শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

স্বাস্থ্যসেবায় ছয় চিকিৎসক পাঁচ লাখ মানুষের জন্য

উলিপুর (কুড়িগ্রাম) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির বেহাল দশা। ৫ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবায় ২৭ জন ডাক্তারের স্থলে কর্মরত রয়েছেন ৬ জন। কাগজে কলমে হাসপাতালটি ৫০ শয্যার হলে ও বাস্তবে চালু রয়েছে ৩২শয্যা। ডাক্তাররা কেউ কর্মস্থলে থাকেন না। গাইনী ডাক্তার দীর্ঘদিন অনুপস্থিত, অপর একজন প্রশিক্ষণে। অন্যরা অনিয়মিত ফলে দুস্থ মানুষের সেবাদানে দেখা দিয়েছে অচলাবস্থা। প্রতিদিন প্রায় ২’শত রোগী চিকিৎসা নিতে আসলেও ডাক্তার না থাকায় উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার, স্যাকমো ও ফার্মাসিস্ট দিয়ে চলছে চিকিৎসা সেবা। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পর ও ডাক্তারদের উপস্থিতির ক্ষেত্রে কোন পরিবর্তন হয়নি।
সরেজমিনে দেখা যায় ডাক্তারের রুম খোলা কিন্ত ডাক্তার থাকেন না। আবাসিক মেডিকেল অফিসার আর এম ওর রুম সব সময় বন্ধ থাকে। ভুক্তভোগী মানুষের অভিযোগ আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রফিকুল ইসলাম তিনি ৯টায় রাউÐ দিয়ে অফিস কক্ষে না বসে এদিক ওদিক সময় কাটিয়ে ১২টার পর তিনি প্রাইভেট ও নিজের প্রতিষ্ঠানে বসে রোগী দেখেন। ফলে প্রতিদিন হাসপাতালের আউটডোরে চিকিৎসা নিতে আসা মানুষ ডাক্তার না পেয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছে।
জানা গেছে, ডা. মাইনুল ইসলাম জুনিয়র মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ও ডা. ফকরুল ইসলাম রংপুর থেকে সময় অসময় আসা যাওয়া করেন। ডা. পারভীন আক্তার গাইনী তিনি ঢাকায় থাকেন মাঝে মধ্যে আসেন। উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডা. সুভাষ চন্দ্র সরকার, ডা. নুরুল হুদা ও ডা. রেদওয়ান কুড়িগ্রাম থেকে যাওয়া আসা করেন। আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রফিকুল ইসলাম স্থানীয় ভাবে হাসপাতাল কোয়ার্টারে থাকলেও তিনি সব সময় নিজস্ব প্রতিষ্ঠানে রোগী নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। গরীব রোগীর অপারেশনের যন্ত্রপাতি, এক্সরে মেশিনসহ সব ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষার ব্যবস্থা থাকলে ও টেকনিশিয়ান ও এনাসথেসিয়া ডাক্তার না থাকায় দীর্ঘ দিন থেকে অপারেশন ও পরীক্ষা নিরীক্ষা বন্ধ রয়েছে।
এছাড়া ওয়ার্ডের পরিস্কার পরিচ্ছনতা, স্যানিটেশন, ময়লাযুক্ত ব্যবহার অযোগ্য বিছানাপত্র ও পরিবেশ এতটা খারাপ যে রোগীরা টিকতে পারে না। তাই বাধ্য হয়ে অনেক রোগী বাড়ী থেকে বিছানাপত্র এনে থাকতে হচ্ছে বলে জানান চিকিৎসা নিতে আসা রোগী খুকি বেগম (৩৫), চাঁদ মিয়া (৫৫), রেজিয়া বেগম (৫০), শেফালী বেগম (৫১)ও শাপলা বেগম (৩৫)। নার্সিং সুপার সহ ২৪ জন নার্স কর্মরত থাকলে ও পুরুষ ওয়ার্ড বয় ও নাইট গার্ড না থাকায় রাতে অনেক সময় মাদকাসক্ত লোকজন এসে তাদের বিরক্ত করেন। ফলে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন বলে অভিযোগ করেন। এদিকে, উপজেলা হাসপাতালে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর ৫৯ জন কর্মচারীর পদ শূন্য সহ ইউনিয়ন ক্লিনিক ও নেদারল্যান্ড কর্তৃক স্থাপিত দুর্গাপুর, পান্ডুল ও দলদলিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেন্টারে লোকবল না থাকায় গ্রামীণ চিকিৎসা ব্যবস্থা একবারে ভেঙ্গে পড়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. মজিবুল আহসান (৫৬) ও আব্দুল আজিজ জানান ডাক্তারদের স্বেচ্ছাচারী ও ব্যবসায়িক মনোভাব ও আন্তরিকতার অভাবে হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থায় নাজুক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছ্ ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডা. সুভাষ চন্দ্র সরকার জানান অধিকাংশ ডাক্তারের পদ ও ৩য় এবং ৪র্থ শ্রেনীর কর্মচারীর পদ শূন্য থাকায় স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন