শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

হিজাবিদের একত্রিত করতে বাংলাদেশির প্রয়াস

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৫:০৩ পিএম

নিউইয়র্কের ব্রোক্সে বেড়ে ওঠা হিজাবি নারী নাজমা খান অল্প বয়স থেকেই ধর্মীয় বৈষম্যের সঙ্গে খুব বেশি পরিচিত। বাংলাদেশ বংশোদ্ভূত নাজমা খান ১১ বছর বয়সে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হন। তিনি হাই স্কুল ও কলেজ জীবনে ক্রমাগতভাবে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের মারাত্মক হামলার পর এই উৎপীড়ন নতুন আরেকটি স্তরে পৌঁছায়। তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন রাস্তায় হাঁটার সময় আমাকে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হতো। সন্ত্রাসী, ওসামা বিন লাদেন ইত্যাদি আখ্যা দিয়ে আমাকে পেছন থেকে ধাওয়া করা হতো, শরীরের ওপর থুতু ফেলত, পুরুষেরা চারপাশ থেকে ঘিরে ধরত।’
হিজাবের কারণে একই ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হওয়া অন্যান্য মুসলিম নারীদেরকে একত্রিত করতে নাজমা খান তাদের বৈষম্যমূলক আচরণের অভিজ্ঞতা সামাজিক মিডিয়ায় শেয়ার করার আহ্বান জানান।
৩৫ বছর বয়সী নাজমা খান বলেন, ‘তাদের শেয়ার করা গল্পগুলো পড়ার সময় নিজের সংগ্রামের দৃশ্য আমি আমার বোনদের মধ্যে দেখতে পাই।’ এসব ঘটনা তাকে খুব বেশি আহত করে। এরপর তিনি ‘বিশ্ব হিজাব দিবস’ চালু করার সিদ্ধান্ত নেন।
প্রতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি তারিখে নাজমা খানের অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ‘ডাব্লুউএইচডি’ বিশ্বব্যাপী মুসলিম নারীদের সঙ্গে সংহতির একদিনের জন্য হিজাব পরিধান করার জন্য সকল ধর্ম, বর্ণ, পটভূমি এবং জাতি গোষ্ঠীর নারীদেরকে আমন্ত্রণ জানায়।
‘বিশ্ব হিজাব দিবস’ এর আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ‘১ ফেব্রুয়ারি তারিখে একদিনের জন্য আমার সঙ্গে তালমিলিয়ে হাঁটতে থাকা নারীরা দেখতে পাবেন যে আমি তাদের থেকে আলাদা নই।’ তিনি বলেন, ‘এই একদিনের অভিজ্ঞতার মাধ্যমে সম্ভবত তারা হিজাবের আলাদা আলো দেখতে পাবেন।’
২০১৩ সালে ‘বিশ্ব হিজাব দিবস’ শুরু হওয়ার পর থেকে এপর্যন্ত ৪৫টিরও বেশি দেশের ৭০ জন রাষ্ট্রদূত এতে জড়িত হয়েছেন এবং প্রায় ১৯০টি দেশের নারীরা বার্ষিক এই ইভেন্টে অংশ নেয়। এদের মধ্যে রয়েছেন ব্রিটিশ খ্রিস্টান নারী এলি লয়েড ও তার ১১ বছর বয়সী মেয়েও। এলি লয়েড বর্তমানে কাতারে ডাব্লুউএইচডি’র একজন দূতের দায়িত্ব পালন করছেন।
এলি লয়েড বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি নারীদের মাথায় হিজাব পরিধানের পছন্দের বিষয়টি সব ধরনের পক্ষপাতিত্ব এবং বৈষম্য মুক্ত হওয়া উচিত।’
যুক্তরাজ্যে কর্মরত চেক বংশোদ্ভূত মিরোস্লাভাকে হিজাব পরিধানের জন্য তাকে ‘দুশ্চরিত্রা’, ‘আইএস’ উপাধি দিয়ে তাকে মৃত্যুর হুমকি দেয়া হয়। চার বছর আগে হিজাব পরা শুরু করার পর থেকে তাকে বিভিন্নভাবে অবমাননাকর শ্লীলতাহানির শিকার হতে হয়েছে।
১ ফেব্রুয়ারি তারিখে দিন উৎযাপনের অংশ হিসেবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হ্যাসট্যাগ দিয়ে বিশ্বজুড়ে নারীরা তাদের হিজাব পরিধানের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে থাকেন। সূত্র: আল জাজিরা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন