শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বাস্তবায়ন না হলেও বাড়ছে এডিপি

প্রকাশের সময় : ১২ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

পদ্মাসেতুকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চূড়ান্ত হচ্ছে আজ : চাহিদা ১ লাখ ৩১ হাজার কোটি : বরাদ্দ ১ লাখ ৯ হাজার কোটি টাকা
আজিবুল হক পার্থ : বাস্তবায়ন করতে না পারলেও প্রতিবারেই বছরের শুরুতে বড় আকারের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বরাদ্দ দেয়া হয়। আবার বছর শেষে তা কাটছাঁট করে কমানো হয়। রাজনৈতিক বিবেচনায় বিভিন্ন প্রকল্পকে গুরুত্ব দিতে এমন বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এক মাস আগে গত বছরের বরাদ্দ থেকে ৭ হাজার কোটি টাকা কমানো হলেও আজ (বৃহস্পতিবার) গত বছরের সংশোধিত এডিপির তুলনায় ১৮ হাজার কোটি বাড়িয়ে ১ লাখ ৯ হাজার ২০০ কোটি টাকার এডিপি চূড়ান্ত হচ্ছে। গত বছরে ২ হাজার কোটি টাকা ফেরত দেয়া পদ্মাসেতুতে এ বছরেও সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, বরাদ্দের অর্থ শতভাগ বাস্তবায়ন না করে ফেরত দিলেও থাকছে বাড়তি চাহিদা। পরিকল্পনা কমিশনে প্রতিটি মন্ত্রণালয় বিভাগ থেকে করা হচ্ছে বাড়তি চাহিদা। মন্ত্রণালয়গুলোর বাড়তি চাহিদা কাটছাঁট করে আজ বৃহস্পতিবার চূড়ান্ত হচ্ছে ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)। বাড়তি চাহিদা, মেগা প্রকল্পের প্রাধান্য, সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী ও সরকারের প্রাধান্যের খাত, বাস্তবায়নের অগ্রগতি সব মিলিয়ে এডিপি চূড়ান্ত করবেন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠক। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও এনইসির চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা বৈঠকের সভাপতিত্ব করবেন।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, আগামী অর্থবছরে এডিপির জন্য মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর চাহিদা ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা। আর অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে ১ লাখ ৯ হাজার ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়ার কথা জানানো হয়েছে। চাহিদার তুলনায় প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা কম বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। ফলে চাহিদা ও বরাদ্দের মধ্যে বড় ধরনের ঘাটতি থাকছে। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৬৯ হাজার ২০০ কোটি এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৪০ হাজার কোটি টাকা জোগান দেয়া হবে।
পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ১ লাখ ৯ হাজার ২০০ কোটি টাকার এডিপি এনইসি সভায় উত্থাপন করা হবে। আমরা চ্যালেঞ্জ হিসেবে বেশ কিছু বড় বড় প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এতে এডিপির আকারও রেকর্ড পরিমাণে নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে গত মাসে সংশোধনের মাধ্যমে এডিপি ১ লাখ ৯৯৭ হাজার কোটি টাকা থেকে কমিয়ে করা হয়েছে ৯৩ হাজার ৮৯৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (আরএডিপি) ব্যয় নির্ধারণ চূড়ান্তভাবে ছেঁটে দেয়া হয় ৭ হাজার ১০৩ কোটি টাকা। যেখানে মূল এডিপি ৯৭ হাজার কোটি টাকা থেকে নামিয়ে ৯১ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে।
জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বাজেট প্রাক্কলনে সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগে, যার পরিমাণ ১৮ হাজার ৫৪৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। তবে এডিপিতে এককভাবে পদ্মাসেতু প্রকল্পে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ৬ হাজার ২৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।২০১৫-১৬ অর্থবছরের এডিপিতে এ প্রকল্পে বরাদ্দ ছিলো ৭ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। তবে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (আরএডিপি) বরাদ্দ কমে দাঁড়ায় ৫ হাজার ৯ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
আসন্ন বাজেটের আকার হবে ৩ লাখ ৪০ হাজার ৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে এডিপি বরাদ্দ পেতে যাচ্ছে ১ লাখ ৯ হাজার ২০০ কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে এডিপিতে প্রকল্পের সংখ্যা ১ হাজার ২৯৬টি।
সূত্র জানায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রস্তাবিত এডিপিতে বরাদ্দসহ অন্তর্ভুক্ত মোট প্রকল্প সংখ্যা ১ হাজার ১৪১টি। এর মধ্যে চলতি ২০১৫-১৬ অর্থবছরের সংশোধিত এডিপি হতে নতুন এডিপিতে স্থানান্তরিত প্রকল্প সংখ্যা ১ হাজার ৬৬টি। প্রস্তাবিত এডিপিতে বরাদ্দসহ অন্তর্ভুক্ত নতুন অনুমোদিত মোট প্রকল্প ৭৫টি। বিভিন্ন কর্পোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন ১৫৫টি প্রকল্পসহ এডিপিতে বরাদ্দসহ প্রকল্প সংখ্যা দাঁড়ায় সর্বমোট ১ হাজার ২৯৬টি। এ ছাড়া ২৩৫টি প্রকল্প ২০১৬ সালের জুনের মধ্যে সমাপ্ত হওয়ার কথা থাকলেও নানা কারণে তা সম্ভব হয়নি। এ সব প্রকল্প ২০১৬-১৭ অর্থবছরের এডিপিতে অন্তর্ভুক্তি হতে পারে।
জাপানি ঋণ মওকুফ তহবিলের (জেডিসিএফ) অর্থায়নে ৭টি প্রকল্পের অনুকূলে বরাদ্দের পরিমাণ ১৩৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। চলতি অর্থ বছরের সংশোধিত এডিপিতে জেডিসিএফ অর্থায়নে প্রকল্প সংখ্যা হচ্ছে ১৩টি এবং এসব প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দের পরিমাণ হচ্ছে ২৩৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন