হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী বলেন, নিউজিল্যান্ডে মসজিদ হামলা গোটা বিশ্বের মুসলিম জনতার উপর সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নতুন চক্রান্ত। গতকাল হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ কক্সবাজার জেলা আয়োাজিত দু’দিনব্যাপী শানে রেসালত সম্মেললে তিনি একথা বলেন। দিনব্যাপী শানে রেসালত সম্মেলনে আল্লামা বাবুনগরী বলেন, জুমার নামাজে মুসল্লিদের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়ে প্রমাণ দিয়েছে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদের সাথে উগ্র খ্রিস্টান সন্ত্রাসীরা জড়িত।
মুসলমানদের সাথে সন্ত্রাসবাদের কোন সম্পর্ক নেই উল্লেখ করে বাবুনগরী বলেন, ইসলাম হলো সন্ত্রাস নির্মূল করে শান্তি প্রতিষ্ঠার ধর্ম ইসলাম। আন্তর্জাতিক বিশ্ব মানবতার কল্যাণে শান্তি স্থিতিশীলতা ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে। নিউজিল্যান্ডে মসজিদে হামলাকারী খুনি খ্রিস্টান সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণে জাতিসংঘকে কার্যকর ভ‚মিকা রাখতে হবে।
আল্লামা বাবুনগরী বলেন, রাশেদ খান মেনন একজন ইসলামবিদ্বেষী। তাকে জাতীয় সংসদ সদস্য পদ থেকে অপসারণ করতে হবে। দুপুরে আল্লামা বাবুনগরী মহেশখালীতে খতমে বোখারী অনুষ্ঠানে যোগদান করেছেন। বিকেলে তিনি সেখানে স¤প্রতি অগ্নিকান্ডে নতুন বাজারে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে দোকানদারদের জন্য সহানুভূতি কামনা করে দোয়া করেন। তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ক্ষতিপূরণ দেয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানান।
গত ১৫ ও ১৬ মার্চ ( জুমাবার ও শনিবার) কক্সবাজার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত শানে রসালত সম্মেলনে ড. আ.ফ.ম খালিদ হোসেন বলেন, ইনু-মেননদের মুক্তিযুদ্ধে কোন ধরনের ভূমিকা ছিলনা। তারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছেন। অথচ এখন মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে মায়াকান্না করছেন। ৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধারা ইসলামী চেতনা নিয়েই মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন। ইসলামের দুষমনরা বিভ্রান্তিকর কথা বলে দেশে উত্তেজনা সৃষ্টি করে আন্তর্জাতিক ইহুদী-খ্রিস্টান ও কাদিয়ানীদের দালালি করছে।
তিনি বলেন, শেষনবী মুহাম্মদ স.এর প্রতি সারা বিশ্বের মুসলমানদের আনুগত্য ও তাঁর সুন্নাতের উপর ঐক্যবদ্ধ দেখে আন্তর্জাতিক ইহুদী-খ্রিস্টান ও কাদিয়ানী গোষ্ঠী পাগল হয়েগেছ। তারা বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। ঈমানদার মুসলমানদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই ষড়যন্ত্র রুখতে হবে।
ড. খলিদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেছেন ২০ হাজার কওমী মাদরাসার ২০ লাখ শিক্ষার্থীদের মুল্যায়ন করতে হবে। আর রাশেদ খান মেনন-ইনুরা বলে কাউমী মাদরাসা নাকি বিষবৃক্ষ! অথচ কওমী মাদরাসা দেশের জন্য রহমত। মেনন-ইনুরা কাওমী মাদরাসা ও আল্লামা আহমদ শফির সাথে বেয়াদবি করেছেন। তাদেরকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে। সম্মেলনে মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়াত বাংলাদেশে মহাসচিব মাওলানা নুরুল ইসলাম জিহাদী বলেন, কাদিয়ানি বিশ্বনবী মুহাম্মদ স: কে শেষ নবী মানেনা। তাই তারা মুসলিম হতে পারেনা। তারা কাফের। কাদিয়ানীদের রষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবি জানান তিনি।
হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, ইহুদী- খ্রিস্টন ও কাদিয়ানীরা ইসলামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। আল্লাহ প্রেমিক, রসুল প্রেমিক একজন মুসলমানও দেশে বেঁচে থাকতে তাদের এই ষড়যন্ত্র সফল হবেনা।
সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন, মাওলানা মুজিবুর রমান যুক্তিবাদী, মাওলানা নুরুল ইসলাম সাদেক, মাওলানা আব্দুস সালাম পাটওয়ারী, মাওলানা মুফতি সাখাওয়াত হোসাইন, মাওলানা হাবিবুল্লাহ মুহাম্মদ কাসেমী, মাওলানা ছৈয়দ আলম আরমানী, প্রমূখ।
দুই দিনের সম্মেলনে বিভিন্ন অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন, জেলা হেফাজতে ইসলামের সভাপতি মাওলানা আবুল হাসান, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াছিন হাবিব, প্রবীণ আলেমে দ্বীন মাওলানা মাসরুর আহমদ, মাওলানা আবু বকর ছিদ্দিক, মাওলানা মোস্তাক আহমদ, মাওলানা এহতেশামুল হক মাদানী।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন