শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

সারিবদ্ধ বালুবাহী ট্রাকের কাছে অসহায় জিম্মি নেত্রকোনার দুর্গাপুর পৌরবাসী

নেত্রকোনা জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৩ জানুয়ারি, ২০১৯, ৩:০০ পিএম

নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর পৌর এলাকায় প্রতিদিন শত শত বালু বোঝাই ট্রাক রাস্তায় দাড়িয়ে থাকায় পৌর নাগরিক ও পর্যটকদেরকে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

গারো হাজং এবং বাঙ্গালী অধ্যুষিত প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর, ছোট বড় অসংখ্য গারো পাহাড় আর পাহাড়ের কোল ঘেঁষে বয়ে চলা স্বচ্ছ নীলাভ জলরাশির নৈসর্গিক সৌন্দর্যের অপূর্ব লীলাভূমি দূর্গাপুর উপজেলা। এখানে রয়েছে দেশের একমাত্র চিনা মাটির খনি। এছাড়াও প্রাকৃতিক সম্পদ হিসেবে রয়েছে সিলিকন বালি, নূরী পাথর ও কয়লা।
এখানকার সোমেশ্বরী নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে যেমন বালু উত্তোলন করা হচ্ছে, অপর দিকে নূরী পাথর ও কয়লা উত্তোলন করে হাজার হাজার শ্রমিক জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। প্রতিদিন এক হাজার থেকে বার শত ট্রাক ও লড়ি নদী থেকে বালু সংগ্রহ করে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংগ্রহ করে আসছে।
বালু ভর্তি শত শত ট্রাক ও লড়িগুলো দূর্গাপুর পৌর এলাকার নাজিরপুর মোড়, তেরী বাজার, ধানমহাল, সুসং সরকারী কলেজ ও আলিয়া মাদ্রাসা মোড়, কাচারী মোড়, পুলিশের মোড়, উৎরাইল বাজার, বিরিশিরি, উপজেলা মোড়সহ ব্যস্ততম এলাকায় প্রতিদিন ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে পৌরবাসী ও পর্যটকরা অনেকটাই ট্রাকের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন।
দূর্গাপুরের বেশীর ভাগ রাস্তাঘাট অত্যন্ত সরু ও ভাঙাচোরা। এসব রাস্তায় ফুটপাত না থাকলেও এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী রাস্তা দখল করে পণ্য সাজিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছেন। এসব রাস্তায় সারিবদ্ধ ট্রাক ঘন্টার পর ঘন্টা দাড়িয়ে থাকায় বিশেষ করে কোমলমতি শিক্ষার্থী, সাধারণ পথচারী পৌর নাগরিকরা সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। ট্রাক ও লড়িগুলো বালু বুঝাই করে নিয়ে যাবার সময় বালুর উপর কোন ত্রিপল দিয়ে ঢেকে না দেওয়ায় বালু উড়ে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের চোখে মুখে বালি পড়ছে। এতে তাঁরা যন্ত্রণা ভুগার পাশাপাশি মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। এছাড়াও এসব রাস্তা দিয়ে প্রতিনিয়ত রিক্সা, অটোরিকশা, লড়ি, সিএনজি, ঠেলাগাড়ি, ভ্যানগাড়ি চলাচল করছে। ট্রাক জটের কারণে বিভিন্ন মোড়ে যানজট হওয়ায় পথচারীদেরকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। অসাবধানতা ও অদক্ষ চালকের বেপরোয়া ট্রাক ও লড়ি চালানোর ফলে প্রায়শই ছোট বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। এতে জান মালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। তারপরও প্রশাসনের টনক নড়ছে না।
তেরী বাজার, কাচারী মোড়, সহকারী জজ আদালত, সরকারী হাসপাতাল, বিভিন্ন ক্লিনিক, মাদ্রাসা ও সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, মহিলা কলেজ রোড এবং ঘনবসতি এলাকা দিয়ে প্রতিনিয়ত শত শত ট্রাক নিষিদ্ধ ঘোষিত হাইড্রোলিক হর্ন বাজিয়ে চলাচল করায় ছোট ছোট সোনা মনি, রোগী ও এলাকাবাসীর ঘুম হারাম হয়ে পড়েছে। দীর্ঘ যানজট লেগে থাকায় ব্যবসা বাণিজ্য মন্দা যাচ্ছে বলে অনেক ব্যবসায়ীর অভিযোগ। ট্রাফিক ব্যবস্থা প্রয়োজনের তুলনায় অত্যন্ত সীমিত। যানজট নিরসনে ট্রাফিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর উপর গুরুত্বারোপ করেন এলাকাবাসী।
দূর্গাপুর পৌরসভার মেয়র আলহাজ¦ আব্দুছ সালামের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি ট্রাক জটের কথা স্বীকার করে বলেন, পৌরসভা সংলগ্ন সোমেশ্বরী পাড় ঘেঁষে বহু সরকারী জায়গা পরিত্যক্ত রয়েছে। একটি বাইপাস সড়ক নির্মাণ করতে পারলে জনগণের দুর্ভোগ অনেকটাই কমবে। এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রশাসনকে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য বার বার অনুরোধ জানানো হলেও অদ্যাবধি এ সংকটের কোন সুরাহা মিলছে না। তিনি এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন