বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

রিয়ালের জয়ে ভাগ্যের ছোঁয়া

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৭ এএম

ভগ্নাংশেরও ক্ষুদ্রতম সময়ের ব্যবধানে অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে গেল নিকোলাস তাগলিয়াফিকোর গোলটি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে ব্যবহৃত প্রথম ভিডিও অ্যাসিসট্যান্ট রেফারির (ভিএআর) সিদ্ধান্ত গেল আয়াক্সের বিপক্ষে। আর তাতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলল রিয়াল মাদ্রিদ সমর্থকরা।

অথচ অফসাইডের কোনো আবেদনই আসেনি রিয়ালের পক্ষ থেকে, না খেলোয়াড়, না ডাগআউটে বসে থাকা কোচিং স্টাফ। রেফারি ভিডিও দেখে জানিয়ে দিলেন দুশান তাদিচের অফসাইডের কথা। খালি চোখে কোনো লাইন্সম্যানেরই এই অফসাইড ধরা সম্ভব নয়। স্লো মোশানে দেখলে হয়ত ধরা পড়বে ভগ্নাংশেরও অতিক্ষুদ্র ব্যধানের পার্থক্যে অফসাইড ছিলেন তাদিচ। অবশ্য এটা আদেও অফসাইড ছিল কিনা এ নিয়েও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে গণমাধ্যমে পর্যন্ত চলছে সমান সমালোচনা। রেফারির এই সিদ্ধান্তে মুহূর্তেই শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়ে আমস্টার্ডামের ইয়োহান ক্রুইফ স্টেডিয়াম। প্রথমার্ধের ৩৯ মিনিটে পাওয়া এই শোক শেষ পর্যন্ত আর কাটিয়ে উঠতে পারেনি আয়াক্স। মাঠ ছাড়তে হয় ২-১ গোলের পরাজয়ের হতাশা নিয়ে। এ নিয়ে আসরে টানা সাত ম্যাচে আয়াক্সকে হারালো রিয়াল।

শক্তি সামর্থে দুই দলের পার্থক্য অনেক হলেও ম্যাচের শুরু থেকে রিয়ালের রক্ষণে একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে আয়াক্স। শেষ পর্যন্ত তা অব্যহতও থাকে। অন্যদিকে বলতে গেলে ম্যাচ জুড়েই ভুল পাসিং ফুটবল খেলতে থাকে রিয়াল। তবে লক্ষ্য পূরণে ইউরোপিয়ান জায়ান্টদের যে বিচ্ছিন্ন কয়েকটি মুহূর্তই যথেষ্ট সেটা প্রমাণ করেই আসরের শেষ ষোলোর প্রথম লেগে নাটকীয় জয় নিয়ে ফেরে সান্তিয়াগো সোলারির দল। অন্যদিকে ম্যাচ জুড়ে দারুণ ফুটবল উপহার দিয়েও ভালো ফিনিশারের অভাবে পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় স্বাগতিকদের। রিয়ালের হয়ে গোল দুটি করেন করিম বেনজেমা ও বদলি নামা মার্কো অ্যাসানসিও।

রিয়ালের ভুল পাসিং ফুটবলের সুযোগ নিয়ে গোলের প্রথম সহজ সুযোগ তৈরি করে স্বাগতিকরাই। ২৭তম মিনিটে তাদিচের শট দূরের পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ৩৬তম মিনিটে রিয়াল গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়াকে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি হাকিম জিয়াচ। দুই মিনিট পর আসে সেই ভিএআরের ক্ষণ। কর্নার কিক থেকে উড়ে আসা বল ডি বক্সে জটলার মধ্য থেকে হেড করে জালে পাঠান তাগলিয়াফিকো। এরপর তাদের উদযাপনটা ছিল দেখার মত। কিন্তু রেফারির চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে মন ভাঙে তাদের।

সোলারি অবশ্য আস্থা রাখছেন ভিএআরের উপর, ‘একটা সিদ্ধান্তে আসার মতো প্রযুক্তি আমাদের কাছে নেই। আমাদের কোনো মনিটর নেই। ভিএআর বা রেফারি যা বলেন আমরা তাই বিশ্বাস করি।’

৬০তম মিনিটে রিয়াল বুঝিয়ে দেয় কেন তারা টুর্নামেন্টের টানা তিনবারের চ্যাম্পিয়ন। বাঁ প্রান্ত থেকে ভিনিসিউস দারুণ দক্ষতায় বল নিয়ে বক্সে ঢুকে ডান প্রান্তে অবস্থান নেয়া বেনজেমাকে এগিয়ে দেন। বল জালে পাঠাতে কোনই ভুল করেননি ফরাসি স্ট্রাইকার। ইউরোপিয়ান ফুটবলের শীর্ষ প্রতিযোগিতায় বেনজেমার এটি ৬০তম গোল। তার চেয়ে বেশি গোল আছে কেবল রাউল গঞ্জালেজ (৭১), লিওনেল মেসি (১০৬) ও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর (১২১)।

৭৬তম মিনিটে অবশেষে প্রত্যাশিত জালের দেখা পেয়ে যায় আয়াক্স। বাম প্রান্ত থেকে নেরেসের ভয়ঙ্কর ক্রস প্লেসিং শটে জালে পাঠান হাকিম। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের তিন মিনিট আগে স্বাগতিকদের বুকে ছুরি চালান অ্যাসেননিও। বাম প্রান্ত থেকে দানি কারবাহালের ক্রস প্লেসিং শটে জালে ঠেলে দেন স্প্যানিশ মিডফিল্ডার। যোগ করা সময়ে হলুদ কার্ড দেখেন রিয়ালের জার্সিতে ৬০০তম ম্যাচ খেলতে নামা সার্জিও রামোস। ৫ মার্চ ঘরের মাঠে ফিরতি লেগে খেলতে পারবেন না দলীয় অধিনায়ক।

ওদিকে একই সময়ে ওয়েম্বলিতে অনুষ্ঠেয় আসরের অন্য ম্যাচে সফরকারী বরুশিয়া ডর্টমুন্ডকে ৩-০ গোলে হারিয়ে শেষ আটের পথে অনেকটাই এগিয়ে গেছে টটেনহাম হটস্পার। মাউরিসিও পচেত্তিনোর দলের হয়ে দ্বিতীয়ার্ধে গোল তিনটি করেন সন হিউন মিন, ইয়ান ভার্টোনেন ও ফার্নান্ডো লরেন্তে। টুর্নামেন্টে এটি তাদের যৌথ সর্বোচ্চ বড় জয়। এ নিয়ে পঞ্চমবারের মত এই প্রতিযোগিতায় তিন গোলের ব্যবধানে জিতল দলটি।
হ্যারি কেইন ও দেলে আলির অনুপস্থিতির সুযোগ নিতে পারেনি বুন্দেসলিগার শীর্ষ দলটি। উল্টো শেষ দশ মিনিটে দুই গোল খেয়ে বসায় পরের রাউন্ডে ওঠাটা অনেকটাই অনিশ্চিত হয়ে যায় সফরকারীদের। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নক আউট পর্বে ঘরের মাঠে দুই বা ততোধিক গোলের ব্যবধানে হেরে ঘুরে দাঁড়ানোর নজির নেই। তাছাড়া গোলপোস্ট অক্ষত রাখায় ৫ মার্চ দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে অনেকটা নির্ভার থেকেই মাঠে নামবে টটেনহাম।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন