জম্মু ও কাশ্মীরের মহাসড়কে যান চলাচলের অনুমতির পর প্রায় ৪,০০০ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যবাহী ট্রাক কাশ্মীর উপত্যকায় পৌঁছেছে। পণ্য বহনকারী এসব ট্রাক রবিবার শ্রীনগরে পৌঁছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তরা। ইন্ডিয়া টুডের খবরে বলা হয়েছে, পণ্যবাহী এসব ট্রাকের মধ্যে ১ হাজারের বেশিটি ট্রাকে পেট্রোলিয়াম রয়েছে। এছাড়া ৫০০টি ট্রাকে তাজা সবজি, ভেড়ার মাংস,হাঁস-মুরগী রয়েছে। ট্রাফিক বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জম্মু থেকে শ্রীনগর যাওয়ার রাস্তা রবিবার খুলে দেওয়ার পর এসব পণ্য বোঝাই ট্রাক কাশ্মীর উপত্যকায় পৌঁছায়। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় ৪৬ জন ভারতীয় সেনা নিহতের পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্তে পাল্টাপাল্টি বিমান হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় সীমান্তের পার্শ্ববর্তী এলাকার রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেয় ভারত। ফলে কয়েক সপ্তাহ সেখানে প্রয়োজনীয় রসদ পৌঁছাতে না পারায় সবকিছুর উর্ধ্বমূল্য দেখা দেয়। অপর এক খবরে বলা হয়, আজাদ কাশ্মীরের বাসিন্দা চৌধুরী হাকিম দ্বীনের একটি বাংকার আছে। খুবই ঠাণ্ডা, মাটির নিচে স্যাঁতসেঁতে একটি গর্ত। ভারতের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে তিনি এবং তার পরিবার সেখানে আশ্রয় নিয়েছিলেন। যুদ্ধাবস্থার মধ্যে তারা রাতে এই বাংকারে থাকেন। হাকিম বলেন, তার কাছে মনে হয়, তিনি কবরের মধ্যে বাস করছেন। কারগিল যুদ্ধের পর থেকে তিনি এই বাংকারটি ব্যবহার করে আসছেন। ১৯৯৯ সালে কাশ্মীর নিয়ে পাক-ভারত কারগিল যুদ্ধ হয়েছিল। ২০ বছর পর পরমাণু শক্তিধর দেশদুটি ফের মুখোমুখি অবস্থানে চলে গেছে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ভারতনিয়ন্ত্রীত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় একটি আত্মঘাতী হামলায় একটি আধাসামরিক বাহিনীর ৪৪ জওয়ান নিহত হওয়ার পর সা¤প্রতিক এই সংকটের শুরু হয়েছে। নিয়ন্ত্রণ রেখা দিয়ে ভারত-পাকিস্তান পরস্পরের দিকে নিয়মিতভাবেই কামান ও মর্টারের গোলা নিক্ষেপ করছে। স¤প্রতি দুই প্রতিবেশী পরমাণু যুদ্ধের কিনার থেকে পিছু হটেছে। তবে এসময়ে দুই দেশের মধ্যে ব্যাপক ভারী গোলা বিনিময় ঘটেছে। তখন হাকিম দ্বীনের পরিবারসহ দুর্বিষহ বাংকারে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে ধান্না গ্রাম তার বাড়ি। ঘর থেকে একটি ঢিল ছুড়লে যতদূর যায়, চার ফুট লম্বা এবং পাঁচ ফুট চওড়া বাংকারটি দূরত্ব ঠিক ততটুকুই। কাজেই পরিবার নিয়ে মাটির নিচের এই ছোট্ট আশ্রয়ে অবস্থান করা কখনোই স্বস্তিদায়ক হতে পারে না। অধিকাংশ প্রাপ্তবয়স্করা কখনোই বাংকারের ছাদের নিচে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারেন না। কাজেই কার্ডবোর্ড কিংবা কার্পেটের ওপর সারাক্ষণ বসে থাকতে হয় তাদের। মাটির চুলা দিয়ে যখন ধোঁয়া বের হয়, তখন সবাই ত্রাহী দশায় পড়ে যায়। হাকিম বলেন, যখন গোলাবর্ষণ শুরু হয়, তখন শিশুদের নিয়ে আমরা বাংকারে চলে যাই। তিনি বলেন, বাংকারের মধ্যে হাঁটতে তাদের পায়ে জোর থাকে না। ভয়ে সেখানে তারা কিছু খেতেও পারেন না। হাকিমের বড় ভাই চৌধুরী মকবুল এমন একটি বাংকারে থাকেন, যেটা গোরস্তানের চেয়েও খারাপ। তিনি বলেন, মনে হচ্ছে আমরা কোনো কবরের মধ্যে অবস্থান করছি। ভারতীয় গোলায় হাকিমের বাড়িতে এক একটি গর্তের আকার হাতের মুঠোর সমান। ইন্ডিয়া টুডে। এএফপি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন