শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ভোটের স্বার্থেই দেশে যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা

মোদির দিকে আঙুল তুললেন মমতা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

পশ্চিমবেঙ্গর মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণম‚ল চেয়ারপার্সন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলা প্রসঙ্গে প্রায় সরাসরি আঙুল তুলেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দিকে। সোমবার তৃণম‚লের কোর কমিটির বৈঠকের মঞ্চ থেকে নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশে অত্যন্ত আক্রমণাত্মক সুরে তিনি প্রশ্ন করেন, ঘটনা যে ঘটবে আপনি তো আগে থেকে জানতেন? জওয়ানদের রক্ত নিয়ে ভোটের রাজনীতি করাই কি আসল লক্ষ্য? তিনি বলেন, ভোটের স্বার্থেই দেশে যুদ্ধ যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা চলছে। খবর এনডিটিভি ও আনন্দবাজার পত্রিকা।
ভারতে সাধারণ নির্বাচনের দিনক্ষণ সম্ভবত ঘোষিত হয়ে যাবে মার্চের প্রথম সপ্তাহেই। তার আগে বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধি ও দলীয় পদাধিকারীদের নিয়ে সম্ভবত তৃণমূলের এ শেষ ‘কোর কমিটি’ বৈঠকে বক্তৃতায় নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে তথা বিজেপির বিরুদ্ধে চড়া সুরে আক্রমণ শানালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভাষণের প্রায় গোড়ার দিকেই আনলেন পুলওয়ামা প্রসঙ্গ। এই ভয়াবহ জঙ্গিহানার জন্য গোটা দেশই যে শোকসন্তপ্ত সে কথা আরও এক বার উচ্চারণ করলেন। শহিদদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানালেন। তার পরেই চলে গেলেন তীব্র আক্রমণে। ‘কেন ঘটনা ঘটেছিল? মোদিবাবু কোথায় ছিলেন আপনি?’ প্রশ্ন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার বিরুদ্ধে সরাসরি অভিযোগের আঙুল তুলে তিনি বললেন, ঘটনা যে ঘটবে আপনি তো আগে জানতেন। আপনার কাছে তো খবর ছিল। সরকারের কাছে তো গোয়েন্দা তথ্য ছিল। তার পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, তা হলে কেন সে দিন জওয়ানদের এয়ারলিফ্ট না করে, নাকা চেকিং না করে, রাস্তাগুলো স্যানিটাইজ না করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছিলেন? রাজনীতি করবেন বলে? ভোট আসছে?
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, জওয়ানদের রক্ত নিয়ে ভোটের রাজনীতি হয় না, হবে না। কিছু দিনের জন্য ভুল বুঝিয়ে রাখতে পারবেন। ভোটের স্বার্থেই দেশে যুদ্ধ যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করার চেষ্টা চলছে বলে ইঙ্গিত দিতে চেয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তার কথায়, শ্যাডো ওয়ার? সার্জিক্যাল স্ট্রাইক? যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে কটাক্ষ, খুব বড় নেতা! দেশে চলছে যুদ্ধ! যুদ্ধ লাগিয়ে দিয়ে, দাঙ্গা লাগিয়ে দিয়ে শান্তি প্রাইজ নিচ্ছেন, যেন মনে হচ্ছে ওরে বাবারে একেবারে মানবতার দ‚ত!
গতকাল সোমবার রাতেই দিল্লি পৌঁছেন মমতা। আজ মঙ্গলবার তিনি দিল্লি প্রেস ক্লাবে একটি বই প্রকাশের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। বুধবার সংসদের অ্যানেক্স ভবনে বিরোধী শিবিরের বৈঠক হবে। পুলওয়ামা কান্ড নিয়ে মোদির বিরুদ্ধে যে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, আগামী কয়েক দিনে সে প্রশ্ন নিয়ে গোটা দেশেই জোর চর্চা শুরু হতে চলেছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
মোদির সব পাপ ধুয়ে দেবে?
এদিকে শাহিস্নান আর দলিতদের পা ধুয়েই সব পাপ দ‚র হবে তো বলে মোদির উদ্দেশে কটাক্ষ করেছেন উত্তর প্রদেশের দলিত নেত্রী মায়াবতী। প্রয়াগরাজে মোদির পুণ্যডুব এবং দলিতদের পা ধোয়ানো নিয়ে বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি) সুপ্রিমোর খোঁচা, মোদির এই শাহি স্নান কি নোটবন্দি, জিএসটি, প্রতিশ্রুতিভঙ্গের মতো সব পাপ ধুয়ে দেবে? দেশের মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে তোলার জন্য দেশবাসী তাকে কখনই ক্ষমা করবে না।
রোববার প্রয়াগরাজে কুম্ভ মেলায় ত্রিবেণী সঙ্গমে শাহি স্নান করেন প্রধানমন্ত্রী। স্নানের পর প্রয়াগরাজের পাঁচ সাফাইকর্মীর পা ধুয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এ ঘটনায় মোদিকে তার দল মোহনদাস করম চাঁদ গান্ধীর সঙ্গে তুলনা করেছেন। তবে বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছেন, এক দিকে কুম্ভস্নান করে উচ্চবর্ণ এবং পা ধুয়ে দিয়ে দলিতদের মন জয়ের চেষ্টা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এ বার সেই ইস্যুতেই ময়দানে নামলেন মায়াবতী।
সোমবার পর পর দু’টি টুইট করেন মায়াবতী। প্রথম টুইটে প্রশ্ন তুলেছেন, সঙ্গমে মোদির শাহি স্নান কি তার প্রতিশ্রুতিভঙ্গ, প্রতারণা এবং অন্যান্য পাপ কি ধুতে পারবে? নোটবন্দি, জিএসটি, প্রতিহিংসার রাজনীতি, জাত-পাতের বিভেদ, সাম্প্রদায়িক উস্কানি, একনায়কতন্ত্র এ সবের জন্য দেশবাসীর পক্ষে মোদীকে ক্ষমা করা কখনই সম্ভব নয়।
রবার্ট ভদ্রকে নিয়ে পোস্টার
উত্তরপ্রদেশের মোরাদাবাদ লোকসভা কেন্দ্র থেকেই কি ভোটে লড়বেন রবার্ট ভদ্র? জল্পনা আরও উস্কে দিয়েছে ওই কেন্দ্রের একটি পোস্টারের বয়ান। বেশ ইঙ্গিতপ‚র্ণ ওই পোস্টারে লেখা, ‘রবার্ট ভদ্রজি, মোরাদাবাদ লোকসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করার জন্য আপনাকে স্বাগত জানাই।’ যুব কংগ্রেসের তরফে মোরাদাবাদ লোকসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের একাধিক পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। পোস্টারের বেশির ভাগটা জুড়েই রয়েছে রবার্ট ভদ্রের মুখের ছবি। পিছনের সারিতে সনিয়া গান্ধী এবং রাহুল গান্ধীর মুখ।
আপাতদৃষ্টিতে এটি রবার্ট ভদ্রর কাছে মোরাদাবাদ যুব কংগ্রেসের আবেদন বলে মনে হতে পারে। তবে একটি অসমর্থিত সূত্রের দাবি, রবার্ট ভদ্র নিজেই সাংবাদিকদের ওই পোস্টার বিলি করেছেন। তাতেই তার সক্রিয় রাজনীতিতে যোগদানের জল্পনায় আরও হাওয়া লেগেছে।
রোববার ফেসবুকে একটি পোস্টে এমন ইঙ্গিতই দিয়ে রবার্ট লিখেছেন, দেশবাসীকে সাহায্য করার জন্য আমার রাজনীতিতে আসার প্রয়োজন নেই। কিন্তু, যদি রাজনীতিতে যোগ দিয়ে আমি আরও বড়সড় বদল ঘটাতে পারি, তা হলে ক্ষতি কী? তবে সে বিচার মানুষই করবেন।
মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগেই বড়ভাই রাহুল গান্ধী দলের সাধারণ সম্পাদক পদে নিয়ে এসেছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভদ্রকে। দায়িত্ব দিয়েছেন পূর্ব উত্তরপ্রদেশের। তবে কি উত্তরপ্রদেশ থেকেই নির্বাচনী লড়াইয়ে দেখা যাবে প্রিয়ঙ্কার স্বামীকেও? শুরু হয়েছে জল্পনা। কারণ, ওই ফেসবুক পোস্টে তার লেখায় ফুটে উঠেছে রাজনৈতিক উচ্চাশাও। তার কথা, এত বছরের শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা বিফলে দেওয়া যায় না। তা কাজে লাগানো উচিত। বলা হচ্ছে, মোরাদাবাদের পোস্টার রবার্ট ভদ্রর রাজনীতিতে যোগদানের জল্পনা ফের উস্কে দিয়েছে ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (11)
Osman goni ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:২৩ এএম says : 0
Momotar boktobba 100% right
Total Reply(0)
Mohammed A Fateh ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৬ এএম says : 0
My homage to Mamota Banerjee. Because is a great leader . I salute her. The reason is ; she is 100% secular. Not a fake leader and she sacrificed herself for the sake of the country.
Total Reply(0)
সত্য হক ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৬ এএম says : 0
পাকিস্তানের কোন চিহ্ন বা নির্দশন যেন ভারতে না থাকে সরকার তেমন ব্যবস্থা গ্রহণ করুক। পাকিস্তানকে একঘরে করুক। পাকিস্তানি নাগরিকদেরকে ভারত ও বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করা হোক। কাশ্মীরে গণভোট হোক এই মর্মে যে, তারা স্বাধীন হবে নাকি ভারতের সাথে থাকবে।
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৬ এএম says : 0
Mamata's dream of Indian PM-ship is gone and that's why she is upset.
Total Reply(0)
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৭ এএম says : 0
She is not eligible for PM of INDIA. Because she depends on the minority votes in politics.
Total Reply(0)
Kamal Chowdury ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৯ এএম says : 0
শান্তি ছাড়া আসলে ভারতের উপায়ও নেই। অর্থনীতি দূর্বল হলেও পাকিস্তানের মত যুদ্ধপ্রিয় ও সামরিক শিল্পে মেধাবী জাতির তেমন কিছু আসলে যায় আসেনা। বিচ্ছিন্নতাবাদী রাজ্য ও জাতির সংখ্যাও ভারতে বেশি যা একটা না একটি সময়ে একে একে আলাদা হয়ে যাবেই। পাকিস্তানের রাজনীতি ও সরকার তাদের সেনাবাহিনীর বন্দুকের নাকের ডগায় থাকে, জনগণের একটা বড় অংশ এবং সেনাবাহিনীর উপর সালাফীদের প্রভাব সবচেয়ে বেশি। তাই যুদ্ধ হলে বা বেসামরিক সরকারকে বেকায়দায় ফেললে লাভটা সেই সালাফীদেরই। আবার 'র' ও 'মোসাদ' দিয়ে বোমাবাজি করে বেশি কিছু বলার মতো মুখও নেই ভারতের। সবচেয়ে ভাল হতো পাকিস্তান ও ভারত উভয়ই নিজেদের সব স্বাধীনতাকামী রাজ্যগুলোর স্বাধীনতার দাবী মেনে নিয়ে বৃহত্তর ভারতীয় ইউনিয়ন গঠন করা। দূরদৃষ্টি না থাকলে পদ ছেড়ে দেওয়াই উত্তম। আর সরকারের সংকটকালে বা নির্বাচনের আগে দিয়ে কাহিনী তৈরি শুধু উপমহাদেশে নয় সারা বিশ্বের রাজনীতিকদের একটি প্রিয় চাল।
Total Reply(0)
Bipul Chandra Dhar ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৯ এএম says : 0
মোদী জানতেন!আচ্ছা মোদী যে জানতেন তা মমতা বেগম জানলো কেমন করে?!নাকী আই এস আই মমতা জানিয়েছে?
Total Reply(0)
Ekhlas Sayeed ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৯ এএম says : 0
মমতাজীর বক্তব্যের সাথে যাদের মাথায় একটু বুদ্ধি আছে তারা সবাই একমত হবেন। ভোটের ও উগ্র জাতীয়তাবাদী রাজনীতির বলি হচ্ছেন জওয়ানরা। ক্ষমতায় পাকাপাকি ভাবে থাকার জন্য এই কান্ড ঘটানো হয়েছে যাকে মেক গেইম বলে।
Total Reply(0)
Amir Hamza ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৩৯ এএম says : 0
মমতাজের এই বক্তব্য সাথে আমি একমত পোষণ করছি।
Total Reply(0)
Shuhal Rana ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:৪০ এএম says : 0
বাংলাদেশের সরকার ক্ষমতায় টিকে তাকার জন্য ২০০৯সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ৫৭ সেনা অফিসারকে হত্যা করেছিল সেই কাজ মোদি সরকার করেছে কিনা তা খতিয়ে দেখা উচিত।
Total Reply(0)
Mohammed Kowaj Ali khan ২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ২:৫৫ এএম says : 0
ভারত আসলে পাকিস্তানের সাথে ৩৫ দিন যুদ্ধ করিতে পারিবে আর বাংলাদেশের সাথে বড় জুর ৩১ দিন। আমাদের দেশের সমস্যা ভোট চুর।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন