নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কে প্রায় প্রতিদিন তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তির শিকার হন সাধারণ মানুষ-যাত্রী সাধারন ও যানবাহন চালকরা। অপেক্ষা করতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। যেখানে যেতে সময় লাগার কথা ২০ মিনিট, সেখানে যেতে সময় লাগে ৩ থেকে ৫ ঘণ্টা।
জানাযায়, এ যানজটের মূল কারণ, ভুলতা ফ্লাইওভার ও রাস্তার নির্মাণ কাজের ধীরগতি, যেখানে-সেখানে যাত্রী উঠানামা, চালকরা নিয়ম না মেনে গাড়ি চালানো, হাটবাজারে ও মহাসড়কে লোড-আনলোড, অবৈধ ফুটপাট, যানবাহন বিকল হওয়া ইত্যাদি। নিত্য দিনের এ যানজটের কারণে স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রী, ব্যবসায়ী, চাকুরিজীবি থেকে শুরু করে সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে।
বিশেষ করে সপ্তাহের কর্মদিবসগুলোতে এলেই ভুলতা-গোলাকান্দাইল এলাকার ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কের চৌরাস্তা এলাকা থেকে যানজটের সৃষ্টি হয়। এ যানজট সারাদিন-রাতভর তীব্র আকারে ধারন করে। বিশেষ করে কাঞ্চন টোলপ্লাজার উভয় পাশে যানজটের আকার ভয়াবহ আকার ধারণ করে। রূপগঞ্জ থানা, হাইওয়ে ও ট্রাফিক পুলিশ অক্লান্ত পরিশ্রম করেও যানজট নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হচ্ছে। এ সড়কে চলাচলরত মালবাহী ও গণপরিবহণের যাত্রী পরিবহনে ব্যবহৃত যানবাহনগুলো আটকে গিয়ে চরম বিপাকে পড়ে।
শুধু তাই নয়, এ যানজটের প্রভাব পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দা ও জনসাধারনরে উপর। একই সড়কের পাশর্^বর্তি কাঞ্চন বাজার, দেশের বৃহত্তম পাইকারী কাপড়ের মার্কেট গাউছিয়ায় যাতায়াতকারী ব্যবসায়ী ও ক্রেতারাও চরম দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
পরিবহন চালক, শ্রমিক যাত্রী ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার গোলাকান্দাইল চৌরাস্তা এলাকা দিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়ক ক্রস করেছে। এছাড়া ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হলে এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কে যানাবাহন চলাচল বন্ধ রাখতে হয়। আবার এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কে যানাবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখতে হয়। দুটি সড়কেই যানবাহনের চাপ অনেক বেশি। তাই দুটি সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখতে গিয়ে পুলিশ প্রশাসনকে হিমশিম খেতে হয়। ফলে প্রায় যানজট সৃষ্টি হয়। এছাড়া ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক মোটামুটি প্রসস্থ্য হলেও এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কটি অনেকটা সুরু। যারফলে এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়কে কোন প্রকার যানবাহন বিকল হয়ে পড়লেই তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে।
সূত্র জানায়, গাউসিয়া মার্কেটকে দেশের অন্যতম বৃহৎ পাইকারী কাপড়ের মার্কেট হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ মার্কেটে পাইকারী ও খুচরাসহ প্রায় সাড়ে ৩ হাজার দোকান রয়েছে। মালামাল আনা নেওয়ার জন্য এখানে প্রতিদিন কয়েক শত গাড়ী রাখা হয়। গাউসিয়া মার্কেটের কোন নিজস্ব পার্কিং ব্যবস্থা না থাকার কারণে বাধ্য হয়েই চালকদেরকে গাড়ী রাস্তায় রাখতে হয়। রাস্তায় গাড়ী রাখার ফলে রাস্তা অর্ধেকটা দখল হয়ে যাওয়ায় অন্য গাড়ী চলাচল করতে পারে না। এতে করে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজটের। আর এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ মানুষ।
ভুলতা স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও গোলাকান্দাইল মজিবুর রহমান ভুইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, প্রতিদিনের এ দীর্ঘ যানজটের ফলে প্রতিদিনই তাদেরকে স্কুলে যেতে অতিরিক্ত সময় নষ্ট হয়। তাছাড়া সময়মত স্কুলে না পৌঁছাতে পারলে তাদেরকে স্যারদের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। যানজটের কারণে কখনো শিক্ষার্থীদের স্কুলে ক্লাসের সময় পার হয়ে যায়। এতে করে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় প্রভাব পড়ছে।
চাকুরীজীবিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা স্বল্প বেতনে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত রয়েছেন। এ দীর্ঘ যানজটের কারণে তাকে প্রতিদিনই দেরি করে অফিসে পৌঁছাতে হচ্ছে। প্রতিদিন তাকে ১ থেকে ২ ঘন্টা দেরী করে অফিসে যেতে হচ্ছে। দেরি করে অফিসে যাওয়ায় তাকে উপর মহলের কর্মকর্তাদের কাছে জবাবদিহি করতে হয়।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হক বলেন, যানজট নিরসনে হাইওয়ে পুলিশের পাশাপাশি রূপগঞ্জ থানা পুলিশ একযোগে নিরলসভাবে কাজ করছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন