শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

ঢাকাকে শঙ্কায় রেখে শেষ চারে চিটাগং

স্পোটস রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে | প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০২ এএম

ক্যামেরন ডেলপোর্ট, মুশফিকুর রহিমের দারুণ ব্যাটিংয়ে শক্ত পূঁজি পেয়েছিল চিটাগং ভাইকিংস। সেই পূঁজি টপকাতে শেষ পর্যন্ত লড়েছেন আন্দ্রে রাসেল, সাকিব আল হাসানরা। তবে দিনটি যে স্বাগতিকদের! ভাইকিংস বোলাররা সেই লড়াই থামিয়ে তুলে নিয়েছেন ১১ রানের রোমাঞ্চকর জয়। এই নিয়ে ১১ ম্যাচ থেকে সাত জয়ে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে শেষ চার নিশ্চিত হয়ে গেছে মুশফিকের দলের। এর আগে সমান ১৪ পয়েন্ট নিয়ে শেষ চার নিশ্চিত করেছে রংপুর রাইডার্স ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সও। তবে ১০ খেলায় ১০ পয়েন্ট নিয়ে এখনো শঙ্কায় আছে সাকিবের ঢাকা।
গতকাল চট্টগ্রাম পর্বের শেষ দিনে মুখোমুখি হয়েছিল শুরুতে জেতার পর টানা হারতে থাকা দুই দল। আগে ব্যাট করে ১৭৪ রান জড়ো করে চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করায় ভাইকিংস। ওই রান তাড়া করতে যেয়ে পুরো ২০ ওভার খেলে ১৬৩ রানে থামে ৯ উইকেট হারানো ঢাকা। শেষ দুই ওভারে জিততে ঢাকার দরকার ছিল ২৬ রান। ১৯তম ওভারের প্রথম বলে চার মেরে ফিফটি করে সাকিব দেখাচ্ছিলেন আশা। কিন্তু দাসুন শানাকার পরের বলেই ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। শেষ হয়ে যায় ঢাকার সব আশাও। ঢাকার টেল এন্ডার পরে আর পারেনি অভাবনীয় কিছু করে দেখাতে। ভাইকিংসকে জেতাতে দারুণ বল করে আবু জায়েদ রাহি ২৫ রানে নেন ৩ উইকেট। শেষ দিকে অসামান্য বল করেছেন দাসুন শানাকাও। ব্যাট হাতে দুর্দান্ত করা ডেলপোর্টও বল হাতে রেখেছেন অবদান, অফ স্পিনার নাঈম হাসানের কাছ থেকেও মুন্সিয়ানা পেয়েছেন মুশফিকের দল।
টানা হারের মধ্যে থাকা ঢাকা এই ম্যাচে নেমেছিল শঙ্কা মাথায় নিয়ে। চিটাগং ১৭৫ রানের শক্ত চ্যালেঞ্জ দিয়ে দেওয়ায় তুমুল লড়াইয়ের আভাস ছিল মাঝ বিরতিতেই। সে লক্ষ্যে নেমে শুরুটা ভুলে যাওয়ার মতো হয় ঢাকার। ২৩ রানের মধ্যেই ধস নামে টপ অর্ডারে। ফিরে যান সুনিল নারাইন, রনি তালুকদার, মিজানুর রহমানরা। সাকিবের সঙ্গে মাঝারি এক জুটির পর ফেরেন নুরুল হাসান সোহান। ক্রিজে এসেই সাকিবের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝি কেড়ে নেয় কাইরন পোলার্ডকে।
এরপর সাকিবের সঙ্গে যোগ দিয়ে পরিস্থিতি বদলান রাসেল। ডেলপোর্টের বলে আউট হয়ে গিয়েছিলেন ২২ রানে। কিন্তু ‘নো’ বলের কারণে বেঁচে যান তিনি। এরপর চালিয়েছেন কিছুক্ষণ, ম্যাচ এনেছেন দলের আরও নাগালে। কিন্তু ম্যাচ শেষ করে যেতে পারেননি। ২৩ বলে ৩৯ করে শানাকার বলে বাউন্ডারি লাইনে সেই ডেলপোর্টের হাতেই ধরা পড়েন রাসেল। তখনো ঢাকার জিততে দরকার ৩৫ রান। ভরসা ছিলেন সাকিব। সাকিবও তীরে তরি ভেড়াতে না পারায় শঙ্কা নিয়ে মাঠ ছেড়েছে টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিটরা।
এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ঝড়ো শুরু পেয়েছিল চিটাগং। মোহাম্মদ শাহজাদ আবারও ক্ষ্যাপাটে ব্যাট চালিয়ে বাড়াচ্ছিলেন রান। তবে পাওয়ার প্লে পুরো কাজে লাগাতে পারেননি, সুনীল নারাইনের বলে অতিরিক্ত পেটাতে গিয়ে স্টাম্পিং হয়ে ফেরেন।
দ্বিতীয় উইকেটে ইয়াসির আলির সঙ্গে আরেক জুটি গড়েন ডেলপোর্ট। ইয়াসির ফেরার পর মুশফিকের সঙ্গে জমে উঠে ডেলপোর্টের জুটি। দুজনের আগ্রাসী ব্যাটে উড়ন্ত অবস্থায় চলে যায় চিটাগং। ৭৯ রানের জুটির পর একদম শেষ ওভারে গিয়ে বিপর্যন্ত। আন্দ্রে রাসেলের টানা তিন বলে ফেরেন মুশফিক, ডেলপোর্ট, আর লঙ্কান দাসুন শানাকা। রাসেল হ্যাটট্রিক করে বসলেও ভাইকিংসের রানটা ১৭০ ছাড়িয়েছে ঠিকই। সেই রান ডিফেন্ড করার মতো তাগদও পরে দেখিয়েছে তারা।
বিপিএলের চলতি আসরে এটি তৃতীয় হ্যাটট্রিক। এর আগে মিরপুরে ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে রংপুর রাইডার্সের স্পিনার আলিস আল ইসলাম এবং খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষে এই সাগরিকায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের পাকিস্তানী পেসার ওয়াহাব রিয়াজ করেন হ্যাটট্রিক। অথচ এর আগের পাঁচটি আসর মিলিয়ে হ্যাটট্রিক হয়েছে মাত্র দুইটি। টুর্নামেন্টে এখনও বাকি রয়েছে ১৩টি ম্যাচ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
চিটাগং ভাইকিংস : ২০ ওভারে ১৭৪/৫ (শাহজাদ ২১, ডেলপোর্ট ৭১, ইয়াসির ১৯, মুশফিক ৪৩, শানাকা ০, রাজা ৬*, মোসাদ্দেক ১*; বার্চ ৪-০-৩৫-০, রাসেল ৪-০-৩৮-৩, সাকিব ৩-০-২৪-০, নারাইন ৪-০-২০-২, রুবেল ৪-০-৪০-০, মাহমুদুল ১-০-৮-০)।
ঢাকা ডায়নামাইটস : ২০ ওভারে ১৬৩/৯ (মিজানুর ১১, নারাইন ০, রনি ৬, সাকিব, নুরুল ৩৩, পোলার্ড ০, রাসেল ৩৯, শুভাগত ৫, বার্চ ৭*, মাহমুদুল ২, রুবলে ০*; আবু জায়েদ ৪-০-২৫-৩, খালেদ ৪-০-৩৫-০, নাঈম ৪-০-৩৭-১, ডেলপোর্ট ৪-০-৩১-১, শানাকা ৪-০-৩৪-২)।
ফল : চিটাগং ভাইকিংস ১১ রানে জয়ী।
ম্যাচসেরা : ক্যামেরন ডেলপোর্ট (চিটাগং)।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (9)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ৩১ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩০ এএম says : 0
কারা যে দায়িত্বে আছেন! দল না জিতলেও ম্যান অব দ্য ম্যাচ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া যায়, এই তথ্য বা তত্ত্ব স্পোর্টসে নতুন নয়। আজ অ্যান্ড্রু রাসেলের পার্ফম্যান্স সর্বোতভাবে "man of the match" এর দাবিদার ছিলো। হ্যাট্রিক প্রতিদিন হয় না,মাসেও হয় না, এমনকিও বছরেও না হতে পারে, তার উপর ব্যাটিংয়েও সে ছিলো সমুজ্জ্বল। দল হারলেও এই অবস্থায় ইন্টারন্যাশনাল ভুরি ভুরি ম্যাচে ম্যাচসেরার পুরষ্কার পেয়েছে প্লেয়াররা।
Total Reply(0)
Saurav Mandal ৩১ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩১ এএম says : 0
১ মিনিট নীরবতা তাদের জন্য যারা ভেবেছিল আশরাফুলকে একাদশে না রাখায় চিটাগাং প্লে অফ এ উঠতে পারবে না
Total Reply(0)
Md Imran Khan ৩১ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩১ এএম says : 0
বাইচ্ছা গেলা মামুরা,,,?? আরার চিটাইংগা মান সম্মানন রাখিস মুশফিক ভাই....!!
Total Reply(0)
মাহমুদুল হাসান ৩১ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩১ এএম says : 0
মুশফিকের তুলনা শুধুই মুশফিক, অসাধারণ ব্যাটিং ও দারুন ক্যাপটেন্সিতে চিটাগংকে প্লে অফ তুলল, আজকের ব্যাটিংটা সত্যই উপভোগ্য ছিল। ভালবাসা অবিরাম প্রিয় মুশি ❤❤❤
Total Reply(0)
Arman Kaysar ৩১ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩২ এএম says : 0
মুশফিক অন্য লেভেলের ভালোবাসা। শুভ কামনা মুশফিক এর জন্য।
Total Reply(0)
Nasir S Hridoy ৩১ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩২ এএম says : 0
ঢাকার দেশী খেলোয়াড় গুলা দেখলেই মনে হয় কেমন জানি মনে হয় শরিলে শক্তি নাই, মাঝে মাঝে মনে হয় ওগো থেকে আমি ভালো খেলা পারি।
Total Reply(0)
মিসবাহ্ উদ্দীন মিশু ৩১ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৩ এএম says : 0
হারতেছে ঢাকা, দেখতেছে দেশ ।শেষ ৬ ম্যাচে ৫ হার ঢাকার
Total Reply(0)
Muhammad Faruk Hossain ৩১ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৩ এএম says : 0
আশরাফুল যদি বেকার হয়,জাতীয় দলের সবগুলাই বেকার বেকার। কারণ জাতীয় দলের কোন প্লেয়ারই প্রথম ২ম্যাচে ১০-২০ রান ও করতে পারেনাই। আশরাফুল তাদের চেয়ে অনেক ভালো খেলেছে।
Total Reply(0)
S M Puspo ৩১ জানুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৩ এএম says : 0
Congratulations
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন