বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সম্পাদকীয়

ভারত-পাকিস্তানকে শান্তির পথেই হাঁটতে হবে

জালাল উদ্দিন ওমর | প্রকাশের সময় : ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারত শাসিত কাশ্মীরের পালওয়ামায় ভারতের সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ)’র এক গাড়ি বহরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় সংস্থাটির প্রায় চল্লিশ জন সদস্য নিহত হয়। এতে আত্মঘাতী হামলাকারীও নিহত হয়। জৈশ-ই-মোহাম্মদ নামের একটি সংগঠন এই হামলার দায়িত্ব স্বীকার করেছে। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে এবং কঠিন প্রতিশোধ গ্রহণের হুমকি দেয়। অপরদিকে পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করে। এই ইস্যুতে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে বাকযুদ্ধ শুরু হয়। এভাবে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা আবারো বৃদ্ধি পায়, বৃদ্ধি পায় যুদ্ধের হুমকি। পরিস্থিতি যখন এই পর্যায়ে, ঠিক তখনই ভারত গত মঙ্গলবার পাকিস্তানের আজাদ কাশ্মীরের অভ্যন্তরে বিমান হামলা চালিয়েছে। ভারতের দাবি মতে, এই হামলায় ৩০০ জঙ্গী নিহত হয়েছে। পাকিস্তান বলেছে, নিহতদের এ সংখ্যা সঠিক নয়। পাকিস্তান পাল্টা ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দিয়েছে। পরিস্থিতি যে, অবনতির দিকেই যাচ্ছে সেটা অনুমান করা যায়।
ভারত ও পাকিস্তান উপমহাদেশের দুটি শক্তিধর দেশ। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসন থেকে দেশ দুটি স্বাধীনতা অর্জন করে। সেই সময় থেকেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সব সময় একটা দ্ব›দ্ব লেগেই আছে। সময়ে সময়ে এই দ্ব›দ্ব তীব্র হয়, আবার সময়ে সময়ে এই দ্ব›দ্ব শীতল হয়। দেশ দুটির মধ্যে অতীতে একাধিকবার যুদ্ধ হয়েছে। যাতে অনেক মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। তাই দেশ দুটির মধ্যে দ্ব›দ্ব তীব্র হলে উপমহাদেশ জুড়েই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং যুদ্ধের আশংকা দেখা দেয়। মানুষ আতংকিত হয়ে পড়ে এবং তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়। ভারত ও পাকিস্তান উভয়েই পারমাণবিক শক্তিধর দেশ হবার কারণে দেশ দুটির মধ্যকার দ্বন্দ্বে দুশ্চিন্তা, টেনশন এবং আতংক বহুগুণে বেড়ে যায়। কারণ যুদ্ধ যদি শুরু হয়ে যায় এবং সেই যুদ্ধে দেশ দুটি যদি পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার করে তাহলে ভারত-পাকিস্তানের জনপদসমূহ হিরোশিমা, নাগাসাকির মতো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হবে। মুহূর্তেই মারা পড়বে কোটি কোটি মানুষ। আগুনের লেলিহান শিখায় মানব সভ্যতার সবকিছুই পুড়ে ছারখার হয়ে যাবে। তাই ভারত-পাকিস্তান দ্ব›দ্ব মানেই বাড়তি টেনশন, বাড়তি উত্তেজনা এবং বাড়তি আতংক। তাই শান্তিকামী মানুষের পক্ষ থেকে ভারত ও পাকিস্তানের রাষ্ট্রনেতা, রাজনীতিক এবং সামরিক বাহিনীর সদস্যদের প্রতি অনুরোধ- অনুগ্রহ করে যুদ্ধের পথে না হেঁটে শান্তির পথে হাঁটেন। যুদ্ধের মাঠে খেলতে না নেমে আলোচনার টেবিলে বসেন। প্রত্যেকে যদি অপরকে তার ন্যায্য অধিকার প্রদান করে, তাহলে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তখন কোনো যুদ্ধ-সংঘাত থাকবে না। শান্তির স্বার্থেই এটা দরকার।
আয়তন, জনসংখ্যা এবং সামরিক শক্তির মাপকাঠিতে ভারত অনেক শক্তিশালী এবং বড় দেশ। অপরদিকে আয়তন, জনসংখ্যা এবং সামরিক শক্তির বিচারে পাকিস্তান অনেক ছোট এবং দুর্বল দেশ। কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে দুই দেশের মধ্যে স্নায়ুযুদ্ধ লেগেই আছে। দেশ দুটি পাল্লা দিয়ে সামরিক শক্তি কেবল বাড়াচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় দুটি দেশই এখন পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হয়েছে। বহু আগেই দেশ দুটি পারমাণবিক বোমার সফল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে এবং সময়ের সাথে সাথে পারমাণবিক বোমার মজুদ বাড়িয়ে চলছে। নিজেদের শক্তিমত্তা প্রমাণের জন্য, দুটি দেশই কিছুদিন পর পর পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম ক্ষেপনাস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। পারমাণবিক অস্ত্রের পাশাপাশি দুটি দেশই সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী এবং নৌবাহিনীর শক্তি বাড়াচ্ছে এবং প্রতিনিয়তই এসব বাহিনীতে যুক্ত করছে নতুন ও অত্যাধুনিক ট্যাংক, যুদ্ধবিমান এবং সাবমেরিনসহ ভয়ানক সব মারণাস্ত্র। এভাবে দেশ দুটি অব্যাহতভাবে সামরিক শক্তি কেবল বাড়িয়েই চলেছে। দুটি দেশই প্রতিবছর তাদের বাজেটের বিরাট একটি অংশ সামরিক খাতে ব্যয় করে। এভাবে দেশ দুটির মধ্যে চলছে সামরিক শক্তি বাড়ানোর অব্যাহত প্রতিযোগিতা। অথচ দেশ দুটির অর্ধেক জনগোষ্ঠি অশিক্ষা, দারিদ্র্য এবং পুষ্ঠিহীনতার শিকার। এখনো বিশাল জনগোষ্ঠি দারিদ্র্য সীমার নিচে বাস করে।
কাশ্মীর ইস্যুই ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার দ্বন্দ্বের মূল কারণ। ভারতের দাবি কাশ্মীর ভারতের অংশ। অপরদিকে পাকিস্তানের দাবি কাশ্মীর তার অংশ। ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের জনগণ দীর্ঘদিন ধরে ভারতের কাছ থেকে স্বাধীন হবার জন্য লড়ছে। কাশ্মীরী জনগণের এই স্বাধীনতার আন্দোলনকে ভারত বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা হিসেবে অভিহিত করেছে এবং কাশ্মীরীদের এই আন্দোলনে সমর্থন দানের জন্য পাকিস্তানকে দোষারোপ করে আসছে। কাশ্মীরীদের আন্দোলনকে দমন করার জন্য ভারত বরাবরই কঠোর নীতি গ্রহণ করে আসছে। কাশ্মীরে ভারত কয়েক লাখ সেনা মোতায়েন করেছে। অপরদিকে পাকিস্তান ঘোষণা করেছে, তারা কাশ্মীরী জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নৈতিক সমর্থন দিয়ে যাবে। ভারতের দাবি, পাকিস্তান তার আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে আর পাকিস্তানের দাবি ভারত তাদের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে। আবার ভারত পাকিস্তান উভয়েই তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করে। সীমান্তরেখায় প্রায়ই ভারত-পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি চলে। আর এতে সৈনিকসহ নিরাপরাধ মানুষের প্রাণ যায়। দুদিন পরে পতাকা বৈঠক হয়, শান্তির প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হয়। নিরাপদ জীবনের আশায় মানুষ বুক বাঁধে। কিন্তু কয়েকদিন যেতে না যেতেই ভারত পাকিস্তান আবারো দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে। আবারো দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ফলে দেশ দুটির সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত মানুষের জীবনে কোনো স্বস্তি ও নিরাপত্তা নেই। এভাবে সীমান্ত এলাকার মানুষেরা বছরের পর বছর ধরে দুর্বিষহ এক কষ্টকর জীবন কাটিয়ে দিচ্ছে। মূলত ভারত-পাকিস্তানের দ্বন্দ্বের চাকায় বছরের পর বছর ধরে পিষ্ঠ হচ্ছে কাশ্মীর এবং সীমান্ত এলাকার মানুষ।
কাশ্মীর ইস্যুই যেহেতু ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার দ্বন্দ্বের মূল কারণ, সেহেতু কাশ্মীর সমস্যার সমাধানের মধ্যেই ভারত পাকিস্তানের মধ্যকার দ্ব›দ্ব নিরসনের মূল চাবিকাঠি নিহিত রয়েছে। সুতরাং ভারত-পাকিস্তানের উচিত দীর্ঘমেয়াদী দ্বদ্ব, সংঘাত এবং শত্রুতা জিঁইয়ে না-রেখে তাদের মধ্যকার সমস্যার সমাধান করে শান্তি, সম্প্রীতি এবং বন্ধুত্বের পথে হাঁটা। তার জন্য কাশ্মীরের ভাগ্য কাশ্মীরী জনগণের হাতেই ছেড়ে দিতে হবে। কাশ্মীরী জনগণ ভারতের সাথে থাকবে, নাকি পাকিস্তানের সাথে থাকবে, নাকি নিজেরা আলাদা স্বাধীন দেশ হিসেবে থাকবে, সেটা তাদের ওপর ছেড়ে দেয়া হোক। এটা কাশ্মীরী জনগণের নিজস্ব ব্যাপার এবং এটা কাশ্মীরী জনগণের ন্যায্য এবং বৈধ অধিকার। জাতিসংঘ ঘোষিত সার্বজনীন মানবাধিকার সনদে মানুষের এই অধিকারের স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। সুতরাং কাশ্মীরী জনগণের ভাগ্য কাশ্মীরীদের হাতে ছেড়ে দেয়া হোক এবং সেখানে গণভোটের আয়োজন করে ফয়সালা করা হোক। এভাবে কিন্তু গণভোটের আয়োজন করে পৃথিবীর অনেক ভূখণ্ডের অধিবাসীরা নিজেদের ভবিষ্যত নির্ধারণ করেছে। উদাহরণ হিসেবে এখানে তিনটি ঘটনার কথা উল্লেখ করছি। পূর্ব তীমুরের জনগণ স্বাধীনতার জন্য গণভোটের আয়োজন করে এবং সেই গণভোটে পূর্ব তীমুরের জনগণ স্বাধীনতার পক্ষে ভোট দেয়। সেই ভোটের ফলাফল অনুসারে পূর্ব তীমুর ইন্দোনেশিয়া থেকে স্বাধীনতা লাভ করেছে এবং বর্তমানে পূর্ব তীমুর একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। এর মাধ্যমে ইন্দোনেশিয়া এবং পূর্ব তীমুর উভয় ভূখণ্ডে শান্তি ফিরে এসেছে। একইভাবে স্বাধীনতার প্রশ্নে দক্ষিণ সুদানের জনগণ গণভোটের আয়োজন করেছে এবং সেই গণভোটে দক্ষিণ সুদানের জনগণ স্বাধীনতার পক্ষে ভোট দিয়েছে। গণভোটের ফলাফল অনুযায়ী দক্ষিণ সুদান, সুদান থেকে স্বাধীনতা অর্জন করেছে এবং বর্তমানে দক্ষিণ সুদান একটি স্বাধীন-সার্বভৌম দেশ। এর মাধ্যমে এতদাঞ্চলে শান্তি ফিরে এসেছে। একইভাবে ব্রিটেন থেকে স্বাধীনতার প্রশ্নে স্কটল্যান্ডের জনগণ গণভোট আয়োজন করেছে। স্বাধীনতার প্রশ্নে স্কটল্যান্ডের জনগণ ভোট দেয়। কিন্তু স্কটল্যান্ডের বেশির ভাগ জনগণ ব্রিটেন থেকে স্বাধীন হবার পক্ষে ভোট না দিয়ে ব্রিটেনের সাথে থাকার পক্ষেই ভোট দেয়। ফলে স্কটল্যান্ড আগের মতই ব্রিটেনের অর্ন্তভুক্ত রয়েছে। আর এই গণভোটের মাধ্যমে স্কটল্যান্ডের জনগণের মধ্যেকার অমিমাংসীত একটি বিষয়ের সমাধান হয়েছে। ফলে স্কটল্যান্ডেও শান্তি ফিরে এসেছে। পূর্ব তীমুর, দক্ষিণ সুদান এবং স্কটল্যান্ডের মতো কাশ্মীরের ভবিষ্যত নির্ধারণের বিষয়টিও কাশ্মীরের জনগণের ওপর ছেড়ে দেয়া হোক। আর এর মাধ্যমে কাশ্মীর বিষয়ে একটি স্থায়ী সমাধান বেরিয়ে আসবে। ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যকার দ্বন্দ্বের কারণে এ দুটি দেশের মানুষই যে কেবল ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে তা নয়, এ দ্বন্দ্বের কারণে পুরো উপমহাদেশের মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ভারত পাকিস্তানের মধ্যকার দ্বন্দ্বের কারণেই সার্ক আজ একটি অকার্যকর সংস্থায় পরিণত হয়েছে।
আমাদের ধারণা, বড় আকারে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হবে না। এর প্রকৃত কারণ হচ্ছে, দু’ দেশই পারমাণবিক অস্ত্রে সমৃদ্ধ। আয়তন, জনসংখ্যা, সামরিক বাহিনীর কলেবর- সবকিছুতে ভারত অনেক এগিয়ে থাকলেও পাকিস্তানের হাতে থাকা পারমাণবিক অস্ত্র এসব কিছুকে ব্যালেন্স করেছে। অধিকন্তু স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার প্রশ্নে পাকিস্তানের জনগণ যতটা ঐক্যবদ্ধ, ভারতের জনগণ ততটাই বিভক্ত। সামরিক বাহিনীর বাইরে পাকিস্তানের বেসামরিক জনগণের অনেকেই স্বেচ্ছায় দেশ রক্ষায় যুদ্ধ করবে এবং হাসিমুখে জীবন দেবে। কিন্তু ভারতের ক্ষেত্রে বেসামরিক লোকজনের মধ্য হতে স্বেচ্ছায় দেশ রক্ষায় যুদ্ধ করে জীবন দেবে, এরকম লোকের সংখ্যা নিতান্তই কম। মনে রাখতে হবে, শক্তি হচ্ছে শান্তি ও নিরাপত্তার গ্যারান্টি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়া পরস্পরের চরম শত্রু হলেও আজ পর্যন্ত তারা একে অন্যকে আক্রমণ করেনি এবং তাদের মধ্যে এখনো সরাসরি কোনো যুদ্ধ হয়নি। এমনকি ভবিষ্যতেও রাশিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধ হবার কোনো আশঙ্কা নেই। একই কারণে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যেও যুদ্ধ হবে না। ভারত এবং চীনের মধ্যেও হবে না। একইভাবে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যেও হবে না। কারণ এরা সবাই পারমাণবিক অস্ত্রে সমৃদ্ধ দেশ। শক্তির এই সূত্র প্রাণিজগতের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। এজন্য পৃথিবীর কোনো পাহাড়-জঙ্গলে বাঘ এবং সিংহ একসাথে বসবাস করে না। যেখানে বাঘ আছে, সেখানে সিংহ নাই। আর যেখানে সিংহ আছে, সেখানে বাঘ নেই। আবার বাঘ এবং সিংহকে অন্য প্রাণিরা আক্রমণও করে না। বাঘ-সিংহের শক্তিই তাদের নিরাপত্তাকে নিশ্চিত করেছে। এটাই চিরন্তন সত্য। সুতরাং পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী দেশ হবার কারণে ভারত-পাকিস্তান একে অপরকে সমীহ করবে এবং তাদের মধ্যে সর্বাত্মক যুদ্ধ হবে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন