শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

লবণের দরপতনে হতাশ চাষি

শামসুল হক শারেক, কক্সবাজার থেকে | প্রকাশের সময় : ১১ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

দিনমজুর থেকে সর্বোচ্চ পদধারী ব্যক্তিরাও কক্সবাজারের লবণের ভোক্তা। কিন্তু বছরের পর বছর অবহেলার শিকার হয়ে আসছে এই লবণ খাত। লবণ খাতের উন্নয়নে ও হাজার হাজার প্রন্তীক চাষিদের কল্যাণে তেমন কিছু হয়েছে বলে জানা নেই। মাঠে লবণের দর পতনে হতাশ হয়ে পড়েছেন চাষিরা।
এখন কক্সবাজারে চলছে লবন উৎপাদন। ৬০ একর জমিতে ৩০ হাজার চাষি লক্ষ্যমাত্রার ১৮ লাখ মে.টন লবন উৎপাদনে রাত দিন কাজ করে যাচ্ছেন। তবে লবনের ব্যাপক দর পতনে হতাশ তারা।

জানা গেছে, মাঠ পর্যায়ে এখন লবন বিক্রি হচ্ছে প্রতি মন ২৪০/২৫০ টাকায়। এ হিসেব প্রতি কেজি লবনের মূল্য হয় ৫/৬ টাকার মতো।
লবণের ন্যায্যমূল্য ও ঋণ মওকুফের দাবিতে সোচ্চার হয়ে উঠেছে মাঠ পর্যায়ের লবণ চাষিরা। তারা কক্সবাজারে স্থায়ী লবণ বোর্ড গঠন করে লবণের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণ, মিল মালিকের কারসাজিতে ওজনে কারচুপি বন্ধ ও ১৯৯৬-৯৭ সালে সরকার কর্তৃক মাঠ পর্যায় থেকে ন্যায্যমূল্যে লবণ কেনার জন্য চাষিদের দেয়া একর প্রতি ৫ হাজার টাকা ঋণ মওকুফসহ লবণ চাষিদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের দাবি জানান।
গতকাল মহেশখালী প্রেসক্লাবে মহেশখালী লবণ চাষি সংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে মহেশখালী লবণ চাষি সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি ও মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার পাশা চৌধুরী তার লিখিত বক্তব্যে এসব দাবি তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ১৯৯৬-৯৭ সালে মাঠ পর্যায়ে লবণের অস্বাভাবিক দর পতনের ফলে চাষিদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে বাণিজ্যমন্ত্রী মরহুম আব্দুল জলিল কক্সবাজারে পরিদর্শনে এসে লবণ চাষিদের বিভিন্ন সমস্যার বিষয়ে সরজমিনে দেখে গিয়েছিলেন।

এরই প্রেক্ষিতে সরকারের নির্দেশে লবণের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে মাঠ পর্যায় থেকে সরকারিভাবে মণ প্রতি ১১০ টাকা মূল্য নির্ধারণ করে ন্যায্যমূল্যে লবণ ক্রয় করার নিমিত্তে ২০ কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়েছিল। উক্ত ২০ কোটি টাকা থেকে প্রায় ১৭ কোটি টাকা লবণ চাষিদের মাঝে স্থানীয় সকল তফসিলি ব্যাংকের মাধ্যমে একর প্রতি ৫ হাজার টাকা করে বিলি করেন।

লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, লবণ সরকার এ পর্যন্ত লবণকে শিল্প পণ্য বা কৃষি পণ্য কোনটিতেই স্বীকৃতি দেয়নি। ফলে শিল্প মন্ত্রণালয়ে গেলে বলে এটি শিল্প নয়, আবার কৃষি মন্ত্রণালয়ে গেলে বলে এটি কৃষিপণ্য নয়। তাই অবিলম্বে লবণকে কৃষি পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে কক্সবাজারে স্থায়ী লবণ বোর্ড গঠন করে লবণ চাষিদের যাবতীয় সমস্যা সমাধানে কক্সবাজারে নবনির্বাচিত চার সাংসদ, জেলাপ্রশাসক, কক্সবাজারের জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক-সহ প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্ধের দৃষ্টি আর্কষণ কা হয়। বিশেষ করে লবণ খাতের এই সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বড়মহেশখালি ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন, সাবেক সভাপতি এম, ফোরকান, মো. কামাল কোং, দলিল মিয়া, লবণ ব্যাবসায়িদের মধ্যে মহসিন আনোয়ার, নেচার উদ্দিন, শাহাব উদ্দিন, এনামুল হক, জাফর আলম, সুকুমার কান্তি দে, সিরাজুল ইসলাম, মো. ইসলাম, সালমান, আব্দুল্লাহ আল নিশান, সিরাজুল ইসলাম, আশরাফ জামাল ও আব্দুল্লাহ আল নোমান সুমন প্রমুখ।
এদিকে বিসিকের ডিজিএম দিলদার আহমদ চৌধুরী সূত্রে জানা গেছে, চলতি লবন মৌসুমে লবন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১৮ লাখ মে.টন। আর চাহিদা নিরোপন করা হয় ১৬ লাখ ৫৭ হাজার মে টন।
মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকে গত ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত মাঠে লবন উৎপাদন হয় ২৭ হাজার ৬০৫ মে টন। তবে এটি গত বছর এ সময়ে উৎপাদিত লবণের চেয়ে বেশি।
তিনি আরো জানান, আগামীতে আবহাওয়া ভাল থাকলে লক্ষমাত্রা অর্জিত হবে। লবণ ঘাটতির কোন সম্ভাবনা থাকবে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন