শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

মার্কিন রাষ্ট্রদূতের কক্সবাজার জেলা সফর

কূটনৈতিক সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১২ মার্চ, ২০১৯, ৫:২২ পিএম

বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার গত ৮ থেকে ১০ জানুয়ারি কক্সবাজার জেলা সফর করেন। রাষ্ট্রদূত মিলার স্থানীয় কমিউনিটি, অঞ্চলটিতে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সহায়তা কার্যক্রম এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেন। এছাড়া তিনি সরকারি কর্মকর্তা এবং কক্সবাজার অঞ্চলে কর্মরত জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও এনজিওগুলোর কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন।
রোহিঙ্গাদের জন্য জাতিসংঘের ২০১৯ সালের জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানে গত ৩ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের বাড়তি ৪ কোটি ৫৫ লাখ ডলার দেয়ার কথা ঘোষণা করার পর ৮ মার্চ কক্সবাজার যান রাষ্ট্রদূত মিলার। ওই বাড়তি অর্থের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের সহায়তায় গঠিত নিয়মিত তহবিলটিতে যুক্তরাষ্ট্রের মোট অবদান ১০ কোটি ৫৫ লাখ ডলারে উঠেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের দেওয়া করের অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহৃত হওয়া নিশ্চিত করতে কক্সবাজার সফরে যান মিলার। কক্সবাজারে অবস্থানরত ৯ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে মানবিক সহায়তা ও আশ্রয় যোগানোর জন্য বাংলাদেশ সরকার, জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও এনজিওগুলো যে অসাধারণ কাজ করছে তা প্রত্যক্ষ করাও ছিল রাষ্ট্রদূতের সফরের উদ্দেশ্য।
কক্সবাজার সফরে রাষ্ট্রদূত মিলার আমেরিকান রেড ক্রস, আইএফআরসি, আইওএম, ইউএনডিপি, ইউএনএইচসিআর, ডব্লিউএফপিসহ বিভিন্ন সংস্থার কার্যক্রম দেখেন। তিনি আসন্ন ঝড় ও বর্ষা মৌসুমের পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্থানীয় এলাকাবাসীর সঙ্গে সংস্থাগুলো যেসব প্রশংসনীয় উদ্যোগ নিয়েছে তা তুলে ধরেন। যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে আরও কী করতে পারে রাষ্ট্রদূত তা-ও জানতে চান।
যুক্তরাষ্ট্র বহুমুখী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র (মাল্টি পারপাস সাইক্লোন শেল্টারস বা এমপিসিএস) তৈরি এবং দুর্যোগের সময়কার সাহায্যকর্মীদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার ও সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে। ইউএসএআইডি এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ২০০৮ সাল থেকে কক্সবাজারে নয়টি এমপিসিএস তৈরি ও ৬০টির মানোন্নয়ন করেছে। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে ইউএসএআইডি কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলায় আরও ১০০টির মতো এমপিসিএস মেরামতের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের সময় আশ্রয়কেন্দ্রগুলো শরণার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দা উভয়ের কাজে লাগে। এছাড়া সারা বছর ধরেই এলাকাবাসী তাদের বিভিন্ন কাজে এগুলো ব্যবহার করে।
রাষ্ট্রদূত মিলার বেশ কয়েকটি শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করেন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী ও সেখানে সেবাদানকারী এনজিওগুলোর লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি শরণার্থী শিবিরগুলোর সাধারণ সংস্কার আর রক্ষণাবেক্ষণ কাজ এবং আসন্ন ঝড় ও বর্ষা মৌসুম মোকাবেলার প্রস্তুতি দেখেন। রাষ্ট্রদূত মধ্য এপ্রিল নাগাদ ভাসানচরে এক লাখের মতো রোহিঙ্গাকে স্থানান্তর শুরু করার পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত জানতে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার এবং কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকসহ স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। ভাসানচরে যাওয়ার ব্যাপারটি সবকিছু জানাশোনার ভিত্তিতে সম্পূর্ণ স্বেচ্ছামূলক হবে-এ আশ্বাসকে তিনি স্বাগত জানান।
রাষ্ট্রদূতকে জানানো হয়, ভাসানচরে যাওয়া লোকেরা কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থানে থাকা রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য চর থেকে বের হতেও পারবে।
যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবেলায় গৃহীত মানবিক সহায়তা কার্যক্রমের বৃহত্তম দাতা। দেশটি ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইনে সহিংসতা শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ৫০ কোটি ডলার সহায়তা দিয়েছে। এ অর্থের মধ্যে ৪৫ কোটি ডলারের মতো দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং তাদের আশ্রয় দেওয়া স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচিতে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন