মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ভেজালবিরোধী অভিযানের নামে ব্যবসায়ীদের হয়রানির অভিযোগ

প্রকাশের সময় : ১৪ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : ভেজালবিরোধী অভিযানের নামে ব্যবসায়ীদের হয়রানি করা হচ্ছে এমন অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ সুপারশপ ওনার্স এসোসিয়েশন। সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অত্যন্ত মানসম্পন্ন সুপারশপ ও ফাস্টফুডের দোকান রয়েছে। যেমনথÑ আগোরা, মীনাবাজার, স্বপ্ন, কুপার্স ইত্যাদি। এগুলো ইতোমধ্যে ভোক্তা-ক্রেতাদের আস্থা অর্জন করেছে। এসব সুপারশপ ও ফাস্টফুডের দোকানে প্রতিটি পণ্যের গুণগতমান কঠোরভাবে রক্ষা করে তা ভোক্তা-ক্রেতাদের হাতে তুলে দেয়া হয়। এসব সুপারশপে যারা কেনাকাটা করেন তারা সবাই সমাজের অত্যন্ত সচেতন সুধীজন। তাদের পক্ষ থেকে কখনো কোন পণ্যের গুনগতমান নিয়ে অভিযোগ ওঠেনি। তারপরও হঠাৎ করেই ভেজালবিরোধী অভিযানের নামে মোবাইল কোর্ট এসে মেয়াদোত্তীর্ণ ও পচাবাসী খাবার রাখার দায়ে অহেতুক জেল-জরিমানা করা হয়। এ নিয়ে তাদের সামনে কোন প্রমাণ বা যুক্তি উপস্থাপনেরও সুযোগ থাকে না। তাদের কর্মকা-ে মনে হয়, একটা উদ্দেশ্য নিয়েই বা কারো কোন প্রতিহিংসা বাস্তবায়নের জন্যই হয়তো এ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ সুপারশপ ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাকির হোসেন বলেন, ভেজালবিরোধী অভিযানের পক্ষে আমরা সব সময় ছিলাম এখনো আছি। আমাদের দাবীর প্রেক্ষিতে খাদ্যে মেয়াদোত্তীর্ণ স্টিকার বা তারিখ দেয়ার প্রচলন হয়েছে। আমরা চাই মানসম্পন্ন খাবার ক্রেতাদের হাতে তুলে দিতে। আমি বিক্রেতা যেমন তেমনি একজন ক্রেতাও। আমাদের ছেলে-মেয়ে পরিবারের লোকজনও এসব কিনে খায়। তাই পণ্যের গুণগতমান ভাল হোক এটা আমরাও চাই। একটা সময় ছিল ভেজালবিরোধী অভিযান কয়েকটি সংস্থার পক্ষ থেকে হতো। তখন হয়রানির মাত্রা ছিল ভয়াবহ। এ থেকে পরিত্রাণের জন্য আমরা বারবার দাবী জানানোর পর ‘নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ’ হয়েছে। এ কর্তৃপক্ষ নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩-এর অধীনে অভিযান চালায়। তবে এ আইনের প্রথম যে বিষয়টি লেখা আছে তা হলো বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে পণ্য পরীক্ষা করতে হবে। কিন্তু অভিযানে যারা আসেন তারা হাতে নিয়ে, নাকের কাছে নাড়াচাড়া করে বলে দেন এটা পচা-বাসী, কিংবা ভেজাল। তাদের এ বিষয়ে কোন কথাও বলা যায় না। এ বিষয়ে আমাদের আপত্তি। বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে পরীক্ষা করে পণ্য পচা হলে আমরা সব শাস্তি মাথা পেতে নেব। পরীক্ষা ছাড়াই একটু নাড়াচাড়া করেই বলে দেয় এটা পচা, এটা খারাপ। এ ছাড়া আমরা তো বিক্রেতা। পণ্য সেখানে উৎপাদন হয় সেখানে ভেজাল প্রতিরোধে ব্যবস্থাগ্রহণ করলে তো ভেজাল পণ্য উৎপাদন বন্ধ করা সম্ভব হয়। সেটা না করে শপিংশপে এসে হানা দেয়া ব্যবসায়ীদের জন্য মারাত্মক হয়রানি বলেই আমরা মনে করি। আমরা এর প্রতিকারে শিগগিরই পদক্ষেপ নেব।
গত ১১ মে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ রাজধানীর শান্তিনগর এলাকায় মেয়াদোত্তীর্ণ ও পচা খাবার রাখার দায়ে সুপারশপ আগোরা, মীনাবাজার ও অভিজাত ফাস্টফুডের দোকান কুপার্সকে জরিমানা ও কর্মকর্তাদের কারাদ- দেয়া হয়েছে। এ সময় প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ শাস্তি দেয়া হয় বলে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। অভিযানটি পরিচালনা করেন ঢাকা মেট্রোপলিটনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মশিউর রহমান। নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ অনুযায়ী তিনটি প্রতিষ্ঠানকে ৮ লাখ টাকা জরিমানা ও এক কর্মকর্তাকে ২ বছরের কারাদ- দেয়া হয়। পচা মাছ, গোশত ও মেয়াদোত্তীর্ণ খাদ্যদ্রব্য রাখার জন্য নিরাপদ খাদ্য আইন ২০১৩ অনুযায়ী আগোরার ম্যানেজার মনিরুল ইসলামকে ২ বছর বিনাশ্রম কারাদ- ও ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরও ৩ মাসের কারাদ- দেন ম্যাজিস্ট্রেট।
এ সময় ফাস্টফুডের দোকান কুপার্সেও অভিযান চালানো হয়। মেয়াদোত্তীর্ণ পাউরুটি ও অন্যান্য খাবার রাখার দায়ে এ প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজারকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদ- দেয়া হয়। সর্বশেষ শান্তিনগরের মীনা বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সুপারশপেও পচা মাছ পাওয়া যায়। মীনাবাজারের অফিসার ইনচার্জকে ৩ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের কারাদ- দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। অভিযানের সময় খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম উপস্থিত হন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ গঠন হওয়ার পর এত দিন পর্যন্ত আমরা দৃশ্যমান কোনো কাজ শুরু করতে পারিনি। আজ থেকে দৃশ্যমান কাজ শুরু করলাম।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন