শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

সিলেটেই ভাগ্য খুলেছে খুলনার

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

সঙ্গী টানা চারটি হারের ক্ষত। ভেন্যু বদল হলো, ভাগ্য বদল হবে কি খুলনা টাইটান্সের! সেই শঙ্কায় তিলক এঁকে দিয়েছিল ১২৮ রানের ছোট্ট সম্বল। তবে ভরসা ছিল কেবল উইকেট, দ্রুত রান তোলা যেখানে বেশ কঠিন। উইকেটের সেই সাহায্য দারুণ কাজে লাগালেন বোলাররা। তাইজুল ইসলাম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের স্পিন হয়ে উঠল দুর্বোধ্য। পঞ্চম ম্যাচে এসে প্রথম জয়ের দেখা পেল খুলনা। বিপিএলের সিলেট পর্বের প্রথম ম্যাচে গতকাল রাজশাহী কিংসকে ২৫ রানে হারিয়েছে মাহমুদউল্লাহর দল। পাঁচ ম্যাচে রাজশাহীর এটি তৃতীয় হার।
বিপিএলের সিলেট পর্বে ব্যাটিং উইকেট এবং রান উৎসবের আশায় ছিলেন অনেকে। কিন্তু প্রথম ম্যাচে উইকেট দেখা গেল বেশ মন্থর। গ্রিপ করল, টার্ন মিলল। বাউন্সও নিচু হলো প্রায়ই। তাতে ধুঁকল দুই দলের ব্যাটসম্যানরাই। উইকেটের চরিত্র বুঝে ব্যাট করতে পারেনি কোনো দলই। খুলনা যতটা বাজে ব্যাট করেছে, রাজশাহী করেছে তার চেয়েও নীচু মানের। ফলাফল ম্যাড়ম্যারেড় এক টি-২০ ম্যাচ।
ঢাকায় নিয়মিত ওপেন করেছেন পল স্টারলিং। টানা ব্যর্থতার পর এই আইরিশকে বাদ দিয়েই নেমেছে খুলনা। জহুরুল ইসলাম ও জুনায়েদ সিদ্দিকের নতুন উদ্বোধনী জুটি টিকল ১১ বল। ১৫ রানের সে জুটিতে ১১ রানই জহুরুলের (৬)। তাঁর সঙ্গী জুনায়েদ ফিরেছেন পঞ্চম ওভারে। সঙ্গীর চেয়ে ৮ বল বেশি খেলে ১ রান বেশি করেছেন জুনায়েদ। ৩৭ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারানো খুলনার ইনিংস বাকি সময়টাতেও এগিয়েছে এভাবেই, খুঁড়িয়ে।
ডেভিড মালান (১৫), মাহমুদউল্লাহ (৯), নাজমুল হোসেন (১১) ও কার্লোস ব্রাফেট (৮)- ব্যর্থতার মিছিলে দেশি-বিদেশিদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। এক নাজমুল ছাড়া বাকি সবার স্ট্রাইকরেটও ছিল একশ’র নিচে। ৮২ রানে ৬ উইকেট হারানো খুলনাকে ভদ্রস্থ একটা স্কোর এনে দিয়েছেন সাতে নামা আরিফুল হক। ডেভিড ভিসেকে (১৩) নিয়ে প্রথমে তিন অঙ্ক পার করেছেন আরিফুল। খুলনার তখন এমনই দশা, ৩২ বলে ৩৪ রানের জুটিকেই মনে হচ্ছিল অনেক বড়। ১১৬ রানে ভিসে বিদায় নেওয়ার পর আরিফুলও অবশ্য কাজ শেষ করে আসতে পারেননি। ২০তম ওভারে মুস্তাফিজুর রহমানকে হাঁকাতে গিয়ে ধরা পড়েছেন লং অনে। ২৭ বলে ১ চারে ২৬ রান করেই দলের সর্বোচ্চ স্কোরার আরিফুল!
২০ ওভারের ম্যাচে পুরো দল মিলে মেরেছে ৭টি চার ও ২ ছক্কা। সিলেট পর্বের শুরুটা এর চেয়ে ভালোভাবেও হতে পারত।
আরো বড় বিপর্যয় অপেক্ষা করছিল রাজশাহীর জন্য তা টের পাওয়া গিয়েছিল আগেই। দলকে বাড়তি কিছু দিতে টপ অর্ডারের নামছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। সে ভূমিকায় সফলও হচ্ছেন। আগের বিপিএলগুলো যেখানে তাঁর অলরাউন্ডার সত্তা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিচ্ছিল, সেখানে এবারের বিপিএলে দারুণ ব্যাট করছেন মিরাজ। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রান তুলছেন টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের আবদার মেনেই। কিন্তু অধিনায়কের এমন সাফল্যও দলকে অনুপ্রাণিত করছে না। ব্যতিক্রমী মিরাজই হয়ে পড়েছেন দলের সবচেয়ে সেরা ব্যাটসম্যান!
রাজশাহীর জন্য ঝামেলার ব্যাপার হলো, এদিন মিরাজের ইনিংস মাত্র ১৬ বল লম্বা হয়েছে। তাতে ২ চার ও ১ ছক্কায় ২৩ রান এনে দিতে পেরেছেন অধিনায়ক। এর পর দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান ক্রিশ্চিয়ান ইয়ঙ্কার ও আরাফাত সানীর। সানী তবু ১৩ বলেই এ রান তুলেছেন কিন্তু ১৫ রান তুলতে ইয়ংকারের ২৪ বল খেলা টি-টোয়েন্টি তো বটেই, ওয়ানডেতেও এখন মেনে নেওয়া কঠিন।
প্রথম ওভারে জুনায়েদ খানের বলে ফিরেছেন লরি ইভান্স। এরপর থেকেই স্পিনারদের রাজত্ব। মিরাজ-মুমিনুল মিলে ২৫ বলে ২৯ রানের জুটি গড়েছিলেন। মাহমুদউল্লাহর বলে মুমিনুলের (৭) আউট হওয়া দিয়ে শুরু হলো ধসের। তাইজুলের পরের ওভারেই বিদায় নিলেন মিরাজ ও সৌম্য। ১ উইকেটে ৩০ রান থেকে ৪ উইকেটে ৩২-এ পরিণত হলো রাজশাহী। সময় যত গড়িয়েছে স্কোরকার্ড তত ভয়ংকর রূপ নিয়েছে। ক্ষণিক পরেই সেটা ৮ উইকেটে ৭৪ হয়ে গেল। সানী ও কামরুল ইসলাম (১৩) না দাঁড়িয়ে গেলে আর একশ’ই পেরোতে পারত না রাজশাহী। ১০৩ রানেই শেষ দুই উইকেট হারিয়েছে তারা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
খুলনটা টাইটানস : ২০ ওভারে ১২৮/৯ (জহুরুল ১৩, জুনায়েদ ১৪, মালান ১৫, মাহমুদউল্লাহ ৯, শান্ত ১১, ব্র্যাথওয়েট ৮, আরিফুল ২৬, ভিসা ১৩, তাইজুল ০, শরিফুল ২*, জুনাইদ ১*; রাব্বি ৩-০-১৬-০, উদানা ৪-০-৩৬-২, মিরাজ ৪-০-২১-২, মুস্তাফিজ ৪-০-২১-১, সানি ৪-০-২৫-২, সৌম্য ১-০-৬-০)।
রাজশাহী কিংস : ১৯.৫ ওভারে ১০৩ (মুমিনুল ৭, ইভান্স ০, মিরাজ ২৩, সৌম্য ২, ডেসকাট ১৩, জাকির ৭, ইয়োঙ্কার ১৫, উদানা ৬, সানি ১৫, রাব্বি ১৩, মুস্তাফিজ ০*; জুনাইদ ৩.৫-০-২৬-৩, ভিসা ৩-০-২৮-১, তাইজুল ৪-০-১০-৩, মাহমুদউল্লাহ ৪-১-১২-২, মালান ৪-০-২১-০, শরিফুল ১-০-৪-০)।
ফল : খুলনা টাইটান্স ২৫ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা : তাইজুল ইসলাম (খুলনা)।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন