ময়মনসিংহে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আইনজীবী-কর্মচারীদের বিরোধের জের ধরে বৃহস্পতিবার আদালত বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন আইনজীবীরা। বুধবার বিকেল ৪টায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়েছেন জেলা আইনজীবী সমিতি। সংবাদ সম্মেলনে সকল রাজনৈতিক দলের আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
জানাযায়, আইনজীবী-কর্মচারীদের বিরোধের জের ধরে বুধবার সকাল থেকেই আইনজীবীদের দিনভর বিক্ষোভ-মিছিল ও সমাবেশে আদালতপাড়ায় ছিল উত্তেজনা। ফলে দিনভর ময়মনসিংহ আদালতের কার্যক্রমে স্থবিরতা ছিল লক্ষণীয়। এ কারণে বিড়ম্বনার শিকার হন বিচারপ্রার্থীরা।
জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নাজির ও বিচার বিভাগীয় কর্মচারী কল্যাণ সমিতির আ: হালিম বলেন, বুধবার সকালে কর্মচারীরা দেড় ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করলেও জেলা জজের বিদায়ী কর্মদিবসের প্রতি সম্মান জানিয়ে বেলা সাড়ে এগারটায় কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি শান্ত থাকলে আমরা নিয়মিত কাজে থাকব। তবে কর্মচারীদের উপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এদিকে বুধবার দুপুরে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম ভবনে আইনজীবী সমিতির এক সাধারণ সভায় আইনজীবীরা অভিযোগ করে বলেন, সরকারী জায়গায় অনুমতি ছাড়াই অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের প্রতিবাদ করায় আইনজীবীদের উপর হামলা করেছে কর্মচারীরা। এবং এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ট্রোনোগ্রাফার শান্তা রহমান সঞ্চিতা আইনজীবীদের ‘কালো পোষাকের কুকুর’ বলে মন্তব্য করেছে। অবিলম্বে তাকে গ্রেফতার করতে হবে। এ সময় আইনজীবীরা বিক্ষোভ মিছিল করে শান্তা রহমানের গ্রেফতার দাবি করেন।
আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. বদর উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, কর্মচারীদের সকল অবৈধ স্থাপনা অবিলম্বে অপসারণ, হামলাকারী কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ও প্রচলিত আইনে বিচার এবং আইনজীবীদের নিয়ে মানহানীকর মন্তব্যকারীকে অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। তবে বর্তমান জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন ও জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মো: রেজাউল করিম কর্তৃক কর্মচারীদের পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার আদালত বর্জন করার সিন্ধান গৃহিত হয়েছে।
সমিতির সভাপতি অ্যাড. জালাল উদ্দিন খান বলেন, আদালতের কর্মচারীরা বেপরোয়া হয়ে গেছে। তারা এখন দ্বিগুন বেতন পেয়েও ঘুষ নেয়। কেউ এদের ঘুষ দেবন না। যদি কোন আইনজীবী বা মহরী এদের ঘুষ দেয়, তবে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে’ বলে তিনি হুশিয়ারী উচ্চারন করেন। অ্যাড. জালাল উদ্দিন খান আরো জানান, আইনজীবীদের ‘কালো পোষাকের কুকুর’ বলে মন্তব্যকারীর বিরুদ্ধে থানায় এজাহার দায়ের করা হয়েছে। অবিলম্বে তাকে গ্রেফতার করা হোক। তবে কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মাহমুদুল হাসান জানান, এ ঘটনায় থানায় এখনো (বুধবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত) অভিযোগ দায়ের হয়নি।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার বিকেলে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে অস্থায়ী স্থাপনা নির্মান করারকে কেন্দ্র করে আইনজীবী ও কর্মচারীদের বিরোধে উভয় পক্ষের ১০ জন আহত হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন