শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

জাতীয় ঐক্যের ডাকে সুবাতাস

চট্টগ্রামে সচেতন নাগরিক মহলের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া , ‘সবার সম্মতি নিয়ে চলার আগ্রহের বহিঃপ্রকাশ’ : প্রফেসর মুহাম্মদ সিকান্দার খান

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ২৭ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

‘এখন আমাদের প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য, বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে’। চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা গত শুক্রবার জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে জাতীয় ঐক্যের এই ডাক দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর এ আহ্বান সময়োচিত এবং অনিশ্চয়তায় ঘুরপাক খাওয়া দেশের রাজনীতির জন্য সুবাতাস হিসেবে দেখছেন বন্দরনগরী চট্টগ্রামের সচেতন রাজনৈতিক মহল। প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ঐক্যের আহ্বানের প্রতি সচেতন নাগরিকদের মাঝে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেকে বলছেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ তথা মহাজোটের নতুন মেয়াদের সরকারের প্রধান হিসেবে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণ রাষ্ট্রনায়ক সুলভ, দূরদর্শী এবং নিঃসন্দেহে বিচক্ষণতার পরিচায়ক।
এ বিষয়ে ইস্ট ডেল্টা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইডিইউ) ভাইস চ্যান্সেলর প্রবীন অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ সিকান্দার খান গতকাল (শনিবার) দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত ভাষণে সবার সম্মতি নিয়ে চলার আগ্রহের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। দেশ ও জাতির স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য যদি শুভ মোড় নেয় তাহলে দলমত নির্বিশেষে সবার সহযোগিতা করতে অসুবিধা কোথায়? তিনি বলেন, একথা ঠিক যে সদ্যসমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বিরোধী দলগুলো স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারছে না। তারা নির্বাচনের সুষ্ঠুতা নিয়ে তাদের বক্তব্য বা মত প্রকাশ করেছে। এখন প্রধানমন্ত্রী বিনয় সহকারে তাদের প্রতি সহযোগিতার আহ্বান রেখেছেন। নির্বাচনী ফলাফল যাই হোক, এবার উচিৎ হবে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানকে সরাসরি নাকচ না করে এবং নেতিবাচক রাজনীতির দিকে না গিয়ে জাতীয় ঐক্যের আহ্বানের প্রতি সাড়া দেয়া। একটা বিষয় সবাই লক্ষ্য করেছেন বিজয় লাভের পরেও বিজয়ী দল (আওয়ামী লীগ) আস্ফালন করেনি বা করছেও না। প্রফেসর সিকান্দার খান বলেন, বিরোধী পক্ষের উচিৎ হবে জাতীয় ঐক্যের আহ্বানে সময়মতো সাড়া দেয়া। কেননা হিংসাত্মক রাজনীতি অথবা পেছন থেকে সমালোচনা করে কোন ফল হবে না।
এদিকে গতকাল বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের সর্বত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণের বিষয়বস্তু ও বক্তব্য নিয়ে বিভিন্নমুখী আলোচনা-পর্যালোচনা করতে দেখা গেছে নানা শ্রেণি-পেশার লোকজনকে। এসব আলাপচারিতায় উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকারের কথাগুলো। যার মধ্যে রয়েছে সর্বক্ষেত্রে স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা, আইনের শাসন নিশ্চিত করা হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সরকারের দৃষ্টিতে দলমত নির্বিশেষে দেশের সকল নাগরিক সমান। আমরা সকলের জন্যই কাজ করবো। তিনি বলেছেন, যারা আমাদের ভোট দিয়েছেন তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আর যারা সমর্থন দেননি তাদের প্রতিও ধন্যবাদ জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সাথে বলেছেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার সরকারের অবস্থান থাকবে জিরো টলারেন্সে। কঠোর আইন প্রয়োগের মাধ্যমে দুর্নীতি উচ্ছেদ করা হবে। মাদক আগ্রাসনের বিরুদ্ধেও সরকারের কড়া অবস্থানের কথা জানিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী।
পুনঃনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এসব বক্তব্য রাজনীতি সচেতন এবং দেশপ্রেমিক সাধারণ জনগণ অত্যন্ত ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছেন। এখানে-সেখানে সাধারণ মানুষের বক্তব্যে ফুটে উঠেছে আশার আলো। তারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় সদিচ্ছা থাকলে এসব ওয়াদা-আশ্বাস ও অবস্থান বাস্তবে রূপায়ন সম্ভব। কেননা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসীন হয়ে আওয়ামী লীগের সরকার দেশের জনগণ এবং বিশেষ করে ভবিষ্যত প্রজন্মের স্বার্থে সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে।
এক্ষেত্রে আপাতদৃষ্টিতে ‘শক্তিশালী’ বিরোধী দল নেই। যা তাদের কর্মসূচি বা কঠোর সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের পথে ‘বাধা’ হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী নতুন সরকারের পথচলা যাদেরকে নিয়ে সূচনা করেছেন নতুন মন্ত্রিসভায় জনগণ আপাতদৃষ্টিতে চমক দেখেছে। প্রবীণ-নবীনের সমন্বয়ে একটি ভারসাম্যপূর্ণ এবং অপেক্ষাকৃত মেধা-প্রজ্ঞাসম্পন্ন সংসদ সদস্য বা নেতৃবৃন্দের মধ্য থেকে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী-উপমন্ত্রী চয়ন করেছেন। তাও আরেক দূরদর্শিতার পরিচায়ক হিসেবে দেখছেন রাজনীতি সচেতন নাগরিকবৃন্দ।
তবে জাতির উদ্দেশে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর এসব দৃঢ় অবস্থান-অঙ্গীকার, ওয়াদা-আশ্বাস যদি বাস্তবে জনগণের সামনে দৃশ্যমান না হয় তাহলে আশাহত হবে গোটা জাতি। অবশ্য নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় থাকা বর্তমান সরকারের পক্ষে ইচ্ছাশক্তি থাকলে শুভ উদ্যোগ ও আশ্বাসসমূহ বাস্তবায়ন কঠিন হবে না। বরং জনগণই সরকারের সদিচ্ছা বাস্তবায়নের পথ মসৃণ করবেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (17)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২৭ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৫৬ এএম says : 0
এদেশে জাতীয় ঐক্যের বিষয়টি হরহামেশাই উচ্চারিত হয়। কিন্তু এই সোনার পাথর বাটি কে পারবে বানাতে?
Total Reply(0)
সাদ বিন জাফর ২৭ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৫৭ এএম says : 0
নির্বাচনের পূর্বে শেখ হাসিনা বলেছিলেন আর ধরপাকড় মামলা হামলা হবে না নির্বাচনে আসুন। সে ওয়াদা আপনি রাখতে পারেন নি এখন কেউ কেন আপনাকে বিশ্বাস করবে।
Total Reply(0)
সত্য হক ২৭ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৫৮ এএম says : 3
বিএনপি জামাত দেশদ্রোহী যুদ্ধাপরাধীরা যেন কোন ঐক্যে না আসতে পারে সে ব্যাপারে সাবধান হতে হবে। নিজেরা ঐকবদ্ধ থাকলেই হবে।
Total Reply(0)
Md. Khairul Islam ২৭ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৫৮ এএম says : 0
ঐক্য চাই না, ক্ষমতায় থাকেন সমস্যা নাই কিন্তু ধর্ষন ও অপরাধ কমানোর চেষ্টা করেন।
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২৭ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৫৯ এএম says : 0
It will be impossible to achieve any unity from the moral ground Hasina is standing at this moment.
Total Reply(0)
ফজলুল হক ২৭ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৫৯ এএম says : 0
‘যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ লড়াই করে যাবো সাড়া ক্ষণ এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি- মিথ্যাকে করে বিদায় এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।’
Total Reply(0)
নুরুল আবছার ২৭ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৫৯ এএম says : 0
ঐক্যের পথ রুদ্ধ করে লোক দেখানো ঐক্যের কথা বলে লাভ কি?
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২৭ জানুয়ারি, ২০১৯, ২:০০ এএম says : 0
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বললেন, আইনের শাসনের কথা। আবার বললেন, দূর্নীতি রোধে সাধারণের অংশ গ্রহণের কথা। কিন্তু আইন যাঁরা প্রয়োগ করবেন তাঁদের কাছেই যদি সাধারন মানুষ হয়রানির স্বীকার হন তবে সাধারন যাবে কার কাছে এর বিচার চাইতে? নিজের চোখে দেখলাম পুলিশ সাধারন নিরীহ মানুষকে কীভাবে জিম্মি করে মিথ্যা গল্প সাজিয়ে কীভাবে উৎকোচ আদায় করে! আমরা সত্যিই নিরাপত্তাহীনতায় শংকিত।
Total Reply(0)
গোপাল বোষ ২৭ জানুয়ারি, ২০১৯, ২:০০ এএম says : 0
সেই দিন কি আর কোনদিন আসবে যেদিন আমরা আবার ৯১, ৯৬ আর ২০০১ সালের মত ভোট দিতে পারব?
Total Reply(0)
NAhmed ২৭ জানুয়ারি, ২০১৯, ২:০০ এএম says : 0
আওয়ামী লীগের জাতীয় ঐক্য হচ্ছে নির্বাচনের আগে তত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের জন্য।
Total Reply(0)
Tanmoy Podder ২৭ জানুয়ারি, ২০১৯, ২:০১ এএম says : 0
বিরোধী দলকে আহবান জানাচ্ছেন মানে? বিরোধী দল তো জাতীয় পার্টি,তারা তো বরাবরই সংসদে আছে। একটু কী স্লিপ অফ টাং হয়ে গেল না? নাকি সত্য কথা মুখ ফুসকে বের হয়ে গেল!
Total Reply(0)
Zunaid Ahmed ২৭ জানুয়ারি, ২০১৯, ২:০২ এএম says : 0
দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী জাতির পিতার সোনার বাংলা।
Total Reply(0)
Rahman mizan ২৭ জানুয়ারি, ২০১৯, ২:০২ এএম says : 0
জাতীয় ঐক্য তখনি হতে পারে যদি জনগণ নিজের ভোট নিজ হাতে দিতে পারে।
Total Reply(0)
MD.ABDUR RAHMAN ২৭ জানুয়ারি, ২০১৯, ২:০২ এএম says : 0
আওয়ামী লীগাররা 'জনরায়' এর ওপর শ্রদ্ধা দেখিয়ে বিএনপিকে শপথ নিতে বলছে, কিন্তু সবাই জানে এটা জনগণের রায় নয়। বিএনপি তথা ধানের শীষের বিজয়ীরা শপথ নিলে বিএনপি জনরায় মেনে নিয়েছে এই প্রচারণা চালাতে ঢোল নিয়ে নামবে আওয়ামী লীঘাররা। ধানের শীষের বিজয়ীরা সংসদে গেলে তাদেরকে সহানুভূতির দৃষ্টিতে দেখবে, সুযোগ পেলেই টিপ্পনি কাটবে। সংসদে ফ্লোর পাওয়াটা হবে স্পিকারের করুণার ব্যাপার। বিএনপিকে আওয়ামী লীগের সহানুভূতি পাওয়া দল আর এর সাংসদরা স্পিকারের করুণাভাজন হতে পারেন না।
Total Reply(0)
muhammad jasim uddin ২৭ জানুয়ারি, ২০১৯, ২:০৩ এএম says : 0
ক্ষমতায় না থেকে ও সার্বজনীন গ্রহন যোগ্যতা অর্জন করেছিলো নেলসন ম্যানডেলা, ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে সার্বজনীন গ্রহন যোগ্যতা অর্জন করতে চাওয়া কল্পনা মাত্র
Total Reply(0)
Mohammed Kowaj Ali khan ২৭ জানুয়ারি, ২০১৯, ৫:৪৮ এএম says : 0
মিত্যা জঘন্য অপরাধ,আর চুরি করিলে হাত কাটার বিদান আর খোন আর গুম, ওরা জাতীয় বেঈমান ওরা বিশ্বের নিকৃস্ট ওদের সাথীরা ও জাতীয় বেঈমান। ওরা ধংস হইবে। ইনশাআল্লাহ।
Total Reply(0)
মো: মোশাদ্দেকুর রহমান ২৭ জানুয়ারি, ২০১৯, ১০:৪০ এএম says : 0
সমগ্র জাতিকে ব্ল্যাকমেইল করে এখন জাতীয় ঐক্যের তকমা ? খেলা রাম খেলে যাও । একদিন এর সঠিক বহি:প্রকাশ ঘটবেই । এখন যারা নিজেদের পাকা খেলোয়ার মনে করছে একদিন তারা নিজেরাই বুঝতে পারবে তাদের অবস্থান কোথায়।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন