শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

কুরআন তেলাওয়াত পরীক্ষা ইন্দোনেশিয়ায়

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ২ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

ইন্দোনেশিয়ায় আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হতে আগ্রহী ব্যক্তিদের কুরআন তেলাওয়াত পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে শরীয়াহ শাসিত আচেহ প্রদেশের একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে। আগামী ১৫ জানুয়ারি এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবার কথা। ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের পক্ষ থেকে বিষয়টি ভেবে দেখার কথা বলা হলেও বিরোধী প্রার্থী এ বিষয়ে আয়োজকদের কোনও জবাব দেননি। মূলত শরীয়াহ শাসিত আচেহ প্রদেশের রীতি অনুসরণ করেই এই পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। সমালোচকরা ভয়েস অব আমেরিকাকে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ধর্মীয় গ্রন্থ পাঠের পরীক্ষা দিতে হলে তা দেশটির নৃতাত্তি¡ক ঐক্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। বিমান চালানোর ক্ষেত্রে বৈমানিকের কুরআন তেলাওয়াত সক্ষমতা নয় বরং বিমান চালানো সংক্রান্ত জ্ঞানের পরীক্ষা নেওয়া হয়। ঠিক তেমনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া ব্যক্তিদের কুরআন তেলাওয়াত পরীক্ষা নয়, বরং ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের মানুষদের প্রতি তাদের সহানুভূতি কেমন, তার পরীক্ষা হওয়া উচিত। সম্প্রতি আচেহ প্রদেশের একটি ইসলামি সংগঠনের পক্ষ থেকে ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিতব্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থী জোকো উইদোদো এবং এবং বিরোধী প্রার্থী প্রোবো সুবিয়ান্তোকে কুরআন তেলাওয়াত পরীক্ষার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। প্রার্থীদের বাধ্যতামূলকভাবে সুরা ফাতিহা তেলাওয়াত করতে হবে। আয়োজকরা আরও একটি সূরা নির্ধারণ করে দেবেন পাঠ করার জন্য। প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের কুরআন পরীক্ষার আমন্ত্রণ জানাও ইসলামি সংগঠনের চেয়ারম্যান মারসিউদ্দিন ইশাক বলেছেন, প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের আসল চরিত্র সামনে আনা এবং শরীয়াহ শাসিত প্রদেশটির সংস্কৃতিকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরার জন্যই তারা কুরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতার আয়োজনকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। আচেহ প্রদেশে স্থানীয়ভাবে যেসব ব্যক্তি নির্বাচিত হন তাদেরকেও কুরআন তেলাওয়াতের পরীক্ষা দিতে হয়। মারসিউদ্দিনের ভাষ্য, ‘আমাদের এখানকার নেতা, যেমন গভর্নর, সংসদ সদস্য এবং অন্যান্য কাউন্সিল সদস্যদের সবাইকেই কুরআন তেলাওয়াতের পরীক্ষা দিতে হয়। পরবর্তী প্রেসিডেন্টও আমাদের নেতা হবেন। তাই আমরা কুরআন পাঠে তার সক্ষমতার বিষয়ে জানতে চাই, ঠিক যেমন আমাদের স্থানীয় নেতাদের ক্ষেত্রে হয়।’ জাকার্তার ‘শরিফ হিদায়াতুল্লাহ স্টেট ইসলামিক ইউনিভার্সিটির’ সাবেক প্রেসিডেন্ট ড. কোমারুদ্দিন হিদায়াত ভয়েস অব আমেরিকাকে বলেছেন, এমন পরীক্ষা অপ্রয়োজনীয় এবং ‘ধর্মের প্রয়োজনীয়তাকে’ বাড়িয়ে দেখানোর চেষ্টা। তার ভাষ্য, ‘আমার এটা জেনে দুঃখ হয়েছে। আমাদের জীবন হওয়ার কথা সংবিধান নির্ভর। ধর্ম সম্পর্কে জানা ও বোঝা দরকার। কিন্তু তার মানে এই নয় যে কুরআন তেলাওয়াত না করতে পারলে আমাদের জীবনই বৃথা।’ ‘উচ্চশিক্ষিত হওয়া বা চাকরি পাওয়ার জন্য ধর্ম কখনওই কোনও মানদণ্ড হিসেবে ব্যবহৃত হয়নি,’ উল্লেখ করে তিনি আরও বলেছেন, ‘আমরা যখন কাউকে বৈমানিক হিসেবে নিয়োগ দেই, তখন আমরা তার বিমান চালনার সক্ষমতার পরীক্ষা নেই। তার কুরআন তেলাওয়াতের সক্ষমতার পরীক্ষা নয়। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।’ ভিওএ

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন