শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

বানারীপাড়ায় হারিয়ে যাচ্ছে খেজুরে রস

বানারীপাড়া (বরিশাল) থেকে এস মিজানুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ২১ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

শিশির ভেজা ঘাসের ডগায় মৃদু মন্দ ঠান্ডা হাওয়ায় এমনকি কুয়াশার রাত্রি শেষে জ্যোৎস্নার ঝলকানীতে প্রচন্ড শীত যখন প্রকৃতিকে কাঁপিয়ে চলছে ঠিক এমন সময়েও পাওয়া যাচ্ছে না গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের খেজুর রস। সময়ের বিবর্তনে বিলুপ্তির পথে খেজুঁর গাছ। বিগত দিনে শীতের মৌসুম এলে রস আহরণকারী বহু গাছিরা গ্রামের পর গ্রাম ঘুরে রস আহরনের জন্য অগণিত খেজুঁর গাছ চেঁছে পাইল করতেন। পাইল করার কয়েকদিন পরে পূণরায় পাইল দিয়ে গাছে হাড়ি পাতার ব্যবস্থা করতেন। গাছে হাড়ি উঠলেই শুরু হতো পিঠা, গুড় আর পায়েস খাওয়ার উৎসব। পল্লীবাংলার পল্লী শিল্পী আব্দুল আলীমের ‘বধূর বাড়ি মধূপুর... মোদের মিলন বাঁশির সুর’- এ গান যারা শুনেছেন নিশ্চয়ই খেজুর গুড়ের বর্ণনা কত সুন্দরভাবে দরাজ কন্ঠে শিল্পি গেয়েছেন। রাতের প্রথম প্রহরের খেজুঁর রসের শিরনি শীতের মধ্যে চাঁদর-কাঁথা মুড়িয়ে অনেকে একত্রে মিলে খাওয়ার স্বাদ যারা পেয়েছেন নিশ্চয়ই তা চলে যাবেন ছোট বেলার স্মৃতি মন্থনে। সেই যে আনন্দ শিশু, কিশোর, যুবক ও বৃদ্ধরা মিলে গাছের তলায় জড়ো হতেন জ্যোৎস্না রাতে। সেই সব দৃশ্য এখন তেমন একটা চোখে পরে না বললেই চলে। এ মৌসুমে অনেক পরিবার তাদের জিবিকা নির্বাহ করত খেজুর রস বিক্রির মাধ্যমে।

এ সময় দেখা যেত কাঁচা রাস্তার দু’পাশে সারি সারি খেজুর গাছ। গাছে দেখা যেত ঢেউয়ে ঢেউয়ের মতোন খাঁজকাটা। বিকেল হলেই দেখা যেত গাছির মাথায় রস সংগ্রহের হাড়ি। সে দারুন দৃশ্য এখন আর চোখে পরে না। খেজুর গাছের সংখ্যা কমে যাওয়ার পেছনে বিবিধ কারণ। অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন ইট ভাটায় বেশির ভাগ খেজুঁর গাছ দিয়ে ইট পোড়ান। কম খরচে গৃহনির্মাণের জন্য খেজুর গাছ ব্যবহার করায় গাছের সংখ্যা কমেছে।
যার ফলে এখন আর দেখা মেলে না শীতের সকালে কুয়াশা ভেদ করে খুব সকালে পাড়ার বাজারে, গলির মোড়ে গাছিদের রসের হাঁড়ির পসরা। দেখা যায় না রস বোঝাই হাঁড়ি কাধে নিয়ে বাড়ি বাড়ি ফেরি করার সেই সব দৃশ্য।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন