শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

কারচুপির নির্বাচনে সাংবিধানিক সঙ্কট সৃষ্টি হতে পারে সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল

গণফোরামের দু’জনের শপথ নেয়ার বিষয়ে ইতিবাচক ইঙ্গিত

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহবায়ক ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ভোট কারচুপির নির্বাচনে সংবিধানের সব বিধান লঙ্ঘিত হয়েছে। এটা সংবিধানের উপর আঘাত। এই অবৈধ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশ পরিচালিত হলে সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি হতে পারে। ৩০ ডিসেম্বর প্রহসনের নির্বাচনে যাদেরকে কমিশন নির্বাচিত ঘোষনা করেছে তারা কেউই নির্বাচিত নয় এবং যাদের গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে তারা কেউই জনগণের প্রতিনিধি নয়। গতকাল রাজধানীর তোপখানা রোডে শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গণফোরামের দুই বিজয়ী প্রার্থীর শপথ নেয়ার বিষয়টি দলীয় ফোরামের আলোচনা হয়েছে। সিদ্ধান্ত ইতিবাচক হতে পারে। তবে ড. কামালের নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশ নেওয়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান শরিক বিএনপির ৫ নির্বাচিত সদস্য শপথ নেবেন না বলে দলটির পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয়েছে।
গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের হয়ে গণফোরাম প্রার্থী সুলতান মোহাম্মদ মনসুর ধানের শীষ প্রতীকে মৌলভীবাজার-২ থেকে জয়ী হয়েছেন। এ ছাড়া সিলেট-২ থেকে গণফোরামের উদীয়মান সূর্য প্রতীকে জিতেছেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোকাব্বির খান। এ দুজনের শপথ নেওয়া প্রসঙ্গে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে ড. কামাল হোসেন বলেন, গণফোরামের বর্ধিত সভা চলছে। এতে সুনির্দিষ্ট আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। আমার নিজের ধারণা যে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আমরা নেব। বিষয়টা সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে জানানো হবে।
এ বিষয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক কামাল হোসেন নির্বাচনের দিন রাতে সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, তারা ‘প্রহসনের’ নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছেন। নির্বাচনের পরের দিন জোটের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক শেষে শপথ প্রসঙ্গে কামাল হোসেন বলেছিলেন বিষয়টি বিবেচনাধীন। তবে ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাঁরা সব ফলই প্রত্যাখ্যান করেছেন। কেউ শপথ নেবে না।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা ঐক্য থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে কামাল হোসেন বলেন, নীতিগতভাবে তিনি ঐক্যকে রাখার পক্ষে। তবে এগুলো সবই আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সরকারে ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য ঐক্য কাজ করবে বলে তিনি মনে করেন। এ ছাড়া জামায়াত প্রসঙ্গে জানান, জামায়াত ঐক্যফ্রন্টে নেই, ২০ দলের মধ্যে আছে।
নির্বাচনে ভোট ডাকাতি বা ভয়াবহ কারচুপির কথা বলছেন, এর কোন দলিল বা প্রমাণ কি আপনাদের কাছে আছে। আর যদি থেকে থাকে তাহলে কি আইনী পদক্ষেপ নেবেন? সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল বলেন, ভোট ডাকাতির অনেক তথ্য প্রমাণ আছে। ভোটের আগের দিন রাতেই নৌকায় সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভরে রাখা হয়েছে। তথ্য প্রমাণ নিয়েই আমরা আইনী পদক্ষেপের বিষয়টি চিন্তাভাবনা করছি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক, মোস্তফা মহসীন মন্টু, নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, এ ছাড়া দুই জয়ী প্রার্থী সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, এডভোকেট মোকাব্বির খান, এডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু। সেখানে বলা হয়, তফসিল ঘোষণা থেকে শুরু করে প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে ঐক্যফ্রন্টসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোকে মাঠে নামতে দেয়নি ক্ষমতাসীনরা। সেনাবাহিনী নামার পর পরিবেশের উন্নতি হবে বলে মনে করেছিল গণফোরাম। কিন্তু তারা বলে, নির্বাচন কমিশন, জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, ও বিচার বিভাগ একজোট হয়ে অত্যন্ত পরিকল্পিত উপায়ে চরম নৈরাজ্যকর ও ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দেশের জনগণকে অসহায় করেে ফেলেছে। সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা আইনের আবরনে সেনাবাহিনীর ভূমিকাকে নিয়ন্ত্রণ করে অকার্যকর করে রাখে।
তিনি বলেন, আমাদের ভুলে গেলে চলবে না যে, ক্ষমতাসীন সরকার, নির্বাচন কমিশন, জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও আদালত কেহই আইনের উর্ধ্বে নয়। নির্বাচন কমিশন প্রহসেন নির্বাচনের পর যাদের নির্বাচিত বলে ঘোষনা করেছে তারা কেউ নির্বাচিত নয়, যাদের গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে তারা কেউ জনগণের প্রতিনিধি নয়। আমরা এই নির্বাচনকে ইতিপূর্বে ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছি। অনতিবিলম্বে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জোর দাবি জানান। নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ধর্ষণের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে গণফোরাম বলেছে, এ ঘটনায় জনগণের সাংবিধানিক অধিকার, মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার ধর্ষিত হয়েছে।#

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (19)
Sengupta ৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:৪৫ এএম says : 2
ফলাফল কী হয়েছে তা না ভেবে সংসদে যাওয়া উচিত ঐক্যফ্রন্টের। সংসদে ইতিবাচক ভূমিকা সাধারণ মানুষের কাছে গণফোরামের গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়ে দেবে।
Total Reply(0)
muhammad jasim uddin ৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:৪৫ এএম says : 0
লোভ সামলানো আসলেই অনেক কঠিন
Total Reply(0)
Mohsin Reza ৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:৪৬ এএম says : 0
Double standard is not good for politics.
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:৪৬ এএম says : 0
যা ভেবেছিলাম তাই সত্যি হতে চলেছে। আমি আগেই ধারণা করেছিলাম এই ডক্টর কামাল ছলে কৌশলে বিএনপিকে সরকারের অধীনে নির্বাচনে এনে বিশ্ববাসীকে সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখাবেন। অনেকেই বলছেন বিএনপির কাধে ভর করে ডক্টর কামাল দুটি সিট পেয়েছেন কিন্তু আমার মনে হচ্ছে তাকে দুটি সিট পুরস্কার হিসেবে দেয়া হয়েছে।
Total Reply(0)
Zulfiqar Ahmed ৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:৪৬ এএম says : 0
বিশ্ব কিন্তু মিশরের সিসিকেও সমর্থন দিয়েছে।
Total Reply(0)
Md. Habibur Rahman Majumder ৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:৪৭ এএম says : 0
আওয়ামীলীগে যোগ দেয়ার কোন উপায় আছে কি না ঐটা দেখেন....
Total Reply(0)
msIqbal ৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:৪৭ এএম says : 1
''বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত'' আগামী পাঁচ বছরের জন্য মামলা-হামলা আর পুলিশের দৌড়ানি থেকে রেহাই পাওয়ার এই সুবর্ণ সুযোগ ''ত্যাগ'' করে ''ত্যাগী' হওয়াটা বুদ্ধিমানের (!?) কাজ হতে পারে না !
Total Reply(0)
Shah Alam Khan ৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:৪৭ এএম says : 2
সংসদে যোগদান করলে অন্ততঃপক্ষে কথা বলার একটা ফ্লোর পাওয়া যাবে।। যোগদান মানে নির্বাচনে কারচুপি হয়নি এমনটি বলা যাবে না৷
Total Reply(0)
রিপন ৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:৪৮ এএম says : 5
সারা বিশ্বের স্বীকৃতি ধুইয়া পানি খান, দেশের মানুষ আপনাদের একটাই জিনিষ দিচ্ছে অভিশাপ। বিশ্বাস করি এই অভিশাপের ফলেই আওয়ামী লীগ বিলীন হয়ে যাবে।
Total Reply(0)
তানভীর আহমাদ ৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:৪৮ এএম says : 2
It is very likely that after few days bnp also will take oath.
Total Reply(0)
ahmed ৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:৪৯ এএম says : 0
৫ই জানুয়ারির একটি কলঙ্কিত নির্বাচনের সাথে যোগ হল ৩০ শে ডিসেম্বরের আরেকটি কলঙ্কিত নির্বাচন ।
Total Reply(0)
Ahmed Moha ৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:৪৯ এএম says : 0
বিএনপি এ নির্বাচনে ধরা খেলেও গণফোরামের কিন্তু লাভই হয়েছে।
Total Reply(0)
Mohammad Yousuf ৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:৫০ এএম says : 0
নির্বাচন যদি সংবিধান সুস্পষ্ট লঙ্গন ই তাহলে শপথ কেন? তাছাড়া ভোট গুলো তো 99% বি.এন.পির ই তাহলে তাদের সিদ্ধান্তের বাহিরে এটাতো সুবিধাবাদী নয় কি?
Total Reply(0)
Azizul Hoque ৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:৫০ এএম says : 0
ধানের শীষ মার্কা নিয়ে জয়ী হয়ে এখন ‘চোখের সামনে’ হাইজ্যাক হওয়া নির্বাচনকে বৈধতা দেয়া মানেই হচ্ছে বিএনপির ক্ষতি করা, দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠীর ভোটাধিকার ও তাদের বিশ্বাসের সাথে বেঈমানী করা।তাহসিনা লুনা ও সিলেটবাসীর চোখের পানিতে ভেজা সিলেট-২ আসন যেখানে মুকাব্বির বিজয়ী। এ ত্যাগের মূ্ল্য দিতে হবে কামাল সাহেব কে ।কিছুদিন আগে মন্টু বলেছিল যারা শপথ নিবে তারা জাতীয় বেঈমান।
Total Reply(0)
msIqbal ৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:৫১ এএম says : 0
জাতি আগেই নিশ্চিত ছিল, আপনারা আসছেন! শুধু শুধু সময়ক্ষেপণ!! জাতি এখন অপেক্ষায় আছে একটি 'নতুন বিএনপি' দেখার!!! মূল বিএনপি থেকে আলাদা হয়ে সংসদে যোগ দেয়া নতুন বিএনপি!!!!
Total Reply(0)
Zubayer Rahman ৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:৫১ এএম says : 0
এ কেমন ঐক্য! বিএনপি র জন্যে এটা নিশ্চয় সুসংবাদ নয়। ঐক্যফ্রন্ট এর ঐক্যে ফাটল নিশ্চিতভাবেই প্রতীয়মান।
Total Reply(0)
MD.ABDUR RAHMAN ৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:৫১ এএম says : 0
আওয়ামী লীগারদের এত উল্লসিত হওয়ার কিছু নাই, ড. কামাল হোসেন বলেছেন তারা দু'জনের শপথের ব্যাপারে ইতিবাচক, কিন্তু যদি তাদের শপথ না নেয়াটা দেশ ও জনগণের জন্য বেশি ইতিবাচক হয় নিশ্চয়ই তিনি তাই করবেন এবং অন্যরাও তা মেনে নেবে
Total Reply(0)
মোহাম্মদ হান্নান ৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ৭:০২ এএম says : 0
It looks Dr Kamal Hussain as a leader of Jatio Oikyofront is in a dilemma and struggling to talk decisively. if he got the evidence of vote rigging then he shouldn't delay in filing a case to the court against EC immediately. Instead, he said that they are thinking it over about filing a case in the court. He declared that the election was invalid and they have evidence of vote rigging. Based on the fact BNP of 20 party alliance already declared that their five MPs elect will not take oath to join the parliament. But DR Kamal Hussaing said they are going discuss about their 2 MPs elect if they should join the parliament or not. It is now crystal clear that Dr Kamal Hussain is really struggling in making decision. It sounds like, the patient will die before doctor came.
Total Reply(0)
আলী ৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১১:০৪ এএম says : 0
ডাঃ কামালের দল সংসদে না যাওযা ভালো হবে আমি মনে করি , কারন আওযামীলীগ কাউকে সন্মান দিযে কথা বলে না ৭ সিট নিযে সংসদে না যাওযা ভালো আওযামীলীগ কথা বলার সুযোগ দিবে না সংসদে
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন