এশিয়া, বিশেষ করে ভারত মহাসাগর এবং দক্ষিণ এশিয়ায়, প্রভাববলয় সম্প্রসারণ করার প্রক্রিয়ায় চীন এবং ভারতের কাছে বাংলাদেশের গুরুত্ব বিগত কয়েক বছরে দারুণভাবে বেড়ে গেছে। ভারত মহাসাগরের অন্তর্ভুক্ত বঙ্গপোসাগর। বঙ্গপোসাগরে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও চীন ও ভারতের কাছে বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান অতি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাববলয় সম্প্রসারণ প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের সাম্প্রতিক নির্বাচন অর্থাৎ গত ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনকে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। নির্বাচন এবং আওয়ামী লীগের ২৮৮টি আসন অর্জন নিয়ে বিদেশি প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় নানান ধরনের আলোচনা ও বিশ্লেষণ চলছে। বিদেশি মাধ্যমে বলা হচ্ছে যে, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে নিজেদের প্রভাববলয়ে আনার জন্য নির্বাচনের শেষে ঐ দিনই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শেখ হাসিনা ও তার সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। পরদিন গণচীন থেকেও অভিনন্দন জানানো হয়েছে। নির্বাচনের সরকারি ফলাফল ঘোষণার আগেই তড়িঘড়ি করে ভারতের অভিনন্দন এবং সেই অভিনন্দনের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চীনা অভিনন্দনকে কূটনৈতিক প্রতিযোগিতা বলে উল্লেখ করা হচ্ছে।
নির্বাচনের পূর্বে এই নির্বাচনে ভারত এবং চীনের ভূমিকা সম্পর্কে দেশি এবং বিদেশি মিডিয়া এবং রাজনৈতিক ভাষ্যকাররা স্পষ্ট কোনো ধারণা দিতে পারেননি। তারা এক্ষেত্রে ভারত সরকার বিশেষ করে তাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের উক্তিকেই বারবার হাইলাইট করেছেন। ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে সুষমা স্বরাজ বলেছিলেন যে, ভারত বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চায়। তবে তারা চায় সেই নির্বাচন হোক অংশগ্রহণমূলক। সবদল সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের এই উক্তি তথা বিগত নির্বাচনে ভারতের অবস্থান ২০১৪ সালের ভারতীয় অবস্থান থেকে আলাদা। ২০১৪ সালে ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস। ঐ সময় কংগ্রেস সরকার পররাষ্ট্র সচিব সুজাতা সিংকে ঢাকায় পাঠায়। সুজাতা সিং ঢাকায় এসে অত্যন্ত নগ্নভাবে বাংলাদেশের নির্বাচনে তথা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে সরাসরি হস্তক্ষেপ করেন। জেনারেল এরশাদ এবং জাতীয় পার্টি ঐ নির্বাচন বয়কট করার পক্ষে ছিল। কিন্তু সুজাতা সিং এরশাদকে তথা জাতীয় পার্টিকে ঐ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে বাধ্য করেন।
যদিও পরবর্তী সরকার অর্থাৎ বিজেপি সরকার নির্বাচনে নিরপেক্ষ থাকার ঘোষণা দেয় তদসত্তে¡ও আওয়ামী লীগের প্রায় সকলেই মনে করতেন যে, সেটি একটি কথার কথা। ২০১৪ সালের তুলনায় ভারতীয় অবস্থান তেমন একটা বদলায়নি। তবে একই কৌশল সব সময় প্রয়োগ করা যায় না। আওয়ামী লীগের রাঘব বোয়ালদের মতে, তাই ২০১৮ এর নির্বাচনে ভারত নিরপেক্ষতার কথা ঠিকই বলবে, কিন্তু পর্দার অন্তরালে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করার জন্য তার প্রভাব খাটাবে। এখানে একটি বিষয় বাংলাদেশের প্রবীণ কূটনীতিকদের নজর এড়ায়নি যে, এবার ভারত সরকার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলেছে। তারা বিএনিপকেও নির্বাচনে অংশগ্রহণের কথা বলেছে। কিন্তু লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের কথা বলেনি। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের কথা বলা হলে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন যে, এটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এব্যাপারে ভারত সরকার কোনো মন্তব্য করবে না। আওয়ামী লীগও চায়নি যে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করার ব্যাপারে তার সরকারের ওপর বিদেশিদের কোনো চাপ আসুক। কারণ যদি নির্বাচনে সমস্ত দল সমান সুযোগ-সুবিধা পায় এবং সরকার ও তার মেশিনারি হস্তক্ষেপ না করে তাহলে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরে আসতে পারবে না। যদি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের জন্য সরকারের ওপর চাপ দেওয়া না হয় তাহলে আওয়ামী লীগ যে কোনো মূল্যে নির্বাচনে জয়লাভ করবে।
বাস্তবেও ঘটেছে তাই। আমেরিকা এবং ইউরোপ লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের কথা নেহায়েৎ বলার জন্যই বলেছে। তারা শুধুমাত্র লিপ সার্ভিস দিয়েছে। চীন এবং ভারত এব্যাপারে কোনো কথা বলেনি। এই ক্ষেত্রে বিদেশের কোনো প্রভাব না থাকায় কীভাবে নির্বাচন পরিচালিত হয়েছে, কীভাবে সরকারি মেশিনারি সমগ্র নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সংযুক্ত হয়েছে এবং কীভাবে ভোট হয়েছে সেটি দেশের ১৭ কোটি মানুষই এখন জানে।
দুই
কয়েক বছর আগেও চীন অন্য দেশের রাজনীতি নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামাতো না। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সেই অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটেছে। ভারতের চতুর্পার্শে্বর প্রায় সবগুলো দেশই এখন চীনের নিয়ন্ত্রণে। নির্বাচনের সময়েও একটি সাধারণ পারসেপশন ছিল যে, বাংলাদেশ ভারতের প্রভাববলয়ে রয়েছে। এই প্রভাব এত বিরাট যে, বিগত ৪৫ বছরের বাংলাদেশের রাজনীতিতে চীন কোনো ভূমিকা রাখতে পারেনি। কিন্তু বছর খানেক আগে বাংলাদেশে চীনের রাষ্ট্রদূত পরিবর্তিত হওয়ার পর নতুন রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের নির্বাচন সম্পর্কে কথা বলেন। সেটিও চীনা পররাষ্ট্র নীতির স্টাইলে। তারাও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলে। ফলে ঐ নির্বাচনে চীন সরাসরি কোনো ভূমিকা রাখছে কিনা সেটি নিয়ে বাংলাদেশের সাবেক কূটনীতিকবৃন্দ এবং বুদ্ধিজীবিদের মধ্যে অস্বচ্ছ ধারণা ছিল।
বিতর্কিত হোক আর যাই হোক, টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর গত ৭ জানুয়ারি সোমবার সিএনএন নিউজ এইটিনকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘ ২৫ মিনিট সাক্ষাৎকার দেন। ঐ সাক্ষাৎকার দানের পর থেকে দেশে এবং বিদেশে বাংলাদেশ-ভারত এবং বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নিয়ে তুমুল জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে। কোনো কোনো রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং কোনো কোনো প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত ইংরেজি সংবাদপত্রে কলাম লিখে প্রশ্ন করছেন যে, বাংলাদেশ কি চীনের দিকে ঝুঁকে পড়ছে? কেউ কেউ এক ডিগ্রি এগিয়ে গিয়ে প্রশ্ন করছেন, বাংলাদেশ কি ভারতীয় প্রভাববলয় থেকে একটু একটু সরে আসছে?
চীনের ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোডে’ বাংলাদেশের যোগ দেওয়া নিয়ে ভারতের চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, গোটা পৃথিবী এখন একটি গ্লোবাল ভিলেজে পরিণত হয়েছে। এই মুহূর্তে সবার জন্যই অর্থনৈতিক দিকটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। চীনের এই উদ্যোগের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা বা কানেক্টিভিটির অগ্রগতি হবে এবং তার ফলে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হবে সবকটি দেশ। এই পরিকল্পনায় ভারতেরও যুক্ত হওয়া উচিত বলে শেখ হাসিনা মন্তব্য করেছেন। শেখ হাসিনা আরো বলেছেন, ভারত একটি বড় অর্থনীতির দেশ, তার এ নিয়ে চিন্তিত হওয়া উচিত নয়। ভারতের যদি বিষয়টি নিয়ে আপত্তি থাকে, তাহলে এ নিয়ে আলোচনা হতে পারে এবং আলোচনার মাধ্যমেই যে কোনো ইস্যুর সমাধান হতে পারে। তিনি বলেন, নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য ইতোমধ্যে চীন, ভারত, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার একটি চুক্তি করেছে, যেটি বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার অর্থনৈতিক করিডোর বা বিসিআইএম-ইসি নামে পরিচিত। শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘ওই চুক্তির পর আমি মনে করি, এখন আর এই করিডোর নিয়ে ভারতের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ থাকতে পারে না।’
তিন
গত ৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শেখ হাসিনা নিজে শপথ গ্রহণ করেছেন এবং আরও ৪৭ জন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং উপমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন। নতুন মন্ত্রিসভা গঠন নিয়েও চীন এবং ভারতের দ্ব›দ্ব বা আধিপত্যের প্রশ্নও উত্থাপন করেছেন কোনো কোনো মিডিয়া এবং নাগরিক সমাজের কেউ কেউ। নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের সময় পুরাতন মন্ত্রিসভার ২৫ জন পূর্ণ মন্ত্রী, ৯ জন প্রতি মন্ত্রী এবং ২ জন উপ মন্ত্রী- মোট ৩৬ জন মন্ত্রী বাদ পড়েছেন। এই বিপুল সংখ্যক মন্ত্রী বাদ পড়ার পেছনে অনেকে রাজনৈতিক রং চড়াচ্ছেন। বিশেষ করে যে সব পূর্ণ মন্ত্রী বাদ পড়েছেন তাদের অধিকাংশই ভারতপন্থী এবং ভারতের ক্ষমতার করিডোরে তাদের সম্পৃক্ততা ছিল বলে ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। বর্তমান সরকার চীনের দিকে ঝুঁকছে কিনা সে ব্যাপারে এই মুহূর্তেই সঠিকভাবে কিছু বলা যাবে না। এব্যাপারে যে অস্বচ্ছতা এবং অস্পষ্টতা রয়েছে সেটি সময়ের আবর্তনের সাথে দূর হয়ে যাবে। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যে, মন্ত্রিসভায় এই ৩৬ জন বাদ দেওয়ার সাথে ভারতপন্থী হওয়া বা না হওয়ার কোনো সম্পর্ক নাই। প্রধানমন্ত্রী একটানা ৩ টার্মে থাকবেন বলে অন্য সব মন্ত্রীকেও একটানা ৩ টার্মে থাকতে হবে, এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। বরং মন্ত্রিসভায় নতুন রক্ত সঞ্চালন করা এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি করার একটি কারণ থাকতে পারে। ঘটনা যাই হোক না কেন, এটি একান্তই আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ বিষয়।
আর একটি বিষয় লক্ষণীয়। পুরোনা মন্ত্রিসভার ইনুপন্থী জাসদ, মেননের ওয়ার্কার্স পার্টি এবং এরশাদের জাতীয় পার্টির সব সদস্যকে বাদ দেওয়া হয়েছে। নতুন মন্ত্রিসভায় এসব দলের একজন সদস্যও নাই। এটি সম্পূর্ণভাবে এবং এককভাবে আওয়ামী মন্ত্রিসভা। এই ধরনের একটি মন্ত্রিসভা গঠনের মধ্য দিয়ে একটি রাজনৈতিক সুর হয়তো খুঁজে পাওয়া যায়। কিন্তু তার মধ্যে ভারতের প্রভাব হ্রাস বা বৃদ্ধির কোনো আলামত খুঁজে পাওয়া যায় না।
আমি আগেও বলেছি এবং এখনও বলছি যে, বাংলাদেশ সরকার ভারতের প্রভাববলয় থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে, এমন কথা আমি বলবো না। আবার এমন কথা আমি অস্বীকারও করবো না। তবে একটি বিষয় স্মরণ রাখা দরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পররাষ্ট্র নীতিতে প্রায়োরিটি বা গুরুত্ব আরোপের ক্ষেত্রে কিছুটা হেরফের করছেন। তিনি বারবার যেটা বলছেন, সেসব কথা অনুযায়ী এখন তার পররাষ্ট্র নীতির কর্নারস্টোন বা লক্ষ্য হলো অর্থনৈতিক উন্নয়ন। এজন্য প্রয়োজন বিপুল অর্থ। সেই ক্ষেত্রে চীন উদার হস্তে এগিয়ে এসেছে। বাংলাদেশ ওয়ান বেল্টে জয়েন করেছে বলে চীন ইতোমধ্যেই ২৪ বিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ৪শ’ কোটি ডলার সাহায্য দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কাজের অগ্রগতি হলে আরও ১৬ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ মোট ৪০ বিলিয়ন ডলার বা ৪ হাজার কোটি ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এত বিপুল সাহায্যের ৮ ভাগের এক ভাগও আমেরিকা দেয়নি। আর ভারতের পক্ষ থেকে এককালীন ৩ বিলিয়ন ডলার সাহায্যও আসেনি।
তদসত্তে¡ও এই সরকার ভারতের যত উপকার করেছে বিগত ৭২ বছরেও কেউ তত উপকার করেনি। সবচেয়ে বড় উপকার হলো উত্তর পূর্ব ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন দমন। ঐ ৭ রাজ্যের বিদ্রোহ দমনে বিদ্রোহী নেতাদেরকে ভারতের হাতে এই সরকার যদি তুলে না দিতো তাহলে ঐ ৭ রাজ্যে বিদ্রোহ থামতো না। বিগত ৬৯ বছর ধরে ভারত সাবেক পূর্ব পাকিস্তান এবং বর্তমান বাংলাদেশ থেকে ট্রানজিট এবং মংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারের অনুমতি পায়নি। এই সরকার সেটি দিয়েছে।
বাংলাদেশে ভারতের স্বার্থ রাজনৈতিক ও স্ট্র্যাটেজিক। পক্ষান্তরে চীনের স্বার্থ মূলত অর্থনৈতিক। দক্ষিণ এশিয়ায় আমেরিকারও রাজনৈতিক ও কৌশলগত স্বার্থ রয়েছে। চীনের সাথে একদিকে রয়েছে ভারতের বৈরিতা, অন্যদিকে আমেরিকার দ্ব›দ্ব। এমন একটি ত্রিমুখী স্বার্থের মধ্য দিয়ে এই সরকারকে এখন হাঁটতে হবে। সরকারের জন্য এটি তাই একটি টাইট রোড ওয়াকিং, অর্থাৎ টান টান দড়ির ওপর দিয়ে হাঁটা। চীন-ভারত অথবা চীন-আমেরিকার দ্ব›দ্ব যখন আরও প্রকট হবে তখন অগ্নি পরীক্ষার সন্মুখীন হবে এই সরকার।
journalist15@gmail.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন