আসন্ন ডাকসু নির্বাচনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সলিমুল্লাহ মুসলিম হল সংসদের এক স্বতন্ত্র প্রার্থীকে বইমেলা থেকে তুলে নিয়ে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের চাপ দিয়ে রাতভর নির্যাতন চালানো হয়েছে। গত শুক্রবার রাতভর হলের ১১১ নাম্বার কক্ষে আটকে রেখে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন চালালে ওই প্রার্থী নিজের মনোনয়ন প্রাত্যাহার করতে সম্মত হন। শনিবার সকালে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের দরখাস্তসহ হল অফিসে নিয়ে আসা হয়। পরে হল প্রভোস্টের কাছে ওই প্রার্থী বিষয়টি খুলে বললে প্রভোস্ট প্রত্যাহার পত্রটি ছিঁড়ে ফেলেন এবং নির্যাতনের বিষয়ে একটি অভিযোগ পত্র জমা দিতে বলেন। ভুক্তভোগী ওই প্রার্থীর নাম মাহবুবুর রহমান সাজিদ। তিনি এস এম হল ছাত্র সংসদের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করছেন। ছাত্রলীগের প্যানেল থেকে একই পদে প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন মোস্তফা সরকার মিসাদ। ঘটনার বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হল প্রশাসনকে মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন। সূত্রে জানা যায়, মাহবুব নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য হল সংসদ থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার পর থেকেই ছাত্রলীগের একটি পক্ষ তাঁকে সরানোর জন্য চাপ সৃষ্টি করে আসছিলেন। কিন্তু তিনি সিদ্ধান্তে অটল থাকায় শুক্রবার রাত ৯টায় অমর একুশে গ্রন্থমেলা থেকে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। মাহবুবুর রহমান সাজিদ এ বিষয়ে বলেন, ছাত্রলীগ প্যানেলের সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোস্তফা সরকার মিসাদ, মুজাহিদ, আরিফ, অনিকসহ পাঁচ থেকে সাতজন আমাকে জোর করে বইমেলা থেকে ধরে আনে। পরে হলের ১১১ নম্বর কক্ষে আটকে রেখে প্রথম দফায় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। এরপর গভীর রাত হলে যখন পুনরায় নির্যাতন করা হয় তখন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করতে সম্মত হই। এরপর সকাল ১০টার দিকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার সম্পর্কে একটি দরখাস্ত লিখে হল অফিসে যেতে বলা হয়। তিনি আরো বলেন, পরবর্তী সময়ে যখন তিনি হলের প্রভোস্টকে বিষয়টি জানান তখন হল প্রভোস্ট প্রত্যাহারপত্রটি ছিঁড়ে ফেলেন। পরে তাঁর ওপর নির্যাতনের বিষয়টি সম্পর্কে একটি অভিযোগ লিখতে বলেন। আজ (রবিবার) ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিবেন বলে জানান। এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোস্তফা সরকার মিসাদকে ফোন দেয়া হলেও তিনি কল ধরেননি। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, হল প্রশাসন তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য হলের ছাত্রলীগ মনোনীত জিএস (সাধারণ সম্পাদক) প্রার্থী জুলিয়াস সিজারকে দায়িত্ব দিয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে জুলিয়াস সিজার বলেন, এটা একটা দুর্ঘটনা ঘটেছে। আজ সকালে তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্ব আমার ওপর দেওয়া হয়েছে। আমি তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছি। আগামীতে যদি তার উপর এ ধরনের কোনো নির্যাতন করা হয় তবে আমি তাঁর হয়ে কাজ করব।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন