শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

কে হচ্ছেন সংসদ উপনেতা!

ড. শিরিন শারমিন চৌধুরীই স্পিকার

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ১২ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

নতুন মন্ত্রিসভায় ব্যাপক চমক দেখিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবার সংসদেও ব্যাপক রদবদল করা হচ্ছে বলে নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে। সংসদ উপনেতা সহ সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলোরতে ব্যাপক পরিবর্তন আসছে। নবীন সাংসদদের প্রাধান্য দিয়ে সংসদীঢ স্থায়ী কমিটিগুলো গঠন করা হতে পারে বলে জানা গেছে। এবার একাদশ জাতীয় সংসদের স্পিকার, উপনেতা, ডেপুটি স্পিকার, চিফ হুইপ এবং হুইপ পদে নিয়োগ নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। এবারো স্পিকার পদে ড.শিরিন শারমিন চৌধুরীই বহাল থাকছেন। মন্ত্রিসভার রদবদলের পর এবার ডেপুটি স্পিকার, চিফ হুইপ এমনকি সংসদ উপনেতা পদে পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। স্পিকার পদ ছাড়া অন্য পদগুলোতে নতুন মুখ আসছে।
৩০ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদের যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে। সংসদে সরকার দলীয় উপনেতা, চিফ হুইপ ও হুইপ কারা হচ্ছেন তা নিয়ে নেতাকর্মীদের বিভিন্ন স্তরে আলোচনা হচ্ছে। এছাড়া সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে কারা থাকছেন, সংরক্ষিত মহিলা আসনে কে আসছেন তা নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়া সিনিয়র নেতাদের কেউ কেউ সংসদের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসতে পারেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ইনকিলাবকে বলেন, সংসদ উপনেতা কে হবেন সেটা নির্ধারণ করবেন প্রধানমন্ত্রী। বাদ পড়া সিনিয়র নেতাদের মধ্যে থেকেও হতে পারে। যেমন মন্ত্রিসভায় চমক ছিলো এখনোও থাকতে পারে।
এদিকে বিরোধীদলীয় উপনেতা হিসেবে এরই মধ্যে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে স্বীকৃতি দিয়েছেন স্পিকার। দলের চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবের পর ওই স্বীকৃতি দেন স্পীকার। তবে সরকারদলীয় উপনেতা নিয়ে রয়েছে নানা গুঞ্জন। দশম জাতীয় সংসদে এপদে ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী। বয়সজনিত কারণে এবার তাকে বাদ দেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে। তার পরিবর্তে সাবেক শিল্প মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এবং সাবেক কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীকে এ আসনে বসানো হতে পারে। ১৫ বছরের সফল সাবেক শিল্প মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এবং কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীকে এবার মন্ত্রিসভায় রাখা হয়নি। সাজেদা চৌধুরী এবার পরিবর্তন করা হতে পারে। এছাড়া ৮ বারের সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের নামও আলোচনায় আসছে । তবে উপনেতা পদে ত্রিমুখী লড়াই হচ্ছে বলে জানা গেছে। স্পিকার পদ ছাড়া অন্য পদগুলোতে নতুন মুখ। এখানেও প্রাধান্য দেয়া হবে অপেক্ষাকৃত তরুণদের। আওয়ামী লীগ ও সংসদ সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া গেছে। নির্বাচনী প্রচারণায় রংপুরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পিকার হিসেবে আবারও ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীকে বেছে নেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। এ কারণে ওই পদে আর কারও নাম শোনা যাচ্ছে না। দশম জাতীয় সংসদ পরিচালনায় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী যথেষ্ট যোগ্যতার পরিচয় দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীসহ সব দলের এমপিরাও তাকে পছন্দ করেন। তার এ ধরনের গ্রহণযোগ্যতার কারণে স্পিকার হিসেবে অন্য কাউকে নিয়ে ভাবছে না আওয়ামী লীগ। সংসদের ডেপুটি স্পিকার পদে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করা এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি বহাল থাকতে পারেন। তাকে পরিবর্তন করা হলে এ পদে সাবেক আইনমন্ত্রী আব্দুল মতিন খসরু, সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ ও সাবেক উপ-মন্ত্রী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর নাম আলোচনায় আসছে। তবে এ পদে নতুন কাউকে নিয়োগ দিয়ে চমক দিতে পারেন সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২৯৯টি আসনে ভোট হয়। এক প্রার্থীর মৃত্যুজনিত কারণে গাইবান্ধা-৩ আসনে ভোটগ্রহণ পিছিয়ে ২৭ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে। ভোটের দিন গোলযোগের কারণে ২৯৮ টি আসনের ফলাফল ঘোষনা করে ইসি। পরে ব্রা²ণবাড়িয়া-২ আসনের নির্বাচনের বিএনপির প্রার্থী নির্বাচিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ২৮৮টি আসনে জয়লাভ করে। আওয়ামী লীগ একাই জিতেছে ২৫৭টি আসনে। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ায় দলটি টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট পেয়েছে ৮টি আসন। বিএনপি এককভাবে পেয়েছে ৭টি। নির্বাচনে এককভাবে ২২টি আসন পেয়ে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হয়েছে জাতীয় পার্টি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় পায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ। ইতিমধ্যে ক্ষমতাসীন দলের বিজয়ী সংসদ সদস্যরা শপথ নিয়েছেন। এরপর নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা সংসদ নেতা নির্বাচিত করা হয়।
আগামী ৩০ জানুয়ারী একাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন শুরু হচ্ছে। সংসদ পরিচালনায় এর পরেই গুরুত্বপূর্ণ পদ হচ্ছে সরকার দলীয় চিফ হুইপ। দশম জাতীয় সংসদে ওই পদে ছিলেন আ স ম ফিরোজ। এবার তার পদে অন্য কাউকে নির্বাচনের কথা বিবেচনা করছে আওয়ামী লীগ। এক্ষেত্রে সাবেক হুইপ নূরে আলম চৌধুরী ও ইকবালুর রহিমের নাম শোনা যাচ্ছে। তবে হুইপ পদে সিনিয়রদের প্রাধান্য দেয়া হবে বলে জানা গেছে। দশম সংসদের ৬ হুইপের মধ্যে সাহাবউদ্দিনকে এবার প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে। সংসদ পরিচালনায় সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির পদটি অনেকের কাছেই কাঙ্খিক্ষত। কারণ মন্ত্রণালয়গুলোকে এসব কমিটির কাছে জবাবদিহি করতে হয়। নবম ও দশম দুই সংসদে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির তৎপরতা ছিলো লক্ষণীয়। অনেক গুরুত্বপূর্ণ ও নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্ত এসেছে কমিটির বৈঠকগুলো থেকে। আগের মতো এবারও কমিটিগুলোকে অধিকতর শক্তিশালী করা হবে। দশম সংসদের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সদস্যদের মধ্যে বেশ কয়েকজন এবারের মন্ত্রিসভায় এসেছেন। অর্থ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় কমিটির সভাপতি ছিলেন ড. আবদুুর রাজ্জাক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক কমিটির সভাপতি ছিলেন দীপু মনি, বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় বিষয়ক কমিটির সভাপতি ছিলেন হাছান মাহমুদ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি ছিলেন টিপু মুনশি, ডাক টেলিযোগাযোগের সভাপতি ছিলেন ইমরান আহমেদ চৌধুরী, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন তাজুল ইসলাম, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন জাহিদ আহসান রাসেল। এবারের মন্ত্রিসভায় তারা সবাই স্থান পেয়েছেন। এবার স্থায়ী কমিটির বেশির ভাগ পদে সিনিয়রদের নির্বাচিত করা হবে। আর বেশ কিছু স্থায়ী কমিটির সভাপতির পদ দেয়া হবে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও শরিক দলগুলোর এমপিদের। আগামী ৩০ জানুয়ারি প্রধম অধিবেশনের আগেই এসব পদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। এ অধিবেশনেই বিভিন্ন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলো গঠিত হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (10)
Amin Al Rasheed ১২ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:০২ এএম says : 1
মতিয়া চৌধুরী কনফার্ম আরও আগেই
Total Reply(0)
SI Reza ১২ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:০২ এএম says : 0
আমু ভাই
Total Reply(0)
Ujjal Chowdhury ১২ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:০২ এএম says : 0
Motia chowdhury
Total Reply(0)
Zulfiqar Ahmed ১২ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:০৭ এএম says : 0
ভোট ডাকাত সরকারের কে সংসদ উপনেতা হলো তা নিয়ে জনগণের মাথা ব্যথা নেই।
Total Reply(0)
Bari Monju Sheikh Monjur ১২ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:০৮ এএম says : 0
বাদ পরা মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রীর মধ্যে অধিকাংশ রা দূনীতি স্বজনপ্রী, নিয়োগ বানিজ্য,টেন্ডার বানিজ্যেেের সাথে জড়িত থাকায় মন্ত্রী সভায় অন্ততভূক্তি হতে পারেনি।
Total Reply(0)
আমিন মুন্সি ১২ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:০৯ এএম says : 0
মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পড়া সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ইতোমধ্যে মন্তব্য করেছেন যে সময় এখনও ফুরিয়ে যায়নি। কারণ প্রধানমন্ত্রীর হাতে এখনও কয়েকটি মন্ত্রণালয় আছে। সুযোগটা সেও নিতে পারে।
Total Reply(0)
করিম আবদুল্লাহ ১২ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১০ এএম says : 0
আমরা ভোট দিতে পারিনি তাই কে কি হলো তা নিয়ে আগ্রহ নেই। সব ভোট ডাকাত....
Total Reply(0)
সিফাতুল্লাহ ১২ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:১১ এএম says : 0
ভোট ডাকাতি করেও মন্ত্রী-মিনিস্টার হওয়ার তদবির করতে লজ্জা লাগে না, হায়রে জাতি....
Total Reply(0)
Misbah Uddin ১২ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:০০ পিএম says : 0
এত মন্ত্রনালয় পরিবর্তন হয় প্রধানমন্ত্রির পদ পরিবর্তন হয় না কেন????
Total Reply(0)
আব্দুল্লাহ আলআমিন ১৩ জানুয়ারি, ২০১৯, ৪:০২ পিএম says : 0
কাকে কোন পদে নিয়োগ দেওয়াহলো সেটাকোন বিষয়না,বিষয় হলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন সরকার দুর্নিতি ও মাদকএর বিরুদ্দে ০% ট্রলারেন্জ থাকবে,যদি এই ০% ঠিক থাকে তবেই আমি খুশি,কে মন্ত্রী, কে উপমন্ত্রী,তাতে কিছু আসে,যায় না,জনগন চায় শান্তি,।।।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন