বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

রাজনীতিতে আমূল পরিবর্তনের ডাক

যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প : বানি

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ৪ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

বাণিজ্যিক দুনিয়ায় বহুজাতিক কোম্পানির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আর রাজনীতিতে আমূল পরিবর্তনের ডাক দিয়ে ২০২০ সালে ডেমোক্রেট পার্টির পক্ষ থেকে ফের মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে মনোনয়নের লড়াইয়ে নামার ঘোষণা দিয়ে প্রচারণা শুরু করেছেন বামপন্থী রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স। ৭৭ বছর বয়সী ভারমন্টের এই স্বতন্ত্র সিনেটর ছোটবেলায় যেখান থেকে বেড়ে উঠেছেন, সেই নিউ ইয়র্ক সিটির পাশে জন্মস্থান ব্রুকলিনে নিজের সমর্থকদের এক প্রচার অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে ‘সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করার’ পাশাপাশি যুবকদের কর্মসংস্থান, ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। ২০১৬ সালের মার্কিন প্রেসিডেন্ট পদে হিলারি ক্লিনটনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমে ডেমোক্রেট তরুণদের নজর কাড়েন বৃদ্ধ বার্নি স্যান্ডার্স। পরে অবশ্য তিনি হিলারির কাছে হেরে যান। কিন্তু নিজের বিশ্বাস ‘বামপন্থার’ লড়াই অব্যাহত রাখেন। জরিপ অনুযায়ী, এবার বেশ শক্ত অবস্থানে রয়েছেন স্যান্ডার্স। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বার্নি স্যান্ডার্স প্রচারকাজের শুরুতেই তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির কথা তুলে ধরেন। এসব প্রতিশ্রুতির মধ্যে রয়েছে কর্মসংস্থান তৈরির মাধ্যমে সব মার্কিন নাগরিকের জন্য কাজের নিশ্চয়তা, ন্যূনতম মজুরি দ্বিগুণ করা, ‘ব্যাপকভাবে’ অভিবাসন নীতির পুনর্গঠন করা, যেখানে তালিকাভুক্তির বাইরে থাকা লাখো অভিবাসীও দেশটিতে থাকার সুযোগ পাবেন, টিউশন ফিমুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ তৈরি করা, স্বাস্থ্যসেবা খাত পুনর্গঠন করা। এর আগে ম্যাসাচুসেটসের সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন, নিউ সার্জির সিনেটর করি বোকার, সা আন্তানিওর মেয়র জুলিয়ান কাস্ত্রোসহ ডেমোক্রেট নেতা কার্স্টেন গিলিব্র্যান্ড, কমলা হ্যারিস, জন ডিলান প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতার জন্য লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, এবারই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক নারী প্রার্থী প্রেসিডেন্ট পদের মনোনয়নের জন্য লড়বেন। আর বার্নি স্যান্ডার্স যদি ডেমোক্রেট পার্টি থেকে মনোনয়ন পেয়ে যান, তবে তিনিই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মার্কিন ইতিহাসে সবচেয়ে বয়োজ্যেষ্ঠ প্রার্থী। রোববার মার্কিন বার্তা সংস্থা থমসন রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বার্নি স্যান্ডার্স আগের মনোনয়নের লড়াইয়ের প্রচারের সময় কখনই তাঁর ব্যক্তিজীবনকে খুব একটা সামনে আনেননি। তিনি তাঁর রাজনৈতিক পরিকল্পনা আর আয়বৈষম্য কমানোর উদ্যোগগুলোর কথাই বিস্তৃতভাবে প্রচার করেছেন। কিন্তু এবার বার্নি স্যান্ডার্স নিউ ইয়র্কের ছোট্ট ভাড়ার অ্যাপার্টমেন্টে তাঁর দারিদ্র্যক্লিষ্ট ছোটবেলার কথাও তুলে ধরছেন। বলছেন, তার বাবা ছিলেন এক দরিদ্র ইহুদি রং বিক্রেতা, দারিদ্র্যের কশাঘাত থেকে মুক্তির জন্য ছিল তার লড়াই, তার পরিবার ছিল নাৎসিদের দ্বারা নির্যাতিত। সেখান থেকে শেখা মূল্যবোধই তার জীবনকে প্রভাবিত করেছে। আর এই শহরেরই বিত্তশালী রিয়াল এস্টেট ডেভেলপারের সন্তান বর্তমান রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বার্নি স্যান্ডার্স সাম্প্রতিক মার্কিন ইতিহাসে ডোনাল্ড ট্রাম্প সবচেয়ে ভয়ানক প্রেসিডেন্ট হিসেবে উল্লেখ করে বিগত শাটডাউনের দিনগুলোতে সাধারণ সরকারি কর্মকর্তাদের কীভাবে দিন পার করতে হয়েছে, সেই কষ্টের উপলব্ধির কথাও বলেন। বার্নি স্যান্ডার্স বলেন, আমি এমন কোনো বাবাকে পাইনি যে আমাকে উঁচু উঁচু ভবন, জুয়ার আসর আর কাউন্টি ক্লাব তৈরির টাকা দেবে। কিন্তু আমার তার চেয়েও মূল্যবান কিছু ছিল। রোলমডেল হিসেবে অনুকরণের মতো আমার একজন বাবা ছিলেন, যিনি আমাকে সাতসমুদ্র সাঁতরে পার হওয়ার জন্য অবিশ্বাস্য রকমের অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। কিন্তু তিনি যখন তাঁর জীবন শুরু করেছিলেন, তখন তাঁর পকেটে একটি টাকাও ছিল না। বার্নি স্যান্ডার্স বলেন, আজকে আমরা এখানে প্রেসিডেন্ট পদের মনোনয়নের জন্য প্রচারকাজের উদ্বোধন করেছি। আপনার জানার অধিকার আছে, আমি কোথা থেকে এসেছি। কারণ, যৌবনে আমরা যেখানে বেড়ে উঠি, সেই পরিবারের মূল্যবোধ আমাদের গভীরভাবে প্রভাবিত করে। ‘আমি এমন কোনো পরিবার থেকে আসিনি, যেখানে বহুজাতিক সাম্রাজ্য তৈরির মধ্য দিয়ে আবাসন বৈষম্য তৈরির নীতির শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। আমি আবাসন-বৈষম্য নীতির তীব্র প্রতিবাদ করি।’ বামপন্থী এই সিনেটর আরো বলেন, ‘আমি এই প্রচারকাজে আপনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। খুব পরিষ্কারভাবে বলতে চাই- লোভ, ঘৃণা আর মিথ্যা কোনো সরকারের অন্তর্নিহিত নীতি হতে পারে না।’ সিএনএন, বিবিসি, রয়টার্স।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন