দেনার দায়ে জর্জরিত পাকিস্তানের ডাকে সাড়া দিয়ে গোয়েদার সমুদ্রবন্দরে বিপুল পরিমান অর্থ বিনিয়োগ করে তৈল শোধনাগার বানানোর কথা জানাল সউদী আরব। এই বিনিয়োগের পরিমান দশ বিলিয়ন ডলার, ভারতীয় অর্থমূল্যে যা প্রায় ৮২ হাজার কোটি টাকা। রোববার পাকিস্তানের বালুচিস্তান প্রদেশের গোয়েদার বন্দরে দাঁড়িয়ে এই আর্থিক সাহায্যের কথা ঘোষণা করলেন সউদী আরবের শক্তি মন্ত্রী খালিদ আল ফালি। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ‘পাকিস্তানের আর্থিক উন্নয়নের শরিক হতে চায় সউদী আরব। সেই জন্যই বানানো হচ্ছে তৈল শোধনাগার। পাশাপাশি চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের অংশীদারও হতে চাই আমরা।’
আগামী ফেব্রুয়ারিতেই পাকিস্তান সফরে আসবেন সউদীর যুবরাজ তথা ক্রাউন প্রিন্স মহম্মদ বিন সলমন। সেখানেই পাকিস্তানের সঙ্গে চুক্তি সই করা হবে বলে জানিয়েছেন সউদীর শক্তি মন্ত্রী। গোয়েদার সমুদ্রবন্দরে তৈল শোধনাগার ছাড়া অন্যান্য বেশ কিছু প্রকল্পেও পাকিস্তানকে আর্থিক সাহায্য করা হবে বলে জানিয়েছেন খালিদ আল ফালি।
অগস্টে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেনার দায়ে জর্জরিত পাকিস্তানকে দেউলিয়া হয়ে যাওয়া থেকে উদ্ধার করতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের কাছে আর্থিক সাহায্য চাইছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। কখনও চিন, কখনও সউদী, কখনও সংযুক্ত আরব আমিরাত। ঋণ মওকুফ করতে আলাপ-আলোচনা চালাচ্ছেন আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের সঙ্গেও। এই পরিস্থিতিতে সউদীর এই আর্থিক সাহায্যে আপাতত কিছুটা হলেও হাঁফ ছেড়ে বাঁচার সুযোগ পেলেন ইমরান, এমনটাই মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা।
যদিও সউদীর এই আর্থিক সাহায্য পাকিস্তানের জন্য আরও বড় বিপদ ডেকে আনছে কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে। কারণ, চিন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডরের একটা প্রান্ত হল গোয়েদার সমুদ্রবন্দর। এই করিডরের ২০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তা, রেলপথ এবং বন্দরের মাধ্যমে পশ্চিম চিন যুক্ত হয়ে যাচ্ছে ভারত মহাসাগরের সঙ্গে। পাক- অধিকৃত কাশ্মীর এবং বালুচিস্তানের বুক চিরে এই রাস্তা তৈরি হলে চিনের কাশগড় থেকে সহজেই পৌঁছে যাওয়া যাবে আরব সাগর। সেখান থেকে সহজেই ভারত মহাসাগরের একটা বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রভাব বাড়াতে পারবে বেইজিং।
গোয়েদার বিমানবন্দরেই একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল বানানোর ঘোষিত প্রকল্প আছে চিন ও পাকিস্তানের। এই এলাকায় পন্য মজুত, পরিবহন এবং উৎপাদনের জন্য জায়গা দেওয়া হবে বিভিন্ন চিনা কোম্পানিকে। সেই গেদরেই এই বিপুল পরিমান অর্থ বিনিয়োগ করে সউদী আরবের তৈল শোধনাগার বানানোর সিদ্ধান্ত কীভাবে নিচ্ছে চিন, সেই প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি। সূত্র: ডন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন