শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

আর্ন্তজাতিক বাণিজ্যে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের আধিপত্য

বিআইবিএমের গবেষণা প্রতিবেদন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ মার্চ, ২০১৯, ৬:৫০ পিএম

বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আর্ন্তজাতিক বাণিজ্যের অর্থায়নে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের আধিপত্য বেশি। ২০১১ সালে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রফতানি হয় ৭১ শতাংশ। সেই সময় রাষ্ট্রায়াত্ত্ব বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে হয়েছিল ১৮ শতাংশ। অবশিষ্ট বিদেশী বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। ২০১৮ সালে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রফতানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৪ শতাংশ। প্রায় ১৯ শতাংশ বিদেশী বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং ৭ শতাংশ রাষ্ট্রায়াত্ত্ব ব্যাংকের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।

বুধবার (২০ মার্চ) রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম অডিটোরিয়াম এবং বাংলাদেশ ব্যাংক সিলেট অফিসে ‘ট্রেড সার্ভিসেস অপারেশনস অব ব্যাংকস’ শীর্ষক বার্ষিক পর্যালোচনা কর্মশালায় উপস্থাপিত গবেষণা প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর এবং বিআইবিএম নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান এস এম মনিরুজ্জামান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিআইবিএমের চেয়ার প্রফেসর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক প্রফেসর ড. বরকত-এ-খোদা, পূবালী ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি প্রফেসর হেলাল আহমদ চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের সুপারনিউমারারি প্রফেসর ইয়াছিন আলি, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) শুল্ক মূল্যায়ন এবং অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা অধিদফতরের কমিশনার ড. মঈনুল খান। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এবং বিআইবিএমের মহাপরিচালক মো. আব্দুর রহিম।

বিআইবিএম’র কর্মশালাটি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একইসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিলেট অফিস থেকে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সিলেট অফিসের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ তারিকুজ্জামানসহ সিলেট শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সিলেট অফিসের অডিটোরিয়ামে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ তারিকুজ্জামান। কর্মশালায় গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বিআইবিএমের প্রফেসর এবং পরিচালক (প্রশিক্ষণ) ড. শাহ মো. আহসান হাবীবের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল।

এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ট্রেড সার্ভিসের উপর নির্ভরশীল। প্রত্যেকটি দেশে ট্রেড সার্ভিসের ক্ষেত্রে আলাদা রেগুলেশন রয়েছে। এক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০১৮ সালে নতুন গাইডলাইন করেছি।

তিনি বলেন, বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং তত্ত্বাবধানকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে নতুন গাইড লাইন আরও কার্যকরী করতে হবে। এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনলাইন ভিত্তিক রিপোটিং এবং নজরদারী ব্যাংকিং খাতে অনিয়ম ঠেকাতে এবং ডাটা সঠিকভাবে প্রদানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

ড. বরকত-এ-খোদা বলেন, ব্যাংকিং খাতে নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ আসছে এজন্য দক্ষ কর্মী গড়ে তোলা প্রয়োজন। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ার সঙ্গে রফতানির প্রবৃদ্ধিও বাড়বে। এর সঙ্গে ব্যাংকের অর্থায়ন জড়িত। সুতরাং ব্যাংকর্মীদের প্রশিক্ষণের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করতে হবে।

হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, ব্যবসায়ীরা পণ্য মূল্য বেশি দেখাতে না পারে সেজন্য ব্যাংকারদের সর্তক থাকতে হবে। একটি ডাটা বেজ করতে পারলে কোন ব্যবসায়ী এ ধরণের অনিয়ম করার সুযোগ পাবে না। তিনি বলেন, ব্যাংকগুলোকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনের সদস্য হলে সঠিকভাবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অর্থায়ন করা সহজ ও নিরাপদ হবে।

ইয়াছিন আলি বলেন, ব্যাংকাররা সর্তক থাকলে আর্ন্তজাতিক বাণিজ্যে কোন অনিয়ম করার সুযোগ নেই। মো. আব্দুর রহিম বলেন, উচ্চ প্রবৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় বাণিজ্য প্রবৃদ্ধিও বাড়ছে। এজন্য আর্ন্তজাতিক বাণিজ্যে কোথায় সমস্যা আছে তা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তবে ব্যাংকারদের বড় ঋণ এবং বড় এলসি খোলার ক্ষেত্রে সর্তক থাকতে হবে। গ্রাহক সম্পর্কে পুরোপুরি না জেনে অর্থায়ন করা ঠিক নয়।

সৈয়দ তারিকুজ্জামান বলেন, বিশ্বব্যাপী আর্ন্তজাতিক বাণিজ্য যেমন বেড়েছে, একে ঘিরে জটিলতা এবং আর্থিক অপরাধও বাড়ছে। যা এখন ব্যাংকিং খাতের বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ব্যাংক কর্মীদের দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন