২০১০ সালে নিমতলীতে আগুনের ঘটনার পর অগ্নিকান্ড রোধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির ১৭ দফা সুপারিশ বাস্তবায়ন না করায় সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে চার সপ্তাহের মধ্যে মামলার বিবাদী মন্ত্রিপরিষদ সচিব, আইন সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, শিল্প সচিব ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট বিবাদীদের এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
ওই ১৭ দফা নির্দেশনায় জরুরিভিত্তিতে আবাসিক এলাকা থেকে গুদাম বা কারখানা অপসারণ; অনুমোদনহীন কারখানার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা; অগ্নি প্রতিরোধ ও নির্বাপণ আইন-২০০৩ ও ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড অনুযায়ী ভবন নির্মাণ নিশ্চিত; রাসায়নিক দ্রব্যের মজুত, বাজারজাতকরণ এবং বিক্রির জন্য লাইসেন্স দেয়ার ক্ষেত্রে তদারকি প্রক্রিয়া জোরদার; আবাসিক এলাকায় রাসায়নিক বা রিস্ফোরক দ্রব্যের মজুত বা বিপণনের বিরুদ্ধে জনমত গঠন; দ্রুত অগ্নিনির্বাপণের জন্য স্থানীয়ভাবে পৃথক পানির লাইনসহ হাইড্রেন্ট পয়েন্ট স্থাপন; আবাসিক এলাকায় রাসায়নিক বা বিস্ফোরক জাতীয় পদার্থ মজুতকরণ বা বিপণন কঠোরভাবে নিষিদ্ধ; সম্ভাব্য দুর্ঘটনা পরিহার করতে মাসে অন্তত একবার ট্রান্সফরমার সরেজমিনে পরীক্ষা।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না, ইউনুছ আলী আকন্দ, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও মো. রিয়াজ উদ্দিন। তাদের সঙ্গে ছিলেন সাগুফতা তাবাসসুম ও মাক্কিয়া ফাতেমা ইসলাম। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউনুস আলী আকন্দ, অ্যাডভোকেট অমিত দাস গুপ্ত, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, ব্যারিস্টার নূর মোহাম্মদ আজমী ও খন্দকার মো. সায়েদুল কাউছার এবং সাগুফতা তাবাসসুম পৃথক চারটি রিট দায়ের করেন। রিটে হতাহতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান, পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যালের গোডাউন ও কারখানা অপসারণ ও বিক্রির উদ্দেশে মজুত করা গ্যাস সিলিন্ডার অপসারণের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নিমতলী ট্র্যাজেডির ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির ১৭ দফা সুপারিশ বাস্তবায়নের নির্দেশনাও চাওয়া হয়। উল্লেখ্য, গত ২০ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত সাড়ে দশটায় শুরু হয়ে পরের দিন সকাল পর্যন্ত জ্বলতে থাকা আগুনের ওই ঘটনায় ৬৭ জনের প্রাণহানি ঘটে আহত হয় আরো প্রায় অর্ধশত।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন