শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

সিলেটের ঘুরে দাঁড়ানো জয়

চট্টগ্রাম থেকে ইমরান মাহমুদ | প্রকাশের সময় : ২৬ জানুয়ারি, ২০১৯, ৫:২৮ পিএম

ঝড়ো ব্যাটিংয়ে সুর বেঁধে দিলেন আফিফ হোসেন ও লিটন দাস। দারুণ ব্যাটিংয়ে সঙ্গীত করলেন সাব্বির রহমান ও মোহাম্মদ নওয়াজ। তাদের ব্যাটে খুলনা টাইটান্সকে মূর্ছনায় বাঁধানো বড় লক্ষ্য দিল সিলেট সিক্সার্স। বিপিএলে আজ শনিবারের প্রথম ম্যাচে ৪ উইকেটে ১৯৫ রান করে সিলেট। জবাবে ছোট ছোট লড়াইয়েও হার এড়াতে পারেনি খুলনা। ১৮.১ ওভারে ১৩৭ রানেই গুটিয়ে যায় মাহমুদউল্লার দল। ৫৮ রানের এই জয়ে প্লে-অফের লড়াইয়ে ‘টিকে থাকলো’ সিলেট। ১০ ম্যাচে ৪ জয়ে ছয়ে সিক্সার্স, সমান ম্যাচে ৮ হারে তলানিতেই আছে খুলনা।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে প্রয়োজন বুঝেই বড় শট খেলছিলেন খুলনার দুই ওপেনার ব্রেন্ডন টেলর ও জুনায়েদ সিদ্দিকী। অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে আরেকটি ছক্কার আশায় তাসকিন আহমেদকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সীমানাছোঁয়া দূরত্বে সাব্বির রহমানের হাতে ধরা পড়েন জুনায়েদ। মাত্র ১১ বল খেলে ৪টি চারে ২০ রান থামেন এই ওপেনার। সেই একই পথে ঝড়ো শুরু করা আল-আমিনও টেকেননি বেশিক্ষণ, দুই ছক্কায় ১৬ রানে সোহেল তানভীরের বলে এলবির ফাঁদে ঘটে সেই আশারও অপমৃত্যু। নাজমুল হোসেন শান্ত এলেন আর গেলেন, শিকারী এবার অধিনায়ক অলক কাপালী।
তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া খুলনাকে তখনও টেনে চলছিলেন টেলর। তবে নিতে পারেননি বেশিদূর। নাবিল সামাদের বলে জেসন রয়ের হাতে ধরা পড়ার আগে খেলেন ২৩ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় ৩৪ রানের কার্যকরী ইনিংস। এবারের বিপিএলে এখনও পর্যন্ত একটি ফিফটি ছাড়া উল্লেখ যোগ্য কোন অবদান রাখতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এদিনও ব্যর্থ খুলনা দলপতি। এমন কি দলের বিপদে তার ১৩ বলে ১১ রানের ইনিংসে নেই কোন চার-ছক্কা!
এতদিন ব্যর্থতার বৃত্তে বন্দী থাকা আরিফুল হক লড়লেন প্রাণপন, তবে ২১ বলে ৩ চারে ২৪ রানের ইনিয়সটি কেবল হারের ব্যবধান কমানো ছাড়া আর কোন কাজেই আসেনি। ডেভিড ভিসের দিকে তাকিয়ে তখনও হয়ত আশা দেখছিল খুলনা। তবে হতাশ করেছেন এই দক্ষিণ আফ্রিকান অলরাউন্ডারও। বাকিদের আসা-যাওয়ার মিছিলে ১৩৭ রানেই থামে খুলনার ইনিংস।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে লিটন ও আফিফের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় সিলেট। মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলে শুভাশিস রায়কে ছক্কা হাঁকিয়ে শুরু করেন প্রমোশন পেয়ে ওপেনিংয়ে নামা আফিফ। দ্বিতীয় ওভারে দুটি করে ছক্কা-চারে ২০ রান তুলে নেন লিটন।
পরপর তিন ওভারে দুই ওপেনারের সঙ্গে জেসন রয়কে ফিরিয়ে সিলেটকে বড় একটা ধাক্কা দেন তাইজুল ইসলাম। বাঁহাতি স্পিনারকে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে সীমানায় ধরা পড়েন ২২ বলে ৩৪ রান করা লিটন। ভাঙে ৭.৫ ওভার স্থায়ী ৭১ রানের উদ্বোধনী জুটি। লং অনে ধরা পড়েন ডানহাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান রয়। একই শট খেলার চেষ্টায় লং অনে ধরা পড়েন বাঁহাতি আফিফ। ৩৭ বলে খেলা এই তরুণের ৪৯ রানের ইনিংস গড়া পাঁচটি চার ও দুটি ছক্কায়। রানের জন্য ছটফট করা নিকোলাস পুরান টিকেননি বেশিক্ষণ। জুনাইদ খানের অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে ধরা পড়েন কিপারের গ্লাভসে।
দ্রুত চার উইকেট হারিয়ে দিক হারিয়ে ফেলা সিলেটকে দুইশ রানের কাছে নিয়ে যান সাব্বির ও নওয়াজ। অবিচ্ছিন্ন পঞ্চম উইকেটে ৪২ বলে গড়েন ৮৯ রানের জুটি। মিডল অর্ডারে ফেরা সাব্বির ২৯ বলে চারটি চার ও দুটি ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ৪৪ রান করে। ২১ বলে অপরাজিত ৩৯ রান করেন পাকিস্তানের অলরাউন্ডার নওয়াজ। তাইজুল ৩ উইকেট নেন ৩০ রানে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

সিলেট সিক্সার্স : ২০ ওভারে ১৯৫/৪ (লিটন ৩৪, আফিফ ৪৯, রয় ১, সাব্বির ৪৪*, পুরান ১২, নওয়াজ ৩৯*; শুভাশিষ ৪-০-৪৯-০, ইয়াসির ৩-০-২৭-০, তাইজুল ৪-০-৩০-৩, ভিসে ৪-০-৩২-০, জুনাইদ ৪-০-৪৮-১, মাহমুদউল্লাহ ১-০-৫-০)।

খুলনা টাইটান্স : ১৮.১ ওভারে ১৩৭ (টেলর ৩৪, জুনাইয়েদ ২০, আল-আমিন ১৬, শান্ত ৩, মাহমুদউল্লাহ ১১, আরিফুল ২৪, ভিসে ৫, ইয়াসির শাহ ৮, তাইজুল ৯, জুনাইদ ২ শুভাশিষ ০*; সোহেল ৩-০-১৬-১, এবাদত ৩-০-৩৩-১, তাসকিন ১.১-০-৬-২, নওয়াজ ৪-০-৩৪-১, কাপালী ৩-০-২৫-১, নাবিল ৪-০-২০-৩)।

ফল : সিলেট সিক্সার্স ৫৮ রানে জয়ী।

ম্যাচসেরা : মোহাম্মদ নওয়াজ (সিলেট)।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন