জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। এমন অবস্থায় তিনি সম্পূর্ণ আরোগ্যলাভের আগেই কাজে যোগ দেয়ায় স্বাগতম ও অভিনন্দন জানিয়েছে আওয়ামীলীগপন্থী শিক্ষকদের একাংশের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু আদর্শের শিক্ষক পরিষদ’।
বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো: আব্দুল মান্নান চৌধুরী ও সম্পাদক অধ্যাপক বশির আহমেদ সাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই স্বাগতম ও অভিনন্দন জানানো হয়।
বিৃবতিতে উল্লেখ করা হয়, বিশ্বদ্যিালয়ের স্বার্থে সম্পূর্ণ আরোগ্যলাভের আগেই কাজে যোগ দেয়ায় মাননীয় উপাচার্যকে স্বাগতম ও অভিনন্দন জানাই। একই সঙ্গে উপাচার্যের অসুস্থতাকে ব্যাঙ্গ এবং ব্যক্তিগত আক্রমণ করে যারা অসত্য প্রচারপত্র বিলি করেছেন তাদের প্রতি জানাই তীব্র ধিক্কার।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, আমরা লক্ষ করেছি মাননীয় উপাচার্য মেয়াদোত্তীর্ণ নির্বাচনগুলো দেয়ার ব্যাপারে আন্তরিক। তিনি প্রায় দুই দশকের মেয়াদোত্তীর্ণ সিনেটে রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েটদের প্রতিনিধি নির্বাচনের মাধ্যমে দীর্ঘদিনের অচলায়তন ভেঙ্গে ফেলেছেন। আমরা বিশ্বাস করি সম্ভব দ্রুততম সময়ের মধ্যে অপরাপর মেয়াদোত্তীর্ণ নির্বাচনগুলোও তিনি সম্পন্ন করবেন। এ বিষয়ে একটি বিশেষ মহল প্রলাপ বকে নির্লজ্জপণার বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যাচ্ছেন। তাদের হাতে যখন বিভিন্ন ক্যাটাগরির পদে নির্বাচন দেয়ার দায়িত্ব (তাঁরা দায়িত্বকে ক্ষমতা মনে করেন) ছিল তখন মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার বিষয়টি তাঁদের অভিধানে ছিল না। সচেতন মহল তাঁদের দূরভিসন্ধি ও অপকৌশলের সঙ্গেভালো করেই পরিচিত।
বিবিৃতিতে উল্লেখ করা হয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কে স্বেচ্ছাচারী ছিলেন? কে বা কারা নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন? বিদগ্ধ সমাজসহ গোটা দেশবাসীএ বিষয়ে অবগত আছেন। এসব অভিযোগ আমলে নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার কার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছিলেন সকলেরই তা জানা। তাই দৃঢ়তার সাথে আমরা বলতে চাই এ বিষয়ে গুঞ্জনের কথা বলে অসত্য প্রচার করে কোনো লাভ নেই। আর কোন্ ‘মহৎ’ উদ্দেশ্যে পরস্পর আদর্শিক বৈপরীত্য নিয়ে কি করে শিক্ষকদের কয়েকটি গ্রুপ ‘সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ’ গঠন করেছেন তার রহস্যও কারো অজানা থাকার কথা নয়।
আরো বলা হয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এ্যাক্টের ২০(১) ধারা অনুযায়ী বছরেএকটি সিনেট অধিবেশন উপাচার্য করতে পারেননি বিষয়টি মোটেও এরূপ নয়। উপাচার্য যথারীতি বার্ষিক সিনেট সভা আহ্বান করেছিলেন। কিন্তু এতে অপপ্রচারকারীদের লুটপাটের জন্য ক্ষমতায় বসার এজেন্ডা অন্তর্ভুক্ত হয়নি বলে তারা সিনেটসভা অনুষ্ঠানে বাধা প্রদান করেছিলেন। এতে উপাচার্যের ব্যর্থতার কিছু নেই। মনে রাখতে হবে এ দায় সংশ্লিষ্ট সকলের। বিশেষত সিনেটসভা অনুষ্ঠানে বাধা দানকারীদের দায়ই সর্বাধিক।
বিবৃতিতে জাকসু নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি চালু রাখার জন্য আমরা দৃঢ়ভাবে অঙ্গীকারাবদ্ধ। তাই আমরাও মাননীয় উপাচার্যের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট সকল মহলের সাথে আলোচনা করে জাকসুসহ মেয়াদোত্তীর্ণ বিভিন্ন পর্ষদের নির্বাচন দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, উপাচার্য মেয়াদোত্তীর্ণ ডিন, সিন্ডিকেট, অর্থ কমিটি ও একাডেমিক কাউন্সিলের নির্বাচন দিতে গড়িমসি করছেন এমন অভিযোগ তুলে আন্দোলন করছেন আওয়ামীলীগপন্থী শিক্ষকদের একাংশ, বিএনপি ও বামপন্থী শিক্ষকদের নিয়ে গঠিত ‘সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ’।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন