শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

খালেদা জিয়ার কারাজীবনের ১ বছর

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দৃষ্টিতে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

এক বছর আগে, বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রধান খালেদা জিয়াকে জেলে পাঠানো হয়। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়াকে অভিযুক্ত করে শাস্তি দেয়া হয়েছে। ওই সময় আদালত তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিনের মামলাগুলোতে ব্যবস্থা নিয়েছে। মামলাগুলোর অন্তর্নিহিত যোগ্যতার (আন্ডারলাইং মেরিটস) বিষয়ে কোনো অবস্থান নেয়নি হিউম্যান রাইটস ওয়াচ। খালেদা জিয়ার সমর্থকরা দাবি করেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ২০০৭-২০০৮ সালে সেনা সমর্থিক সরকার যে দুর্নীতির মামলা করেছিল, তারাই খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলাগুলো করে। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সব মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
২০১৮ সালের নির্বাচনকে সামনে রেখে বিরোধী দলীয় সদস্য অথবা শুধু সরকারের সমালোচনাকারীকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে গ্রেপ্তার একটি সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ওই বিষয়টিই শেখ হাসিনাকে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় এনেছে। সরকারি ফলাফলে দেখা যায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেসব আসনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা হয়েছে তার মধ্যে শতকরা ৯৫ ভাগেরও বেশি আসনে জয়ী হয়েছে ক্ষমতাসীন দল।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের “ক্রিয়েটিং প্যানিক: বাংলাদেশ ইলেকশন ক্র্যাকডাউন অন পলিটিক্যাল অপোনেন্টস এন্ড ক্রিটিকস” শীর্ষক এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে নির্বাচনের আগের মাসগুলোতে বিরোধী দলগুলোর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকার পর্যায়ক্রমে প্রচন্ড আক্রমণ হেনেছে (সিস্টেমেটিক অন¯øট) বলে বর্ণনা করা হয়েছে। বিএনপি বলেছে, তাদের দলের সদস্য ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে তিন লাখেরও বেশি ফৌজদারি মামলা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। গ্রেপ্তার করেছে কয়েক হাজার সদস্য ও সমর্থককে। বিরোধী দলগুলোর জোট ঐক্যফ্রন্ট রিপোর্ট করেছে যে, তাদের ৮ হাজার দুই’র বেশি সদস্য ও সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অনেক মামলায় যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা ভিত্তিহীন। এমন অনেক মামলাকে ‘ভৌতিক মামলা’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। এসব মামলায় অপরাধ সংঘটনের যে বর্ণনা দেয়া হয়েছে সেই সময়ে অভিযুক্তদের কেউ কেউ মৃত, বিদেশে অথবা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় আবু তাহেরের কথা। তিনি এক সময় বিএনপির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ২০১০ সালে তিনি ক্যান্সারে মারা গেছেন। কিন্তু ২০১৮ সালের ১২ ডিসেম্বর তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগ আনা হয়। তাকে অভিযুক্ত করা হয় যে, তিনি বেআইনিভাবে সমাবেশ করেছেন এবং আওয়ামী লীগের যুব শাখা যুবলীগের একজন সদস্যকে আগের দিন (১১ ডিসেম্বর, ২০১৮) হত্যা করেছেন।
নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বড় দুই দলের (আওয়ামী লীগ ও বিএনপি) নেতাকর্মীরাই সহিংসতায় যুক্ত ছিলেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ পক্ষপাতহীনভাবে তাতে সাড়া দেয় নি। পুলিশ বিরোধীদলের সদস্যদের গ্রেপ্তার ও আটক করেছে। কিন্তু নিরাপত্তারক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য এবং ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক যারা বিরোধী দলীয় প্রার্থী ও সদস্যদের টার্গেট করেছিল, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ঘটনা বিরল।
নির্বাচনী অনিয়মের অভিযোগ তদন্তের পরিবর্তে, কর্তৃপক্ষ নির্বাচনে জালিয়াতির রিপোর্টিংয়ের জন্য সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার করেছে। গুরুত্বর অভিযোগগুলোকে দ্রুততার সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করেছে সরকার ও নির্বাচন কমিশন। তারা নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু বলে অভিহিত করেছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে যেসব গুরুত্বর অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে তার নিরপেক্ষ ও পক্ষপাতিত্বহীন তদন্তের সুপারিশ করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অন্যরা। এসব সুপারিশ গ্রহণ করা উচিত নির্বাচন কমিশন ও সরকারের।
(ব্রাড এডামস আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিষয়ক পরিচালক। তার এ লেখাটি সংগঠনটির নিজস্ব ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (19)
Moazzma H ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:০৯ এএম says : 0
বাংলাদেশে যারা আইনের শাসনের পক্ষপাতী তাদের জন্য একটা মাইলফলক দিন আজ যে সমস্ত কাগুজে হুঙ্কার উপেক্ষা করে একজন প্রভাবশালীর দন্ড অটুট রয়েছে । দুর্নীতি ও সরকারি সন্ত্রাস বিরোধী দিন হিসেবে সপ্তর্ষি হয়ে থাকবে বাংলার আকাশে। উচ্চ-নিম্ন আদালতের ধারাবাহিকতা বজায় আছে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সময়উপযোগী নজরদারিতে কেও নিজের হাতে আইন তুলে নিতে পারে নি, একাদশ নির্বাচনে বিএনপি বেগম খালেদার মুক্তিকে ইশতেহার করেছিল, যা জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে । এক বছর কাটিয়েছেন বেগম খালেদা কয়েদিবাস, আরও ১৬ বছর । বিএনপি বিএনপি করে যারা রোনাজারি করছেন, তাদের বুঝতে হবে দুই দশক আগে বিএনপির জনপ্রিয়তা ৩০% ছিল, এখন তা প্রায় শূন্যের কোঠায়। এখনো কিছু নেতা প্রজাতি এখানে আছে, গনমাধ্যমে যাদের পরিচিতি আছে, তারা সংবাদ সম্মেলন আর টক্ শোর বিনোদন করে বেড়ায়, তবে তৃণমূলে কোন কর্মী নেই । খালেদা পরিবারের বেঁচে থাকা ছাড়া যাদের আর কোনো কর্মসূচি নেই, জনগন সেই বিএনপির তোয়াক্কা করে না । জাতীয়তাবাদী দল হিসেবে দাবি করে যারা আধিপত্যবাদী ভারতের কাছে ক্ষমা ভিক্ষা করে, তাদেরকে জনগণ ঘৃণার চোখে দেখে । মুমূর্ষু বিএনপিকে কোরামিন দিলেও কল্পজগতের ফিনিক্স পাখি হবে না ওটা আর হবে না, আর বিএন্পিকে মৃতসঞ্জীবনী সুধা দেয়ার কোন গরজ জনগণের নেই । বিএনপির সহজাত বিনাশ হলে দেশে একটা সত্যিকার জাতীয়তাবাদ সমৃদ্ধ বিরোধী দল উত্থানের সুজুগ হবে । আমরা সেই পাঞ্জেরীদের অপেক্ষায় আছি ।
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:০৯ এএম says : 2
আর যাই করুক উনি কোন রাতের ভোটে ক্ষমতায় আসেন নাই।
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:০৯ এএম says : 0
মরলেও বিএনপি বাঁচলেও বিএনপি।
Total Reply(0)
আশফিক ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:১০ এএম says : 0
বিএনপি ফেসবুকে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবে।
Total Reply(0)
mohammad rahman ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:১০ এএম says : 0
সরকার চাইছে খালেদ;া বিদেশ চলে যাক কিংবা নিজের দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চাক - সেটি হলে বিএনপি নামক দলটির রাজনীতি শেষ ! আর খালেদা যদি জেলে থেকে সরকারের সাথে আপোষ না করে মৃত্যুবরন করেন বিএনপির রাজনীতিতে জিয়ার মত আর একটি আবেগ সৃষটি হবে -- বাংলাদেশের মানুষের কাছে রাজনীতি আবেগের উপর প্রতিষঠা না করলে টিকে রাখা মুষকীল
Total Reply(0)
Nazim ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:১১ এএম says : 0
......... কিন্তু দেশে-বিদেশে তেমন কোনো প্রতিক্রিয়া না হওয়ায় ......... মনে হয় জনগন রাজনিতিবিদদের প্রতি বিরক্ত। আর তাই চায়ের কাপে শুধু ঝড় ই ওঠে- বাস্তবে কেউ মাঠে নামে না।
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:১১ এএম says : 0
একবছরে একটা নেতাও পথে নামে নাই। একটা সমর্থকও বিক্ষোভ করে নাই। দেখা যাক ঈদের পর কোন আন্দোলন হয় কি না।
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:১৩ এএম says : 0
ধন্যবাদ হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে বাস্তব চিত্র তুলে ধরার জন্য। আসলে খালেদা জিয়ার শেখ হাসিনার রোষণালের শিকার হয়ে এক বাছর কারাবাস পার করলেন। কিছু করার নেই।
Total Reply(0)
AS Sakib ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:১৩ এএম says : 0
"খালেদা জিয়াহীন বিএনপি কেমন হতে পারে, তা এই মুহূর্তে সহজে অনুমান করা যাচ্ছে।..."
Total Reply(0)
Ikram Sadiq ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:১৩ এএম says : 0
BNP will Rest in Peace.
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:১৩ এএম says : 0
The question what BNP will do regarding Begum Zia is irrelevant. The question that must be asked what AL will do regarding historical judgement hanging over them.
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:১৫ এএম says : 0
সাবেক প্রধানমন্ত্রী কে এভাবে কারাগারে আটক রাখা মোটেও ভালো রাজনীতির । আর আওয়ামী লীগ চায় বিএনপি আন্দোলন করুক ? এই আন্দোলন বলতে কি বুঝায়??? মারামারি, আইন শৃঙ্খলা লঙ্ঘন ??? পেশিশক্তি দিয়ে প্রশাসন ও আওয়ামী লীগের সাথে রক্তারক্তি????
Total Reply(0)
Ali Akbar ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:১৫ এএম says : 0
এরশাদ যখন পদত্যাগ করলো তখন উনার বাসায় পাওয়া যায় ১০০ কোটি টাকা। উনি এখন দিব্যি হাওয়া লাগিয়ে চলছে।
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:১৫ এএম says : 0
বয়স বিবেচনায় উনাকে খালাস দেয়া উচিত।
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:১৫ এএম says : 0
উনি দেশের জন্য অনেক ভালো কাজ করেছেন, মেয়েদের বিনা মুল্যে শিক্ষা এর অন্যতম।
Total Reply(0)
মোঃ বেলায়েত হোসেন ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:১৬ এএম says : 0
টাকা চুরি হয়নি, কোন ব্যতয় থাকলে কোর্ট জরিমানা করে বিষয়টি নিস্পত্তি করতে পারতো।
Total Reply(0)
Sheikh Fazlur Rahman ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:১৭ এএম says : 1
৫০ লাখের অধিক প্রত্যেক প্রবাসী একসাথে বলবো, আপসহীন নেত্রীর মুক্তি, রাষ্ট্রীয় নির্যাতন বন্ধে এবং সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন না দেওয়া পযর্ন্ত বাংলাদেশে কোন রেমিটেন্স পাঠাবো না। কারণ যে টাকা প্রবাসীরা কষ্ট করে দেশে পাঠায় তার চেয়ে টাকা আওয়ামীলীগের দেশিও প্রবাসীরা বিদেশে রেমিটেন্স পাঠায়।
Total Reply(0)
Nur Alam ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:১৭ এএম says : 0
কোথায় মানব অধিকার?
Total Reply(0)
Hasan Kamrul ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:১৭ এএম says : 1
আওয়ামী লীগের ঋণ অনেক হয়ে গেছে, দুঃখ লাগে পরিশোধ করতে গেলে দলটার করুন দষা হবে।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন