বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ধর্ম দর্শন

বিশ্বনবী (সা:)-এর যুগে সম্পদের ব্যবহার

মুহাম্মদ মনজুর হোসেন খান | প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

সরকারি পদ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের যথাযথ ব্যবহার একটি রাষ্ট্রের উন্নয়নের অন্যতম প্রধান উপাদান। সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ওপর রাষ্ট্র পরিচালনার ভার থাকে বিধায় তাদের মধ্যে স্বচ্ছতা, দায়িত্ববোধ ও জবাবদিহিতা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। মহানবী (সাঃ) সরকারি পদ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার শিক্ষা দিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর শিক্ষার আলোকে প্রত্যেক সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীকে আল্লাহর আদালতে জবাবদিহিতা করতে হবে। এ অনুভুতি জাগ্রত করেই তিনি ঐসব সাহাবীর মধ্যে সরকারি পদ বণ্টন করেন, যাদের উক্ত পদ গ্রহণের প্রতি কোন আকাক্সক্ষা ছিলো না। ইসলামের আলোকে কাউকে সরকারি পদে নিয়োগদানের ক্ষেত্রে তার মধ্যে অবশ্যই নির্ধারিত গুণাবলি থাকতে হবে এবং তাদেরকে অবশ্যই নির্দিষ্ট নীতিমালার আলোকে পরিচালিত হতে হবে। ইসলাম এ শিক্ষাও দিয়েছে যে, সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সবসময় রাষ্ট্রের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করতে হবে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদকে নিজ মালিকানাধীন সম্পদের ন্যায় মনে করা ও নিজ প্রয়োজনে ব্যবহারের কোন সুযোগ নেই।
সরকারি পদমর্যাদার আরবি প্রতিশব্দ মানসিব, এর বহুবচন মানাসিব, আভিধানিক দৃষ্টিকোণ থেকে শব্দটির অর্থ- পদ, পদমর্যাদা, অবস্থান, দায়িত্ব ও স্তর ইত্যাদি। এর ইংরেজি প্রতিশব্দ উবংরমহধঃরড়হ অত্র প্রবন্ধে মানসিব ও উবংরমহধঃরড়হ দ্বারা সরকারি পদ ও দায়িত্ব উদ্দেশ্য।
রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন দায়িত্ব, পদ ও চাকুরি সম্মান ও মর্যাদার উপায় হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। তাছাড়া রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব লাভ নাগরিকের অন্যতম অধিকার হিসেবেও গণ্য করা হয়। এ কারণে পদ অর্জনে লবিং, সুপারিশ, ঘুষ ও গিফট প্রদান ইত্যাদি বিষয়কে বৈধ মনে করা হয়। কিন্তু ইমলামে পদের চাহিদা প্রকাশ করাকে নেতিবাচক হিসেবে দেখা হয়েছে। আব্দুর রহমান ইবন সামুরা বলেন, মহানবী (সাঃ) আমাকে বললেন: হে আব্দুর রহমান, দায়িত্ব চেয়ো না। কেননা যদি তোমাকে তোমার চাওয়ার কারণে দায়িত্ব দেয়া হয়, তাহলে তোমাকে নিসঃঙ্গ ছেড়ে দেয়া হবে( দায়িত্ব পালনে তুমি আল্লাহর সাহায্য হতে বঞ্চিত হবে।)পক্ষান্তরে যদি তা না চাইতেই তোমাকে দেয়া হয় তুমি সে বিষয়ে ( আল্লাহর পক্ষ হতে) সাহায্যপ্রাপ্ত হবে ।
আবু মুসা আশআরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, দু‘ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর কাছে এসে দায়িত্ব চাইলে তিনি তাদেরকে বললেন: আল্লাহর কসম, আমরা এমন কাউকে কর্মকর্তা নিযুক্ত করব না, যে দায়িত্ব চায় এবং এমন ব্যক্তিকেও নয়, যে দায়িত্ব লাভের আকাক্সক্ষা করে।
এ কারণেই অধিকাংশ উলামায়ে কিরাম ও সালাফ রাণ্ট্রীয় দায়িত্বকে এড়িয়ে চলতেন। ইসলাম কোন পদ চেয়ে নেয়াকে নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি কেউ কোন পদ বা দায়িত্ব পেলে তা যথাযথভাবে পালনের নির্দেশ দিয়েছে।
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর শিক্ষা অনুসারে পদ ও সম্পদ আল্লাহ প্রদত্ত আমানত। এই বিষয়ে মাওলানা আমীন আহসান ইসলাহী রহ. বলেন, “শুধু এমন নয় যে, ইসলাম এ দায়িত্ব ও পদকে সাধারণ আমানত হিসেবে বিবেচনা করেছে; বরং ইসলাম এগুলোকে আল্লাহ প্রদত্ত আমানত হিসেবে সাব্যস্ত করেছে। সাধারণত আধুনিক শাসনব্যবস্থায় এগুলোকে মৌলিকভাবে আমানত জ্ঞান করাই হয় না। যদি কোথাও বিবেচনা করা হয়ও, তবে তা জাতীয় আমানত হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ কারণে যেখানে জাতীয় মর্যাদা ও গৌরবের বিষয়ে জোর দেয়া হয় অথবা জাতীয়ভাবে জবাবদিহিতার মুখোমুখি হওয়ার ভয় থাকে, সেখানে বাহ্যিকভাবে একটা পর্যায় পর্যন্ত আমানতদারি বহাল থাকে। কিন্তু যেখানে এই মানসিকতা সজাগ নেই অথবা জবাবদিহিতার ঝামেলা নেই, সেখানে সব ধরনের খেয়ানতের জন্যে সর্ব অঙ্গ উন্মুক্ত থাকে এবং অন্তঃকরণ হয়ে পড়ে পুরোপুরি অনুভুতিশূন্য। বিপরীতে ইসলাম তাঁকে আল্লাহ প্রদত্ত আমানত সাব্যস্ত করে এর তদারকি করার জন্যে দু ধরনের দৃষ্টিকে নিযুক্ত করেছে। জাতির দৃষ্টি থেকে হয়ত নিজেকে আড়াল করা যায়, কিন্তু আল্লাহর দৃষ্টি থেকে তো কোন গোপন খেয়ানতও এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই”।
সরকারি পদ ও জাতীয় সম্পদ আল্লাহ প্রদত্ত আমানত হওয়ার ব্যাপারে অসংখ্য হাদীস রয়েছে। আবু যার গিফারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী করীম (সাঃ) এর কাছে আবেদন করলাম, আমাকে রাষ্ট্রীয় কোন দায়িত্ব নিযুক্ত করুন। তিনি আমার কাঁধে তার পবিত্র হাত রেখে বললেন: হে আবু যার! তুমি (এ ব্যাপারে) দুর্বল। কেননা এাঁ আমানত এবং কেয়ামতের দিন তা অপমান ও অনুতাপের কারণ হবে। তবে যে তা ন্যায়ের সাথে গ্রহণ করবে এবং তার হক আদায় করবে তার বিষয়টি ভিন্ন।
হাদীসে সরকারি পদ ও দায়িত্বের অধিকারীদের জন্যে ‘রায়িন’ শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। অভিধানে এর অর্থ হলো, তদারককারী, তত্ত্বাবধায়ক, রাখাল, রক্ষক।
সরকারি দায়িত্ব ও পদের দায়িত্বশীল ব্যক্তিগণও দায়িত্বের বিচারে রক্ষক ও রাখাল। তদারককারী বা রাখালের দায়িত্ব হলো রক্ষা করা এবং মালিকের নির্দেমনা অনুসারে চলা। ইবনে উমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন: শুনো, তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেকেই তার দায়িত্বাধীন বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে। এজন্যেই নববী নির্দেশনার আলোকে সে সময় পর্যন্ত কেউ নিজ কর্তব্য পালনে সফল হবে না, যতক্ষণ না সংরক্ষক ও দায়িত্বশীলের ভুমিকায় সে পদ ও সম্পদের ব্যবহার না করে।
ইসলাম পদ ও সম্পদ সংক্রান্ত যে ধারণা পেশ করেছে তার সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো, জবাবদিহিতা। রাষ্ট্রপ্রধানের অন্যতম কর্তব্য হলো, নিজ দায়িত্বাধীনদের তদারকি করে তাদের ত্রুটি ও মন্দকর্মের জন্যে কৈফিয়ত তলব করা। অবশ্য ইসলামের প্রকৃত দাবি হলো, ব্যক্তি নিজ অবস্থা ও কর্ম সম্পর্কে নিজেই পরিপূর্ণ হিসাব করবে। এর মাধ্যমে সে মূলত মহান প্রভুর দরবারে উপস্থিত হয়ে হিসাব দেয়ার প্রস্তুতি গ্রহণ করে। আল্লাহ বলেন: সাবধান! যাবতীয় কর্তৃত্ব কেবল তারই, আর তিনি দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী।
অতএব সরকারি দায়িত্বশীলদেরকে অবশ্যই এ বিশ্বাস রাখতে হবে যে, তাদেরকে আল্লাহর দরবারে হিসাবের মুখোমুখি হতে হবে।সাথে সাথে রাষ্ট্রপ্রধান এমনকি সাধারণ জনগণও এ ব্যাপারে জবাবদিহিতা গ্রহণ করতে পারে।তবে এর অর্থ যথেচ্ছা আচরণ করার অধিকার প্রদান নয়। আবু ফিরাস হারিছা(রাঃ) বর্ণনা করেন, একবার উমার(রাঃ) নিজ বক্তব্যে বলেন: আমি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের এ জন্য নিযুক্ত করিনি যে, তারা বিনা কারণে তোমাদেরকে প্রহার করবে ও অন্যায়ভাবে তোমাদের সম্পদ নিয়ে যাবে।যার প্রতি এই জুলুম করা হবে, সে যেন এর সংবাদ নিয়ে আমার কাছে আসে, যাতে আমি ঐ পদাধিকারী বা বিচারক থেকে বদলা নেয়ার ব্যবস্থা করতে পারি। আমর বিন আস (রাঃ) বলেন, যদি কোন কর্মকর্তা নিজের কতৃত্বাধীন কোন ব্যক্তিকে শিক্ষামূলক শাস্তি প্রদান করে তাহলেও কি আপনি তার কাছ থেকে বদলা নেয়ার ব্যবস্থা করবেন? তখন উমার (রাঃ) বললেন, হ্যাঁ, আল্লাহর শপথ, যার হাতে আমার প্রাণ! আমি অবশ্যই বদলা নেয়ার ব্যবস্থা করব। এর কারণ হলো আমি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে নিজের কাছ থেকে বদলা নিতে দেখেছি। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর যুগে বিচার ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে বিশেষ কোন পার্থক্য ছিলো না। উমার (রাঃ) এ দুই বিভগকে সর্ম্পূণ পৃথক করেন। যার ভিত্তিতে রাষ্ট্রের সর্বস্তরের কর্মকর্তা কর্মচারী সুচারুরুপে নিজ দায়িত্ব আঞ্জাম দেয়ার ব্যাপারে আদালতের সামনে জবাব দিতে বাধ্য হন।
কুরআন মাজিদে পদ ও সম্পদের দায়িত্ব অর্পণের মৌলিক নীতি বর্ণনা করা হয়েছে: নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদেরকে আমানতকে তার উপযুক্ত ব্যক্তিদেও কাছে পৌছে দিতে হুকুম করছেন। কুরআনে মাজীদের আয়াতের আলোকে পদ ও দায়িত্ব গ্রহণের জন্য বুনিয়াদি শর্ত হলো যোগ্যতা। এই যোগ্যতার বিষয়টি হাদিসে শরীফে আলোচিত হয়েছে এই শব্দে: লোকদের জন্যে বিজ্ঞ প্রতিনিধি আবশ্যক। ‘ উরাফা’ শব্দটি ‘ আরীফ’এর বহুবচন।‘ধারীফ’ শব্দের ব্যাখ্যায় ইবনে মানযূর আফ্রিকী লিখেছেন:আরীফ ঐ ব্যক্তি গুপ্রশাসন সংক্রান্ত বিষয়াদি সম্পর্কে অবগতির কারণে প্রতিষ্ঠিত ও বরণীয়। সরকারি পদ ও সম্পদের দায়িত্বপূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করা তখনই সম্ভব হবে, যখন দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিবর্গের মধ্যে যোগ্যতা নিশ্চিত হবে। সুন্নাহর আলোকে ঐসব যোগ্যতার বিবরণ নিম্নরূপ-
যাকে দায়িত্ব প্রদান করা হবে তার মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা পদ সম্পর্কে অবগতি ও পরিপূর্ণ জ্ঞান থাকা আবশ্যক। তবেই সে এ পদ বা সম্পদেও দায়িত্ব যথাযথ সংরক্ষণও করতে পারবে। ইফসুফ আ. মিসরের বাদশাহর কাছে ঐ দেশের রাষ্ট্রীয় কোষাগারের দায়িত্ব প্রত্যাশা করেন; তিনি বলেছিলেন: আমাকে এ দেশের ধনভান্ডার সমূহের দায়িত্বে নিযুক্ত করুন। নিশ্চয় আমি সংরক্ষক ও জ্ঞাত। তবে এ আয়াতের ইলম বা জ্ঞান দ্বারা সকল বিষয়ের উদ্দেশ্য নয়। বরং উদ্দেশ্য হলো ঐ পদ বা দায়িত্বের ইলম। ‘আস-সিয়াসাতুশ শারঈয়্যাহ’ নামক গ্রন্থে ইলম- এর পরিচয় এভাবে প্রদান করা হয়েছে-“ইলম শব্দের মর্ম ও অর্থ অনেক ব্যাপ্ত ও প্রশস্ত, প্রায়োগিক ও তাত্তি¡ক সকল বিষয় এই শব্দের অর্থের আওতাধীন। কিন্তু এখানে ইলম দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, এ পরিমাণ ইলম, যা সংশ্লিষ্ট বিভাগ বা কাজের যাবতীয় তত্ত¡কে অন্তর্ভুক্ত করে”। ইলম বা যোগ্যতা যাচাইয়ের পরিমাপদন্ডও হলো, ইলম। যে কমিশন বা পরিষদ কোন ব্যক্তিকে কোন পদের জন্যে নির্ধারণ করে সে নির্বাচন কমিটির ইলমের বিষয়টি বিবেচনা করাও আবশ্যক।আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন: যে ব্যক্তি কোন মুসলিমকে সম্প্রদায়ের কোন কাজের দায়িত্বে নিযুক্ত করলো এ অবস্থায় যে, সে জানে, মুসলিমদের মধ্যে এ ব্যক্তির চেয়ে অধিক ভালো কেউ আছে, যে কিতাবুল্লাহ ও সুন্নাহ সম্পর্কে আরো বেশি জানে, তাহলে এই নির্বাচক ব্যক্তি আল্লাহ ও তার রাসূল এবং মুসলিম জনগোষ্ঠীর সাথে খেয়ানত করলো।
উপরিউক্ত হাদিস থেকে দুটি বিষয় জানা গেলো, প্রথমত সরকারি পদ ও সম্পদের দায়িত্বের জন্যে ইলম থাকা আবশ্যক। দ্বিতীয়ত যে ব্যক্তিবর্গ বা পরিষদের কাউকে নিয়োগের ক্ষমতা অর্পণ করা হয় তাদের জন্যে অবশ্য কর্তব্য হলো, তারা যোগ্যতাকে মানদন্ড বানাবে। এ কারণে সার্ভিস কমিশনের জন্যে আবশ্যক হলো, ঘুষ, স্বজনপ্রীতি এবং সুপারিশ থেকে ঊর্ধ্বে উঠে ইলম সম্পন্ন ও পদের জন্যে উপযুক্ত ব্যক্তিকে নির্ধারণ করা।
সরকারি পদ ও রাষ্ট্রীয় সম্পদ সোপর্দ করার জন্যে জ্ঞানগত যোগ্যতার পাশাপাশি মানসিক ও শারীরিক যোগ্যতার পূর্ণমাত্রায় থাকা জরুরি। মানসিক ও শারীরিক যোগ্যতা দ্বারা উদ্দেশ্য হলো,আকেল (পরিণত জ্ঞানবুদ্ধিও অধিকারী), প্রাপ্তবয়স্ক এবং তী² মেধার অধিকারী হওয়া। কেননা প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পূর্বে মানুষের বোধ অসম্পূর্ণ থাকে। আকল বা মানসিক যোগ্যতা দ্বারা উদ্দেশ্য হলো অনুভূতিসম্পন্ন হওয়া, পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগতি, পর্যালোচনা শক্তি, দুর্যোগপূর্ণ সময়ের মোকাবেলা করার যোগ্যতার পদের অধিকারী হবার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ সম্পর্কে কুরআনে এসেছে: আল্লাহ তোমাদের জন্য তাকে ( তালূত ) মনোনীত করেছেন আর তাকে জ্ঞানে ও দেহে প্রাচুর্যতা দান করেছেন।শারীরিত যোগ্যতার মধ্যে রয়েছে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঠিকভাবে কর্মক্ষম হওয়া, দৃষ্টিশক্তি অর্থাৎ দেখার যোগ্যতা থাকা, পঙ্গু না হওয়া এবং সুস্থ হওয়া। যাতে দায়িত্বশীল ব্যক্তি নিজ দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে কোন প্রকার জটিলতার মুখোমুখি না হন।
বিশ্বস্ত হওয়া ঃ ইসলামী শিক্ষা আলোকে সরকারি যোগ্য কর্মীও জন্যে বিশ্বস্ত হওয়া আবশ্যক। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, শুআইব আ. এর মেয়ে যখন তার পিতার কাছে মূসা আ. কে মজদুর হিসেবে রাখার আবদার করেন, তখন কারণ হিসেবে তিনি বলেছিলেন, তার ( মূসা আ.) মাঝে মৌলিক দুই বৈশিষ্ট্য- শক্তিশালী ও বিশ্বস্ত হওয়ার গুণ রয়েছে। আল্লাহ বলেন: সে দুই মেয়ের একজন তার পিতাকে বললেন, আব্বাজান! তাকে আপনি মজুর হিসেবে রেখে দিন, কারণ আপনার মজুর হিসেবে উত্তম হবে সেই ব্যক্তি যে শক্তিশালী, আমানতদার। (চলবে)

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন