শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ধর্ম দর্শন

আপনাদের জিজ্ঞাসার জবাব

| প্রকাশের সময় : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

প্রশ্ন : নিকাহ (বিয়ে-সাদী)-এর সুন্নতসমূহ কি?
উত্তর : অনাড়ম্বর, লৌকিকতামুক্ত এবং যৌতুকবিহীন বিয়েই হল সুন্নতী তথা বরকতময় বিয়ে। [মিশকাতুল মাসাবীহ, ২/২৬৮]
বিয়ের জন্য দীনদার ও সম্ভ্রান্ত সম্বন্ধ তালাশ করা এবং প্রস্তাব পাঠানো সুন্নত। [মিশকাতুল মাসাবীহ, ২/২৬৭]
জুমার দিন ও শাওয়াল মাসে বিয়ে করা সুন্নত। [মিরকাতুল মাফাতীহ, ৬/২৭৬]
বিয়ের এ’লান করা সুন্নত। [মিশকাতুল মাসাবীহ, ২/২৭২]
সাধ্যানুযায়ী মোহর (দেনমোহর) নির্ধারণ করা সুন্নত। [মিশকাতুল মাসাবীহ, ২/২৭৭]
বাসর রাতে স্ত্রীর কপালে হাত রেখে নিচের দোয়াটি পড়বেন, আল্লা-হুম্মা ইন্নী--- আছ্আলুকা খায়রাহা- ওয়া খায়রা মা- জাবাল্তাহা- ‘আলাইহি, ওয়া আ‘ঊযুবিকা মিন্ র্শারি ওয়া মিন্ র্শারি মা- জাবাল্তাহা- ‘আলাইহি।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট এই মহিলার কল্যাণ এবং তার উত্তম স্বভাব-চরিত্রের প্রার্থনা করছি। এবং তার অনিষ্ট এবং খারাপ চরিত্র থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। [সুনানে আবু দাউদ, ১/২৯৩ ও সুনানে ইবনে মাজাহ, ১/১৩৮]
স্ত্রীর সাথে সহবাস করার পূর্বে নিচের দোয়াটি পড়বেন, সন্তানদের ওপর শয়তান প্রভাব ফেলতে পারবে না। কোন ধরণের ক্ষতিও সাধন করতে পারবে না।
উচ্চারণ: বিছ্মিল্লা-হি, আল্লা-হুম্মা জান্নিব্নাশ্ শায়ত্বানা ওয়া জান্নিবিশি শায়ত্বানা মা- রযাক্ব্তানা-।
অর্থ: আল্লাহর নামে আমি কর্মটি করতে যাচ্ছি। হে আল্লাহ, আমাদেরকে শয়তান থেকে হেফাজত করুন। আর আমাদের অনাগত সন্তানকেও শয়তানের কবল থেকে হেফাজত করুন। [সহীহ আল-বুখারী, ২/৭৭৬, সুনানে আবু দাউদ, ১/২৯৩ ও সুনানে ইবনে মাজাহ, ১/১৩৮]
সহবাসের পূর্বে দোয়াটি পড়লে এ সহবাসের কারণে মাতৃগর্ভে যে সন্তান আসবে কোন দিন শয়তান তার ক্ষতিসাধন করতে পারবে না।
ওলীমা : বাসর রাত অতিবাহিত হওয়ার পর বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন এবং গরীব-মিসকিনদের ওলীমা খাওয়ানো সুন্নত। ওলীমার জন্য বড় ধরনের আয়োজন করার প্রয়োজন নেই। নিজের সাধ্য অনুযায়ী ছোট খাটো আয়োজন করে বন্ধু-বান্ধবদের খানা খাওয়ালেও সুন্নত আদায় হয়ে যাবে।
এ ধরনের খারাপ ওলীমা থেকে বিরত থাকা চাই। ওলীমার সময় অবশ্যই সুন্নতের নিয়্যত থাকতে হবে। দীনদার গরীব লোকদেরই সর্বপ্রথম দাওয়াত করতে হবে। ধনীদেরও দাওয়াত করতে পারেন। লোকদেখানোই যদি ওলীমার উদ্দেশ্য হয়, তখন সওয়াব পাওয়া তো দূরের কথা, উল্টো আল্লাহ অসন্তুষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা আছে। [সহীহ আল-বুখারী, ২৭৭৮]
অসুস্থতা, চিকিৎসা ও রোগীর সেবার সুন্নতসমূহ
অসুখ-বিসুখ হলে চিকিৎসা করানো সুন্নত। চিকিৎসা তো করাবেনই, তবে শেফা আল্লাহর পক্ষ থেকেই হবে এটা বিশ্বাস করতে হবে। [আল-মিনহাজু শরহু সহীহ মুসলিম ইবনিল হাজ্জাজ, ২/২২৫]
কালোজিরা এবং মধু দ্বারা চিকিৎসা করা সুন্নত। রাসূল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা এ দু’বস্তুতে শেফা রেখেছেন।’ অনেক হাদীসে এ দু’গুণাগুণের বর্ণনা আছে। [সহীহ আল-বুখারী, ২/৮৪৮]
চিকিৎসা করানোর সময় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টিকারী বস্তুসমূহ হতে সর্তক থাকা জরুরি। [সহীহ আল-বুখারী, ২/৮৪৮]
অসুস্থ ব্যক্তিদের দেখতে যাওয়া সুন্নত। রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, ‘রোগীদের দেখতে যাও, শুশ্রুশা কর।’ হযরত জাবির (রাযি.) বর্ণনা করেন, ‘আমি একদিন অসুস্থ হয়ে পড়লে রাসূল (সা.) আমাকে দেখতে এসেছিলেন।’ [সহীহ আল-বুখারী, ২/৮৪৪]
রোগী দেখে কুশলাদি জিজ্ঞেস করে তাড়াতাড়ি চলে আসা সুন্নত। আপনি সেখানে গেঁড়ে বসে থাকলে রোগীর কষ্ট হতে পারে। তার পরিবারের লোকদের কাজ-কর্মে ব্যাঘাত ঘটতে পারে। [মিশকাতুল মাসাবীহ, ১/১৩৮] রোগীদের শান্ত¦না দেওয়া সুন্নত। আল্লাহ সবকিছুর ক্ষমতা রাখেন, আপনি সুস্থ হয়ে উঠবেন ইনশা আল্লাহ এধরনের কথাবার্তা বলবেন। ভয় সৃষ্টিকারী কোন কথা রোগীর সামনে উচ্চারণ করবেন না। [মিশকাতুল মাসাবীহ, ১/১৩৭]
রোগী দেখার সময় রোগীর উদ্দেশ্যে বলবেন, লা- বা’ছা ত্বাহূরুন্ ইন্শা----আল্লা-হ।
অর্থ: কোন ভয় নেই ইনশাআল্লাহ, এ রোগের দরুন আপনার গোনাহ মাফ হয়ে যাবে।
অথবা রোগীর সুস্থতা কামনার্থে ৭বার নিচের দোয়াটি পাঠ করবেন, আছ্আলুল্লা-হাল্ ‘আযীমা রব্বাল্ ‘র্আশিল্ ‘আযীমি আইঁ ইয়াশ্ফীকা।
অর্থ: আমি আরশে আযীমের পালনকর্তা মহান আল্লাহর দরবারে আপনার স্স্থুতা কামনা করছি। [সহীহ আল-বুখারী, ২/৮৪৪-৮৪৫]
আল্লহ তায়ালা আমাদের জীবনকে রাসূল সা. এর সুন্নতের আলোকে জীবন যাপন করার তাওফিক দান করুন। আমিন

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
roton ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১:১১ এএম says : 0
পাঁচ ওয়াক্তনামাজের নামকরন কিভাবে হল
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন