মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

তবু হারের শঙ্কা

ওয়েলিংটন টেস্ট

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ মার্চ, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

বৃষ্টির কারণে প্রথম দু’দিন একটি বল গড়ানো তো দূরের কথা, টসই হতে পারেনি। তৃতীয় দিন খেলা হলো মাত্র ২৫ ওভার। কিন্তু বাকি দু’দিনেই ওয়েলিংটন টেস্টে হারতে বসেছে বাংলাদেশ। শেষ দিনে হার এড়াতে হাতে থাকা ৭ উইকেট নিয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের সামনে।
আগের দিন দারুণ বল করেছিলেন দুই পেসার। এদিনও আবু জায়েদ রাহি শুরুতে কাঁপিয়ে দিলেন কিউইদের। কিন্তু তার তিন বলের রস টেইলরের দুই ক্যাচ পড়ার পর টেইলর থামলেন দুইশো করে, নিউজিল্যান্ডের লিডও ছাড়ালো দুইশো। দ্বিতীয় ইনিংসে তিন উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ এরমধ্যেই পড়েছে হারের শঙ্কায়। বেসিন রিজার্ভে চতুর্থ দিনের খেলা শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৮০ রান। মোহাম্মদ মিঠুন অপরাজিত আছেন ২৫ রানে, সঙ্গী সৌম্য সরকারের রান ১১। নিউজিল্যান্ডের করা ৬ উইকেটে ৪৩২ রানের জবাবে এখনো ১৪১ রানে পিছিয়ে মাহমুদউল্লাহর দল।
দিনের শুরুর আধঘন্টা যেমন ছিল, পুরো দিনের সঙ্গে তা যেন এখন বেশ খাপছাড়া। আগের দিনের মতই স্যুয়িং নিয়ে কিউইদের উপর চেপে বসেছিলেন রাহি। তার বলে ২০ রানে থাকা টেইলর প্রথমে শর্ট কাভারে ক্যাচ উঠিয়েছিলেন। তা নিতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ। এর এক বল পরেই দ্বিতীয় স্লিপে টেইলরের ক্যাচ ফেলে দেন সাদমান ইসলাম। ওই ওভারে শেষ বলেও কোনমতে বেঁচেছিলেন বারবার পরাস্ত হওয়া এই ব্যাটসম্যান।
শুরুর এই জড়তা সময়ের সঙ্গেই কেটে যায় তার। ধীরে ধীরে মেলতে থাকেন ডানা, বাড়াতে থাকেন রান। চার-ছয়ে দ্রুত রান বাড়িয়ে বাংলাদেশকে রাখেন ব্যস্ত। তৃতীয় উইকেটে উইলিয়ামসনের সঙ্গে তার ১৭২ রানের জুটিতেই সর্বনাশ হয়ে যায় বাংলাদেশের। ৭৪ করা উইলিয়ামসনকে ফিরিয়ে তাইজুল ইসলাম সে জুটি ভাঙলেও হেনরি নিকোলাসের সঙ্গে জমে যায় টেইলরের আরেক জুটি। চতুর্থ উইকেটে ২১৬ রানের জুটিতে বাংলাদেশের হতাশা কয়েকগুণ বাড়ান দুজন। বড় জুটিতে তারা রানও তুলেছেন দ্রুতলয়ে। ২০০ রান করে টেইলর আর ১০৭ রান করে নিকোলাস আউট হওয়ার পর আর বেশিক্ষণ ব্যাট না করে ইনিংস ছেড়ে দেয় কিউইরা।
২২১ রানে পিছিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই তামিম ইকবালকে হারায় বাংলাদেশ। দুই টেস্টেই দারুণ খেলা তামিম এবার ট্রেন্ট বোল্টের ইনস্যুয়িং বুঝতে না পেরে ৪ রান করে বোল্ড হন। ওয়ানডাউনে নামা মুমিনুল হক বিদেশের মাঠে তার রান খরা অব্যাহত রেখে বোল্টকে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। আরেক ওপেনার সাদমান টিকেছিলেন বেশিকিছুক্ষণ। তবে ম্যাট হেনরির বাউন্সার পুল করতে গিয়ে আনেন বিপদ।
৫৫ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর আর কোন বিপর্যয় হতে দেননি মিঠুন আর সৌম্য। শেষ দিনে হাতে ৭ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ কঠিন উইকেটে পুরো দিন ব্যাট করার। এখনো ১৪১ রানে এগিয়ে থাকা স্বাগতিকরা তাই ম্যাচের লাগাম অনেকটাই নিজেদের কাছে নিয়ে নিয়েছে। পরিস্থিতি আভাস দিচ্ছে নেতিবাচক কিছুর। কিন্তু খেলাটা ক্রিকেট বলেই তামিম দেখছেন আশার আলো, ‘কঠিন তো অবশ্যই। কিন্তু ক্রিকেটে যেকোন কিছুই সম্ভব। যেহেতু এখনো আমাদের হাতে সাত উইকেট এখনো আছে। রিয়াদ ভাই, লিটন এরা এখনো আছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হবে প্রথম সেশনটা যদি কোন উইকেট না হারাই বা বড়জোর এক উইকেট হারাই। কঠিন কিন্তু সম্ভব।’
দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান বাদ দিলে ব্যাট করতে বাকি আর কেবল দুই বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান (মাহমুদউল্লাহ ও লিটন দাস)। এরপরই টেল এন্ডাররা। তামিম তাই ব্যাটসম্যানদের কাউকে লম্বা সময় ব্যাট করার প্রত্যাশা করছে, ‘আশা একটাই- দীর্ঘ সময় ব্যাট করা। আজ যদি একটা উইকেট পড়ত আমাদের তাহলে খুব ভাল অবস্থানে থাকতাম ম্যাচটা ড্র করার জন্য। যেহেতু তিন উইকেট পড়ে গেছে আর লম্বা টেল আমাদের।’
তবে দিনশেষে এই পরিস্থিতি হতো না যদি না মাহমুদউল্লাহ বা সাদমানের কেউ একজন টেইলরকের ক্যাচ নিতে পারতেন। আবু জায়েদ রাহির বলে প্রথমে শর্ট কাভারে টেইলরকে জীবন দেন অধিনায়ক নিজেই, ঠিক এক বল পর দ্বিতীয় স্লিপে দামি ক্যাচটি সাদমানের হাত ফসকে বেরিয়ে যায়। টেইলরকে তখন আউট করতে পারলে হয়ত এত দ্রুত বড় লিড নিতে পারত না কিউইরা। এই আক্ষেপই এখন বাংলাদেশের সঙ্গী, ‘সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার হলো আমরা এমনই একজনের ক্যাচ মিস করেছি একই ওভারে যে দুইশো মেরে দিয়েছে। যদি না হতো, আমরা ওকে আউট করতে পারতাম। এক দুইটা উইকেট তখন নিতে পারলে আজ (গতকাল) আমাদের আরও কম সময় ব্যাট করা লাগত। ক্যাচ একটা এমন জিনিস যেকেউ মিস করতে পারে। মিস করাটা খারাপ কিন্তু এটা হয়ে যায়।’

সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ২১১
নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস : ৮৪.৫ ওভারে ৪৩২/৬ (আগের দিন ৩৮/২) (উইলিয়ামসন ৭৪, টেইলর ২০০, নিকোলস ১০৭, গ্র্যান্ডহোম ২৩*, ওয়েটলিং ৮; জায়েদ ৩/৯৪, ইবাদিত ০/৮৪, মোস্তাফিজ ১/৭৪, সৌম্য ০/৩৫, তাইজুল ২/৯৯, মুমিনুল ০/৪১)।
নিউজিল্যান্ডের লিড- ২২১ রান
বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস : ২৩ ওভারে ৮০/৩ (তামিম ৪, সাদমান ২৯, মুমিনুল ১০, মিঠুন ২৫*, সৌম্য ১২* ; বোল্ট ২/৩৪, সাউদি ০/১৮, হেনরি ১/১৭, গ্র্যান্ডহোম ০/৩, ওয়েগনার ০/৮)।
* চতুর্থ দিন শেষে

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন