মারা গেছেন আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি ও সাংবাদিক আল মাহমুদ। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শুক্রবার রাত ১১টা ৫ মিনিটে রাজধানীর ইবনে সিনা হাসপাতালে ৮২ বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন কিংবদন্তী এই লেখক। তাঁর মৃত্যুতে ফেইসবুক, টুইটারসহ সকল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। কেউ সোনালী কাবিনের কবির কবিতার লাইন লিখে শোক প্রকাশ করছেন, আবার কেউ নিজের সাথে তাঁর স্মৃতির কথা তুলে শোকার্ত হচ্ছেন, অনেকে তাঁর সান্নিধ্য হারানোর বেদনায় কাতর। সবাই প্রতিপালকের কাছে প্রার্থনা করছেন তিনি যেন ওপারে ভালো থাকেন।
সঙ্গীতজ্ঞ ও গবেষক অধ্যাপক মুস্তফা জানান আব্বাসী তাঁর ফেইসবুকে লিখেছেন, ‘গত রাতে আমি একজন ভাইকে হারালাম (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি আমাকে ভালোবাসা দিয়েছেন। আল মাহমুদের শ্রেষ্ঠ কবিতা কাকে উৎসর্গ করা হয়েছে জানেন? আমাকে। অবিশ্বাস্য!!!!......’
‘খুচরা কবি, পাতি লেখক আর ভন্ড দেশপ্রেমীরা সারাজীবন কষ্ট দিয়েছে আপনাকে, ছোট করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এটা সবাই জানে, আপনিই বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ কবি। আপনার লেখাই সবচেয়ে বেশী বাংলাদেশ। মানুষ কাঁদছে আপনার জন্য। আপনাকে পড়িনি তেমন, তবু কাঁদছে আমারও হৃদয়। ভালো থাকুন আল মাহমুদ। আল্লাহ্ আপনাকে চিরশান্তি দান করুন।’ - আক্ষেপ করে বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
কবি আল মাহমুদের চারটি কবিতার লাইন শেয়ার করে লেখক এবং ফেসবুক এ্যাকটিভিস্ট পিনাকী ভট্টাচার্য তাঁর ফেইসবুকে লিখেছেন, ‘কবির প্রার্থনা ঈশ্বর মমতার সাথে কবুল করেছেন। শুভ শুক্রবারেই তার মহাপ্রয়াণ হলো। আমাদের স্মৃতিতে কবি আপনি দীর্ঘজীবী হোন। অসীমের পথে আপনার অনন্ত যাত্রা শুভ হোক।’
লেখকের মৃত্যু সংবাদটি লিখে শিশু সাহিত্যিক ও সাংবাদিক হুমায়ন কবির ঢালী তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করেন।
সাংবাদিক খাতুনে জান্নাত কনা ২০০০ সনে কবির দেয়া অটোগ্রাফের ছবি দিয়ে লিখেন, ‘বাংলাদেশ আজ সত্যিকারের যোগ্য এক কবিকে হারালো। সমকক্ষ তেমন কেউ পেতে শতাব্দী পার হয়। আল্লাহ তাকে বেহেশত নসীব করুন। বিদায় কবি আল মাহমুদ।...’
‘আমার যাওয়ার কালে খোলা থাক জানালা দুয়ার
যদি হয় ভোরবেলা স্বপ্নাচ্ছন্ন শুভ শুক্রবার।’
কবির এই লাইন দু’টি শেয়ার করে লেখক মানসুর আজিজ লিখেন, ‘আপনার দোয়া কবুল হয়েছে। প্রভুর সান্নিধ্যে চলে গেছেন। আমরা হারিয়েছি আপনার সান্নিধ্য। দেখা হবে আবার অলৌকিক আড্ডায়।’
টুইটার ব্যবহারকারী এম সিজিল আহমেদ লিখেছেন, সীমাহীন নৈঃশব্দের পথে হেটে যেতে যেতে আজো সাধ হয়, তোমার নির্জনে একা পা বাড়াই... চেতনাহীন উম্মাদ কিশোরীর মতো ইচ্ছে করে স্মৃতির সিড়ি বেয়ে নেমে যেতে অনেকখানি নীচে যেখানে বোধহীন সব মানুষের বিস্তার... বিদায় প্রিয় কবি আল মাহমুদ। আল্লাহ পাক জান্নাতবাসী করুন।
উল্লেখ্য, গত ৯ ফেব্রুয়ারি গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় কবিকে ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। ওই দিন ইবনে সিনা হাসপাতালে তাঁকে প্রথমে সিসিইউতে ও পরে আইসিইউতে নেওয়া হয়। শুক্রবার রাত সোয়া ১০টার দিকে তাকে ‘লাইফ সাপোর্ট’ দেওয়া হয়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন