বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

মোবাইলে শেয়ার লেনদেনে সাড়া মিলছে না উভয় বাজারে সূচকের পতন

প্রকাশের সময় : ১৩ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : পুঁজিবাজারে গতি ফিরাতে এবং বিনিয়োগকারীদের সুবিধার্থে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) মোবাইলে শেয়ার লেনদেন কার্যক্রম চালু করেছে। এ ব্যবস্থা চালুর ইতোমধ্যে দুই মাস পার হলেও এ পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশন করেছেন মাত্র ২ হাজারের মতো বিনিয়োগকারীররা। আর লেনদেন করেছেন মাত্র ৫৫০ জন। ফলে বাজারে গতি ফেরাতে এই ব্যবস্থা চালু হলেও তাতে বিনিয়োগকারীদের সাড়া মিলছে না বলে না মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, চলতি বছর ৬ মার্চ মোবাইল ফোনে লেনদেনের কার্যক্রম শুরু করে ডিএসই। প্রায় দুই মাসে মোবাইল লেনদেনের জন্য ডিএসই ইনভেস্টর মাত্র ৩৭৭ জন, মোবাইল ট্রেডার (সরাসরি যেসব বিনিয়োগকারী শেয়ার লেনদেন করেছে) মাত্র ৪৭২ জন এবং ডিএসই মোবাইল ভিআইপি ৬৭৮ জন। তাদের মধ্যে এ পর্যন্ত লগ ইন করেছে মাত্র ৩০৬ জন। প্রায় ৩৩ লাখ বিনিয়োগকারীর মধ্যে এ পর্যন্ত যারা মোবাইল লেনদেনে যুক্ত হয়েছে তা খুবই সামান্য বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে মোবাইল লেনদেন সুবিধা চালুর সময় ডিএসইর পক্ষ থেকে জানানো হয়, প্রথম পর্যায়ে মাত্র এক লাখ বিনিয়োগকারীকে এ সুবিধা দেবে ডিএসই। এই সুবিধা পেতে হলে বিনিয়োগকারীকে ব্রোকারেজ হাউজের মাধ্যমে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড নিতে হবে। একজন বিনিয়োগকারী বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে মোবাইলের মাধ্যমে শেয়ার কেনাবেচা করতে পারবেন।
ডিএসই জানায়, ব্রোকারেজ হাউজের চাহিদা মোতাবেক ব্যবহারকারীর সংখ্যা পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি করা হবে। তারা ইচ্ছে মত গ্রাহকদের এই সুবিধা দিতে পারবে। প্রথম পর্যায়ে এর কোনো ফি নির্ধারণ করা হয়নি। তবে পরে ফি নির্ধারণ করা হবে বলে জানানো হয়।
জানা গেছে, ডিএসই-মোবাইল নামে যে লেনদেন প্রক্রিয়া ডিএসই চালু করেছে তা তিন ধরনের সংস্করণ রয়েছে। এর মধ্যে একটি ব্রোকার হাউজগুলোর জন্য এবং বাকি দুটি বিনিয়োগকারীদের জন্য রাখা হয়েছে। বিনিয়োগকারীরা যে দুটি ভার্সন ব্যবহার করতে পারবেন তার মধ্যে একটি হচ্ছে ডিএসই-মোবাইল ভিআইপি। এটি দিয়ে সরাসরি ট্রেড করা যাবে না। বিনিয়োগকারী মোবাইলে শুধু তার পোর্টফোলিও দেখতে পারবে। অন্যটি হচ্ছে ডিএসই-মোবাইল ট্রেডার। এই ভার্সন ব্যবহার করে বিনিয়োগকারী নিজে ট্রেড করতে পারবেন।
তবে, কোনো বিনিয়োগকারী বাজার দরের চেয়ে বেশি দামে ট্রেড অফার করলে ব্রোকারেজ হাউজের ট্রেডার সেই আদেশ বাতিল করতে পারেন। কিন্তু বাজার দরে আদেশ দিলে তা বাতিল করার ক্ষমতা ট্রেডারের থাকে না।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাজারে গতি ফিরানোর লক্ষ্যেই ঢাক-ঢোল পিটিয়ে জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ডিএসই মোবাইল লেনদেন চালু করেছে। অথচ বিভিন্ন ইস্যুতে দিন দিন বাজারে অস্থিরতা বাড়ছে। যদিও এক্সপোজার লিমিট ইস্যু সমাধানের পর সামান্য ইতিবাচক ধারা বাজারে লক্ষ্য করা গেছে। তবে মোবাইল লেনদেনে উল্লেখযোগ্য সাড়া মেলিনি বলে মনে করছেন তারা।
ডিএসইর সদস্য একাধিক ব্রোকারেজ হাউজের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, এখনও পর্যন্ত সব ব্রোকারেজ হাউজে মোবাইল লেনদেন চালু হয়নি। হাতে গোনা কয়েকটি হাউজে মোবাইল লেনদেন চালু করা হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের তেমন সাড়া না পাওয়ায় ব্রোকার হাউজগুলোও মোবাইল লেনদেন নিয়ে আগ্রহ নেই।
উভয় শেয়ারবাজারে সূচক ও লেনদেনের পতন
বুধবারের তুলনায় বৃহস্পতিবার দেশের উভয় শেয়ারবাজারে মূল্যসূচক ও লেনদেনের পতন হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) দুটির ওয়েবসাইট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১৯ দশমিক ৮০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪২৯৮.৬৫ পয়েন্ট। বুধবার এ সূচক কমেছিল ১১.৮৭ পয়েন্ট। এদিন লেনদেন হওয়া ৩০৯টি ইস্যুর মধ্যে দর বেড়েছে ১০৬টির, কমেছে ১৫৭টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৬টির দর।
এদিকে ডিএসইতে ৩১১ কোটি ২৯ লাখ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়েছে, যা বুধবার হয়েছিল ৩২২ কোটি ২ লাখ টাকা। অর্থাৎ লেনদেনের পরিমাণ কমেছে ১০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।
ডিএসইতে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে লিন্ডে বাংলাদেশের শেয়ার। এ কোম্পানির ২১ কোটি ৫৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেনের দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইউনাইটেড পাওয়ারের ১২ কোটি ৯৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১১ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বিএসআরএম লিমিটেড।
লেনদেনে এরপর রয়েছে এমজেএলবিডি, বিএসআরএম স্টিল, বিএসসি, ডরিন পাওয়ার, ফারইস্ট নিটিং, অলিম্পক ইন্ডাস্ট্রিজ, শাহজিবাজার পাওয়ার।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইতে বৃহস্পতিবারের লেনদেনে সিএসসিএক্স মূল্যসূচক ৩১ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট কমে ৮০৩৯ দশমিক ৮৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আগের দিন এ সূচক কমেছিল ১৭ পয়েন্ট। এদিন সিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১৬ কোটি ৭৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট। যার পরিমাণ আগের দিন ছিল ১৮ কোটি ২৮ লাখ টাকা। লেনদেন হওয়া ২৩৯টি ইস্যুর মধ্যে দর বেড়েছে ৮২টির, কমেছে ১১৯টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৮টির।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন