বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

ঋণ খেলাপিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায় এফবিসিসিআই

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৫:২৯ পিএম

অবৈধ পন্থায় ব্যাংকের টাকা লুটপাট করা ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই)। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এফবিসিসিআই আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সংগঠনটির সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন এ কথা বলেন। আসন্ন জাতীয় বাজেট উপলক্ষ্যে এসোসিয়েশন গ্রুপের সভাপতিদের সঙ্গে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, ব্যাংকের সুদের হার অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে। প্রধানমন্ত্রীসহ সকলের কাছে বিষয়টি এফবিসিসিআই উপস্থাপন করছেন। এটা (সুদ হার) কোন ভাবেই ব্যবসায়ীক পরিবেশ তৈরির জন্য যথেষ্ট নয়। যে কারণে বাংলাদেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

তিনি বলেন, আমরা যথেষ্ট সোচ্চার ভাবে বলতে চেয়েছি দুই ধরণের খেলাপি ঋণ আছে। একটি হলো যারা অবৈধ পন্থায় ব্যাংকের টাকা লুটপাট করেছেন, তাদের আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। তবে যারা ব্যবসা করতে গিয়ে লোকসান করেছেন তাদের ক্ষেত্রে শিথিল করা যেতে পারে।

৫০০ কোটি টাকার ওপরে ঋণ খেলাপিদের বিশেষ সুবিধা দেয়ার সমালোচনা করে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, আমরা বলেছি যদি ঋণ খেলাপিদের জন্য ৫০০ কোটি টাকার ওপরে আলাদা স্লাপ তৈরি করা হয়, তাদের জন্য যদি ২০ বছরের জন্য ঋণ রিসিডিউল করা হয়, তাহলে আমার ক্ষুদ্র-মাঝারি ব্যবসায়ীদের জন্য কেন করা হচ্ছে না। আমাদের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্টদের কাছে পরিস্কারভাবে এ বিষয়গুলো আমরা তুলে ধরেছি।

তিনি বলেন, আমরা বলেছি শুধু বিজিএমইএ নয়, সমস্ত সেক্টর (খাত) এগিয়ে আসবে। শুধু আরএমজি বা টেক্সটাইল সেক্টর রফতানির খাত দখল করে থাকুক আমরা তা চাই না। আমরা চাই ফুটওয়্যার, প্রসেস ফুড, আইটি খাত এগিয়ে আসুক।

শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, ভ্যাটের যে একটি অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল তার জন্য আমরা আন্দোলন করেছি। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকার কারণে এটাকে ন্যাশনাল ইস্যুতে পরিণত করেছি। সে কারণে প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি তার নজরে নিয়েছেন এবং তার দুরদৃষ্টির কারণেই ভ্যাট আইন স্থগিত রয়েছে।

সব ক্ষেত্রে ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশ থাকবে না জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা গত সপ্তাহে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের সঙ্গে বসেছি। তিনি একটি বিষয় মেনে নিয়েছেন ভ্যাট সব ক্ষেত্রে ১৫ শতাংশ থাকবে না। এটির বিভিন্ন হার হবে।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, ২৮ হাজার টাকা প্যাকেজ ভ্যাট। আমার কাছে রিপোর্ট আছে অনেকে এই ২৮ হাজার টাকা না দিয়ে, অসাধু ইন্সপেক্টরদের সঙ্গে হ্যান্ডশেক (হাত মেলানো) করছে। দয়া করে এগুলো বন্ধ করুন। যেখানে অন্যায় করা হবে, সেখানে এফবিসিসিআই আপনাদের পাশে থাকবে। তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো, প্রতিবাদ করবো।

তিনি বলেন, ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে প্রধানমন্ত্রী কতোটা গুরুত্ব দেন মন্ত্রী সভা গঠনের মাধ্যমে তিনি তা দেখিয়ে দিয়েছেন। মন্ত্রী একটা একটা করে হিসাব করে দেখলে অনেকে জেলাস হন, কষ্ট পান।

একজন ব্যবসায়ী যে রাজনীতি করতে পারেন এটা অনেকে বুঝতে পারেন না। রাজনীতি ও অর্থনীতি একে অপরের পরিপূরক। একজন ব্যবসায়ী যদি সততার সাথে ব্যবসা করেন ওটাই হবে সব থেকে বড় সমাজ সেবা।

তিনি আরও বলেন, একজন অসৎ ব্যবসায়ী, একজন অনৈতিক মানুষকে আমরা সরকারের উচ্চ পর্যায়ে দেখতে চাই না। আমরা দেখতে চাই রাজনীতিতে স্বাচ্ছতা ফিরে আসুক। বিজনেস কমিউনিটিতে স্বচ্ছতা ফিরে আসুক। দুই একজনের অসাধুতায় সমস্ত ব্যবসায়ী সম্প্রদায় ভুগতে পারে না।

এফবিসিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম’র পরিচালনায় সভায় বিভিন্ন অ্যাসোসিয়েশনের শীর্ষ নেতারা মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন। এদের মধ্যে ফিস ফার্ম ওনার্স এসোসিয়েশন বাংলাদেশ’র সভাপতি মোল্লা সামছুর রহমান (শাহীন) বলেন, আমরা ৫-৭ শতাংশ সুদ হারে ব্যাংক ঋণের জন্য যুদ্ধ করছি। পিকেএসএফ’র দায়িত্ব দারিদ্র বিমোচন করা। তাই এফবিসিসিআই’র সদস্য সংগঠনগুলোর সদস্যদের পিকেএসএফ’র ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা করার উদ্যোগ নিতে হবে।

পাইকারি ভোজ্য তেল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হাজী মো. আবুল হাসেম বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন ব্যাংকের সুদহার এক অঙ্কে নামবে। কিন্তু আমাদের ১৩ শতাংশ সুদ হারে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করতে হচ্ছে। তাই এফবিসিসিআই থেকে ব্যবসায়ীদের ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা করা হোক।

পরে ফজলে ফাহিম বলেন, সরকারি ব্যাংকগুলো এক অঙ্ক সুদ হারে উদ্যোক্তাদের ঋণ দিচ্ছে। কিন্তু বেসরকারি ব্যাংকগুলোর সুদ হার এখনো এক অঙ্কে নামেনি। আমরা এটার জন্য কাজ করছি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন