প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে ভারতীয় বাহিনীর যে কোনো হামলার চ‚ড়ান্ত ও পূর্ণাঙ্গ জবাব দেয়ার কর্তৃত্ব দিয়েছেন। ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের পুলওয়ামা জেলায় গত ১৪ ফেব্রæয়ারি ভারতীয় সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্সেস বা সিআরপিএফ’র বহরে সন্ত্রাসী হামলার পর পাক-ভারত উত্তেজনা যখন তুঙ্গে তখন ইমরান খান পাক সামরিক বাহিনীকে এই কর্তৃত্ব দিলেন। একইসঙ্গে তিনি পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেশ থেকে সন্ত্রাসবাদ এবং চরমপন্থার শিকড় উপড়ে ফেলা প্রচেষ্টা জোরদার করার নির্দেশনা দিয়েছেন। খবর জিও নিউজ ও পার্স টুডে।
গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি বা এনএসসি’র বৈঠকে এসব নির্দেশনা ও কর্তৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন তিনি। বৈঠকে প্রশাসন ও সামরিক বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নে যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়ার সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ হচ্ছে এনএসসি। ওই বৈঠকে ভ‚-রাজনৈতিক, জাতীয় নিরাপত্তা এবং পুলওয়ামা হামলার পর উদ্ভ‚ত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকের পর এক বিবৃতি প্রদান করা হয়।
বৈঠকে ইমরান খান বলেন, পাকিস্তান যে তার জনগণকে রক্ষা করতে সক্ষম এবং এ ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ তা আমরা দেখিয়ে দিতে চাই। তিনি বলেন, পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীকে ভারতের যে কোনো আগ্রাসন বা অপচেষ্টার ক্ষেত্রে পাকিস্তানকে মোক্ষম জবাব দিতে হবে। এ জন্য তিনি পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীকে সর্বদা প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেন।
বৈঠক থেকে সন্ত্রাসী হামলায় পাকিস্তানের জড়িত থাকার সমস্ত অভিযোগ নাকচ করা হয়। তিনি বলেন, ভারত সরকার কোনো প্রমাণ ছাড়াই এ হামলার দায়ভার পাকিস্তানের ওপর চাপাচ্ছে। এ ধরনের হামলার সঙ্গে জড়িত হয়ে পাকিস্তানের কী লাভ হবে?
ভারত সরকারকে তাদের চিন্তায় পরিবর্তন আনার আহŸান জানিয়ে পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি স্পষ্ট ভাষায় ঘোষণা করতে চাই- পাকিস্তান এখন নতুন চিন্তাধারায় এগোচ্ছে। আমরা সবার সঙ্গে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে বিশ্বাস করি। ভারতেরও চিন্তার পরিবর্তন দরকার। ভারত যদি এভাবে পুরনো চিন্তাধারায় আচ্ছন্ন থাকে, তা হলে উভয় দেশের আগামীর পথচলা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে পাকিস্তান কঠোর অবস্থানে রয়েছে জানিয়ে ইমরান খান বলেন, সন্ত্রাস নির্মূলে ভারতের সঙ্গে কথা বলতে আমরা রাজি। সন্ত্রাসবাদ দমনে গত পনেরো বছর আমরা লড়াই করছি। ৭০ হাজারের বেশি মানুষ সহিংসতায় নিহত হয়েছে। সন্ত্রাসী কার্যক্রমে যদি পাকিস্তানকে কেউ ব্যবহার করে তা হলে সে পাকিস্তানেরই শত্রæ বলে মন্তব্য করেন ইমরান খান।
ভারতের পক্ষ থেকে অব্যাহত যুদ্ধের হুমকির বিষয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সবাই জানি যুদ্ধ শুরু করাটা সহজ ব্যাপার। কিন্তু তা শেষ করা মানুষের পক্ষে সম্ভব হয় না। যদি ভারত আগ বাড়িয়ে কোনো ভুল পদক্ষেপ গ্রহণ করে, তা হলেও পাকিস্তান বসে থাকবে না। বরং সমুচিত জবাব দেবে।
যুদ্ধ নয়, আলোচনার মাধ্যমেই শান্তি আসতে পারে জানিয়ে ইমরান খান আরও বলেন, ভারত সরকারকে এ বিষয়ে ভাবতে হবে যে, কাশ্মীরি তরুণরা এখন আর মৃত্যুকে ভয় পায় না। এর মূল কারণ বের করতে হবে। আফগানিস্তানে ১৭ বছর যুদ্ধের পর বিশ্ববাসী স্বীকার করছে যে আলোচনার মাধ্যমেই শান্তি আসতে পারে। আফগানিস্তানের মতো কাশ্মীর সমস্যাও আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন