বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সব অভিযোগের সমাধানের আহ্বান যুক্তরাজ্যের

বাংলাদেশের নির্বাচন : অনিয়ম নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ : সহিংস ঘটনার তদন্ত চায় ইইউ

কূটনৈতিক সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

বাংলাদেশের সদ্য সমাপ্ত নির্বাচন নিয়ে উত্থাপিত সব অভিযোগের স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্য। গত মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাজ্যের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরে এমন আহ্বান জানান দেশটির পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী মার্ক ফিল্ড।
তিনি জানান, নির্বাচনের ঘোষিত বেসরকারি ফলাফল তিনি লক্ষ্য করেছেন। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মার্ক ফিল্ড বলেন, নির্বাচন ঘিরে গ্রেফতার এবং বাধা প্রদানের বিশ্বাসযোগ্য ঘটনাগুলোর পাশাপাশি এসব ঘটনা যে বিরোধী দলগুলোর নির্বাচনী প্রচারকে সীমিত করেছে অথবা প্রচারণা থেকে বিরত রেখেছে, সেসব বিষয়ে তিনি অবগত। নির্বাচনের দিন অনিয়মের কারণে ভোটারদের ভোট দিতে না পারার কথাও তিনি উল্লেখ করেন। এসব অভিযোগের পূর্ণাঙ্গ, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য সমাধানের আহ্বান জানান তিনি। নির্বাচনে বিরোধী দলগুলোর অংশগ্রহণকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এই বিবৃতিতে মার্ক ফিল্ড নির্বাচনী প্রচারকালে ঘটে যাওয়া ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং সংঘাতের ঘটনাগুলোর নিন্দা জানান। নির্বাচনের দিন প্রাণহানির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে প্রিয়জন হারানো পরিবার ও স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন ব্রিটিশ এই প্রতিমন্ত্রী।
মার্ক ফিল্ড বলেন, যেকোনো কার্যকর গণতন্ত্রের জন্য অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অপরিহার্য। নিজেদের বিরোধগুলো নিরসনে সরকার ও বিরোধী দলগুলোর একসঙ্গে কাজ করা এবং বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থ বিবেচনায় সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথ খোঁজা জরুরি বলে তিনি মন্তব্য করেন। বিবৃতি তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারত্ব রয়েছে। উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বাংলাদেশি জনগোষ্ঠী যুক্তরাজ্যে বসবাস করছে। অধিকতর স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের যে আকাঙ্খা, তাতে যুক্তরাজ্য অব্যাহতভাবে সমর্থন দিয়ে যাবে।
অনিয়ম নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ
এদিকে, বাংলাদেশে নির্বাচনের দিনে ভোটারদের ভোটদানে বিরত রাখার অনিয়মের অভিযোগে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভোটারদের বাধা প্রদানে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ওপর যে আস্থা তা খর্ব হয়েছে। এসব অনিয়মের বিষয়ে সব পক্ষকে নিয়ে গঠনমুলকভাবে সমাধান করতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়েছে দেশটি। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি মুখপাত্র রবার্ট পালাদিনো ‘বাংলাদেশ ইলেকশন’ শীর্ষক বিবৃতি দিয়েছেন। এতে বলা হয়, ৩০ শে ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কয়েক কোটি বাংলাদেশী ভোট দিয়েছেন এবং নির্বাচনে সব বড় বিরোধী দল অংশগ্রহণ করেছে। এ জন্য তাদের প্রশংসা করে যুক্তরাষ্ট্র। এতে বলা হয়, ২০১৪ সালে নির্বাচন বর্জনের পরে এটি একটি ইতিবাচক অগ্রগতি।
ওই বিবৃতিতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশ ও এর গণতান্ত্রিক অগ্রগতিতে ভবিষ্যতে গভীরভাবে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় বিদেশী বিনিয়োগকারী, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় একক রফতানীকারক দেশ এবং বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বিপুল সংখ্যক মানুষের দেশ যুক্তরাষ্ট্র।
বিবৃতিতে রবার্ট পালাদিনো আরো বলেছেন, এর প্রেক্ষিতে আমরা নির্বাচন পূর্ববর্তী সময়ের হয়রানি, ভীতি প্রদর্শন ও সহিংসতার বিশ্বাসযোগ্য ঘটনার বিষয়ে উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি। ওইসব কারণে বিরোধী দলীয় বহু প্রার্থী ও তাদের সমর্থকরা মুক্তভাবে সভা, র‌্যালি ও নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারেন নি। নির্বাচনের দিনে কিছু মানুষকে ভোট দিতে দেয়া হয় নি। এটা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার প্রতি যে আস্থা আছে তাকে খর্ব করেছে। নির্বাচনের দিনের এ অনিয়মের বিষয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, সব দলকে আমরা সহিংসতা থেকে বিরত থাকার জন্য জোরালোভাবে উৎসাহিত করছি। নির্বাচন কমিশনের প্রতি অনুরোধ করছি অনিয়মের বিষয়ে সমাধান করতে সব পক্ষকে নিয়ে গঠনমুলকভাবে কাজ করতে। বাংলাদেশের উৎসাহব্যাঞ্জক অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা-এ দুটির একটি অন্যটির সঙ্গে পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত। আমরা ক্ষমতাসীন সরকার ও বিরোধীদের সঙ্গে এই আন্তঃসম্পর্কযুক্ত লক্ষ্য অর্জনের জন্য অব্যাহতভাবে কাজ করতে চাই।
সহিংস ঘটনার তদন্ত চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন
অন্যদিকে, সদ্য সমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন এবং তার আগে ঘটে যাওয়া সহিংস ঘটনাগুলোর পূর্ণ ও স্বচ্ছ তদন্ত চেয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইউরোপের ২৮ রাষ্ট্রের ওই জোটের পররাষ্ট্র বিষয়ক মুখপাত্র গত মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান। ইইউ’র ব্রাসেলসস্থ হেড কোয়ার্টার থেকে দেয়া ওই বিবৃতিতে বলা হয়- ৩০ ডিসেম্বর বাংলাদেশে সংসদ নির্বাচন হয়েছে এবং নির্বাচন কমিশন প্রাথমিক ফলাফলও ঘোষণা করেছে। গত ১০ বছরে এই প্রথম এমন নির্বাচনে ভোটারদের উপস্থিতি এবং বিরোধী দলের অংশগ্রহণ গণতন্ত্রের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্খার প্রতিফলন। কিন্তু ভোটের দিনে সহিংসতা এবং প্রচার-প্রচারণায় লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকা বিশেষত পুরো প্রক্রিয়ায় উল্লেখযোগ্য বাধা ভোট এবং ভোটের পরিবেশকে দূষিত করেছে।
বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের উচিত উত্থাপিত অনিয়মের অভিযোগগুলো যথাযথ তদন্ত করা এবং ওই তদন্ত কাজে পূর্ণ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। ইউরোপীয় ইউনিয়ন আশা করে বাংলাদেশ গণতন্ত্র, মানবাধিকারের প্রতি সম্মান এবং মৌলিক স্বাধীনতা সমুন্নত রেখে সামনে এগিয়ে যাবে। আর বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এতে পূর্ণ সমর্থন দিয়ে যাবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (13)
Kazi Ziauddin ৩ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৪৪ এএম says : 0
আমি মনে করি ইইউ নিজেদের গরজেই এই নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে পারে। এতে শেখার নতুন উপাদান যেমন থাকবে, তেমনি পরামর্শক হিসেবে ভবিষ্যতে নিজেদের আরো সমৃদ্ধ করার সুযোগ তৈরী হবে।
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৩ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৪৫ এএম says : 0
ইইউ কি দেশি প্রতিষ্ঠান? তারা নিজেরা কিভাবে খতিয়ে দেখবে বোধগম্য নয়।
Total Reply(0)
কেরামত আলী বিপ্লব ৩ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৪৫ এএম says : 0
নিজেদের নির্বাচনে ভবিষ্যতে যেনো অন্যের পরামর্শ না নেয়া লাগে বাংলাদেশ সেদিকেই এগুচ্ছে। অন্য দেশের সংবাদ মাধ্যম শুধু কমেন্ট করতে পারে, হস্তক্ষেপ নয়। বিশ্বে বাংলাদেশের পজিশন আর আগের মতো নেই। বিশ্ব বাংলাদেশকে একটু হলেও সমীহ করে।
Total Reply(0)
Zulfiqar Ahmed ৩ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৪৫ এএম says : 0
Yes right
Total Reply(0)
Sengupta ৩ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৪৬ এএম says : 0
দায়সারা বিবৃতি ?
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৩ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৪৬ এএম says : 0
কি ক্ষতিয়ে দেখবে ? শেখ হাসিনার উচিৎ পুনর্নির্বাচন দিয়ে তাঁর জনপ্রিয়তা দেখায়ে দেওয়া।
Total Reply(0)
md.mumun ৩ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৪৬ এএম says : 0
ইইউ কে বলবো, বেশি না। একটা কেন্দ্রের দায়িত্বশীল সবাইকে ডেকে তাদের জবানবন্দি নেন। অনেক কিছু শিখতে পারবেন।
Total Reply(0)
রুবেল ৩ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৪৭ এএম says : 0
হাতি ঘোড়া গেল তল মশা বলে কত জল !!!
Total Reply(0)
তানভীর আহমাদ ৩ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৪৭ এএম says : 0
We will request to EU please visit one village of Bangladesh, during your visit please do not take any government authority or police or Rolling party leader , talk with the general public, farmer, fisher men, Riksha fuller, Taxi driver etc. then you will get the all information what they did before the election & how they got 80% vote.
Total Reply(0)
দবির আহমেদ ৩ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৪৭ এএম says : 0
Please help the people of Bangladesh.
Total Reply(0)
Mohammed Kowaj Ali khan ৩ জানুয়ারি, ২০১৯, ২:৫৩ এএম says : 0
In Bangladesh 2018 election was not a proper election. That's way must be proper free and fair reelection need again.
Total Reply(0)
অনিচ্ছুক ৩ জানুয়ারি, ২০১৯, ৯:২৪ এএম says : 0
বাংলাদেশের কোনো কিছুই করার ক্ষমতা রাখেনা এখন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য দেশ। because we r freedom
Total Reply(0)
Engr Amirul Islam ৩ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:২৯ পিএম says : 0
Bangladesh is no more independent country rather a state of India. India decided Hasina as Premier
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন