বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

পঞ্চগড়ে এক নারীর খপ্পরে পড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে এক কিশোর

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ

পঞ্চগড় জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৭:১৩ পিএম

কিছু কুচক্রী লোকের যোগসাজশে নিজের চেয়ে দ্বিগুণ বয়সের এক নারীর খপ্পরে পড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে পঞ্চগড়ের এক কিশোর। বিষয়টি নিয়ে দফারফা হলেও উল্টো বিয়ের দাবি নিয়ে ওই কিশোরের বাড়ির বাইরে অবস্থান করছে ওই নারী। গতকাল শুক্রবার সকালে পঞ্চগড় প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেন ওই কিশোরের পিতা জয়নুল ইসলাম। তার বাড়ি পঞ্চগড় সদর উপজেলার কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়নের ফুলপাড়া গ্রামে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জয়নুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে মো. বাবু (১৭) একই উপজেলার পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের দেওয়ানহাট এলাকার ডুডুমারী গ্রামের জনৈক মোবারক হোসেনের দুই একর জমি চুক্তিতে নিয়ে হাইব্রিড টমেটো আবাদ করেছে। জমিতে টমেটোর চারা লাগানোর পর থেকে ডুডুমারী গ্রামের ফজিরত আলীর মেয়ে রেহেনা বেগম (৩৫) কুচক্রি মহলের সহযোগিতায় জমিতে লাগানো টমেটো আত্মসাৎ ও বাবুর জীবন ধ্বংস করার জন্য তার সাথে ভালবাসার সম্পর্ক রয়েছে বলে এলাকায় রটিয়ে বেড়ায়। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টা দিকে বাবু পার্শ্ববতি দেওয়ানহাট বাজারে জমিতে কাজের শ্রমিকদের টাকা দেয়ার সময় অজ্ঞাত ৪/৫ জন যুবককের দিয়ে রেহেনা বেগম বাবুকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। এসময় বাবুর ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও কাছে রক্ষিত ৫৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে রেহেনা বেগম বাবুকে তার বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখে। তিনদিন পর গত ১৯ ফেব্রুয়ারি আমাকে মোবাইল ফোনে বলা হয় ‘আপনার ছেলে রেহেনার কাছে আটক আছে। তাকে বাচাতে চাইলে দুই ঘন্টার মধ্যে ২ লাখ টাকা নিয়ে আসতে হবে।’ ছেলের এমন বিপদের কথা জানতে পেরে আমি তৎক্ষনিকভাবে বিষয়টি অমরখানা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান নুরু, পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের মেম্বার সেরাজুল ইসলাম, রেজাউল করিম রেজা ও নজরুল ইসলামকে জানাই। পরবর্তিতে ছেলেকে উদ্ধারের জন্য চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের নিয়ে আমি রেহেনার বাড়িতে যাই। সেখানে যাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে পঞ্চগড় সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহেদুল হকের বাড়িতে বৈঠকে বসার সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে সকলের সিদ্ধান্ত মোতাবেক রেহেনা বেগমকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বিষয়টি আপোষ নিস্পত্তি করা হয়। কিছু কুচক্রি লোকের পরামর্শে অতিরিক্ত সুবিধা লাভের আশায় পরের দিন ২০ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০ টার দিকে রেহেনা বেগম আমার বাড়িতে গিয়ে আমার ছেলে বাবুর সাথে তার বিয়ের দেয়ার চাপ দিয়ে বাইরের আঙ্গিনায় অবস্থান নেয়। সেখানে থেকেই বিভিন্ন ধরণের ভয়ভীতিসহ হুমকি দিতে থাকে। বিষয়টি পঞ্চগড় সদর থানায় জানালে অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন যে, আপনাদের অভিযোগ আমার এখতিয়ারের বাইরে। রেহেনা বেগম এখনও আমার বাড়ির বাইরে অবস্থান করছে।
সংবাদ সম্মেলনে অমরখানা ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান নুরু বলেন, পঞ্চগড় সদর ইউনিয়নের তিনজন মেম্বারের সহযোগিতায় রেহেনা বেগম এর আগেও কয়েকজন ছেলের সাথে ভালবাসার অভিনয় করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল। কিশোর ছেলে বাবুর জীবন ধ্বংস করার জন্যই টাকা নিয়ে আপোষ নিস্পত্তির পর রেহেনা আবারও অতিরিক্ত টাকার আশায় জয়নুলের বাড়ির বাইরে অবস্থান করছে। আমি ওসি সাহেবকে বলেছি রেহেনাকে সেখান থেকে নিয়ে আসার জন্য। কিন্তু আমার কাছেও তিনি তার অপারগতা প্রকাশ করেন। আইনের আশ্রয় না পেলে অসহায় এ মানুষগুলো কোথায় যাবে।
এ নিয়ে কথা বললে পঞ্চগড় সদর ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, ওই নারীর অভিযোগ গত দুই বছর ধরে বাবুর সাথে তার সম্পর্ক। বিয়ে করার জন্য বাবু ওই নারীর কাছ থেকে কিছু টাকা পয়সাও নিয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে এড়িয়ে চলায় গত ১৬ ফেব্রুয়ারি ওই নারী বাবুকে দেওয়ানহাট বাজার থেকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে ছেলের লোকজন আমাদের এলাকায় এলে আমরা সবাইকে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে বসি। বিষয়টি থানার ওসি সাহেবকে জানালে তিনি নিজেরাই মিমাংসা করে নেয়ার কথা বলেন। পরে ওই নারী বিষয়টি নিয়ে লিখিতভাবে থানায় না জানানোর কথা জানালে আমরা চেয়ারম্যান সাহেবের বাসায় বসে লিখিত নিয়ে ছেলেটিকে তার বাবার হাতে তুলে দেই। পরদিন শুনলাম ওই নারী ছেলের বাসায় চলে গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পঞ্চগড় সদর থানার অফিসার ইনচার্জ আবু আক্কাস আহমদ বলেন, ছেলে ও মেয়ের বিষয়ে আমার কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসেনি। অভিযোগ দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
mohammed morshed ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ৭:২২ পিএম says : 0
bangladesher police er ki komu?
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন