গুলোতে নতুন করে কেউ যেতে চায় না বলে জানা গেছে। রাজনৈতিক কারণে অনেক শিক্ষক অফিস আদেশকে কাটিয়ে দিচ্ছেন বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। চরম শিক্ষক স্পল্পতার কারণে উপজেলার এই ৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদানের মান শূন্যের কোটায় পৌঁছেছে বলে স্থানীয়রা মনে করছেন। সরকারি বিধি অনুযায়ী প্রতিটি বিদ্যালয়ে কমপক্ষে ৪ জন করে শিক্ষক থাকার কথা। হাজীগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস নিশ্চিত হওয়া গেছে উপজেলার ১নং রাজারগাঁও ইউনিয়নের চারিয়ানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছেন ১ জন শিক্ষক। এছাড়া ২ জন করে শিক্ষক রয়েছেন উপজেলার ৭নং বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের সমেশপুর সপ্রাবি, ১নং রাজারগাঁও ইউনিয়নের মেনাপুর পীর বাদশা মিয়া সপ্রাবি, চারিয়ানি সপ্রাবি, কালোচোঁ উত্তর ইউনিয়নের চিলাচোঁ সপ্রাবি, গর্ন্ধব্যপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের গর্ন্ধব্যপুর শ্যামলী গুচ্ছগ্রাম সপ্রাবি, গর্ন্ধব্যপুর উত্তর ইউনিয়নের সর্বতারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৩ সালে ১৫শ’ বিদ্যালয় সরকারিকরণের সাথে চারিয়ানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়। ৪ রুম বিশিষ্ট ভবনের একটি রুমে অফিস কার্যক্রম চলে। শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১১২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রধান শিক্ষক ও একমাত্র শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মাহমুদ হাছান মোস্তফা। তিনি নিজেই ক্লাস নেয়ার পাশাপাশি বিদ্যালয়ের অফিস ম্যান্টেইন, উপজেলা সদরে দাপ্তরিক কাজ সামলাতে হচ্ছে। উপরোক্ত বিদ্যালয়গুলোতে ২ জন করে শিক্ষক পাঠদানের দায়িত্বে থাকলে ও দুজনকে সকল কাজ করা দুরূহ বলে অভিভাবকরা নিশ্চিত করেন। ঐ সকল বিদ্যালয়গুলোর অভিভাবকরা ইনকিলাবকে জানান, স্যারেরা এতো ছেলে-মেয়েকে কেমন করে সামলাবেন এটা কোনভাবেই সম্ভব নয়। শিশু শ্রেণি থেকে ২য় শ্রেণি পর্যন্ত তিনটি ক্লাস একত্রে শুরু হলে দু’জন শিক্ষক কিভাবে ক্লাস সামলাবেন? ৩য় শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাসগুলো দুপুর থেকে শুরু হলেও দু’জন শিক্ষক কিভাবে সামলাবেন তা আমরা বুঝি না। আবার একদিন কোন শিক্ষক ছুটি নিলে বা অসুস্থ হলে সেদিনের অবস্থা তো সহজে অনুমেয়। চারিয়ানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহমুদ হাছান মোস্তফা বলেন, আমাকেই পতাকা টানানো-নামানো, পরিষ্কার, পরিচ্ছন্নতার কাজ, বিদ্যালয়ের দাপ্তরিক কাজ, শ্রেণি কক্ষের পাঠদানসহ সকল কাজ করতে হচ্ছে। অপরদিকে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শূন্য পদ অনেক খালি রয়েছে। পদ খালি থাকলেও শিক্ষক স্বল্পতার দিক দিয়ে উপরোক্ত বিদ্যালয়গুলো রয়েছে শীর্ষে। উপজেলার কয়েকটি বিদ্যালয়ে দু‘জন কিংবা একজন করে শিক্ষক থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) একেএম মিজানুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, সহসায় বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক পাঠানো হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন