প্রশ্ন: পাঁচ ওয়াক্ত নামাযগুলো দুই, তিন, চার রাকাত ফরয বিশিষ্ট কেন? কম অথবা বেশি নয় কেন?
প্রথম উত্তর: মানুষের শরীরে আল্লাহ তায়ালা বাহ্যিক পাঁচটি ইন্দ্রিয় রেখেছেন: চোখ, নাক জিহ্বা, কান এবং অনুভূতি শক্তি। মানুষের জীবনের স্বাদ আস্বাদন করা এগুলোর ওপরই নির্ভর করে। এগুলো ছাড়া মানুষ একটা মরা গোশতের টুকরা ব্যতীত কিছুই নয়। কোন কাজেরও যোগ্য নয়। যদি এই ইন্দ্রিয়গুলো না হত, মানুষ ঠান্ডা আর গরমের পরিচয়, সুঘ্রাণ আর দুর্গন্ধের পার্থক্য, ভাল-মন্দের তফাৎ, সুস্বাদু আর অ-সুস্বাদুর পার্থক্য কিছুই বুঝতে পারতো না। এগুলোর কারণেই মানবজাতি আল্লাহর লক্ষ-কোটি নেয়ামত ব্যবহার করতে পারছে। নেয়ামতসমূহের শুকরিয়া স্বরূপ পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের সংখ্যা অনুযায়ী আল্লাহ তায়ালা পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরয করেছেন। প্রত্যেক ইন্দ্রিয়ের বিপরীতে একটি করে নামায ফরয করেছেন। আবার এই ইন্দ্রিয়গুলোর কাজের পরিমাণ আর সংখ্যার প্রতি দৃষ্টি রেখে রাকাতের পরিমাণও নির্ধারণ করেছেন। নিম্মে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা গেল।
ত্বক বা অনুভূতি শক্তি: তার ফায়দা দুটি। গরম বস্তুর উষ্ণতা অনুভব করা এবং ঠান্ডা বস্তুর স্নিগ্ধতা অনুধাবন করা। এই শক্তি পুরো শরীরে বিদ্যমান আছে। কোন বিশেষ অঙ্গের মাঝে সীমাবদ্ধ নয়। এই ইন্দ্রিয়ের শুকরিয়া স্বরূপ ফজরে দুই রাকাত ফরয করা হল।
ঘ্রাণ নেয়ার বা নাশিকা শক্তি: এই শক্তি চতুর্পাশ থেকে কার্যকর। প্রত্যেক দিক থেকে সুগন্ধ আর দুর্গন্ধকে অনুভব করতে পারে, তার শুকরিয়া স্বরূপ যোহরের নামাযে চার রাকাত ফরয করা হল।
জিহ্বা বা আস্বাদন শক্তি: জিহ্বা চার ধরনের স্বাদ অনুভব করতে পারে, টক, মিষ্টি, লবণাক্ত এবং তিক্ত। এজন্য আছরের নামাযে চার রাকাত ফরয করা হল।
চক্ষু বা দৃষ্টি শক্তি: চোখ তিনি দিকে দেখে। সামনে, ডানে এবং বামে। পিছনে কিছুই দেখে না। তার পরিবর্তে তিন রাকাত বিশিষ্ট মাগরিবের নামায ফরয হল। যাতে তার শুকরিয়া আদায় হয়।
কর্ণ বা শ্রবণ শক্তি: কান চতুর্দিকের শব্দ শুনতে পায়। রাতেও সব ধরণের শব্দ শোনে। তার মোকাবিলায় এশার নামাযে চার রাকাত নির্ধারিত হল যাতে এই নেয়ামতের শুকরিয়া আদায় হয়। যদি উক্ত পদ্ধতি তে নামাযসমূহ ফরয না হত, তাহলে কখনো বান্দা আল্লাহর নেয়ামতের ঋণ পরিশোধ করতে পারতো না। সুতরাং যে ব্যক্তি নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করে, সে কৃতজ্ঞ ব্যক্তি আর যে পড়ে না, সে অকৃতজ্ঞ নাফরমান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন