শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

খেলাধুলা

ব্রাদার্সের নাটকীয় পরাজয়

সাইফের টানা শতক, জানির ৪ ও সাব্বিরের ১ রানের আক্ষেপ

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ মার্চ, ২০১৯, ৮:১৭ পিএম

১৩ বলে দরকার ১৬ রান, হাতে ৬ উইকেট। জয় পেতে সহজ এই হিসাবটা মেলাতে পারেনি ব্রাদার্স ইউনিয়ন। তাদের মুঠো থেকে বিকেএসপি ম্যাচ কেড়ে নিয়েছে মুকিদুল-শামিম-সুমনরা। সহজ ভাবে শেষ হতে চলা ম্যাচে হঠাৎ রোমাঞ্চ ছড়িয়ে ২ রানের নাটকীয় জয় তুলে নেয় বিকেএসপি।
ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের পঞ্চম রাউন্ডের ম্যাচে শনিবার জয় পয়েছে প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব ও শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবও। সাব্বির হোসেনের অলরাউন্ডার নৈপুন্যে উত্তরা স্পোর্টিং ক্লাবকে ৮ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়ে আসরের প্রথম জয় তুলে নেয় শাইনপুকুর। আর সাভারে ছিল সাইফ হাসান শো। তার অপরাজিত ও টানা দ্বিতীয় শতকে খেলাঘর সমাজ কল্যাণ সমিতিকে ৭ উইকেটে হারায় দোলেশ্বর।
মিরপুরে চিরাগ জানির ব্যাটে সহজ জয়ের পথেই ছিল ব্রাদার্স। ম্যাচ শেষে আবার তার আক্ষেপটাই ছিল বেশি। এক দিকে তার আউটের মধ্য দিয়েই শুরু হয় ব্রাদার্সের ঐ ধ্বস। অন্যদিকে মাত্র ৪ রানের জন্য ভারতীয় এই ব্যাটসম্যান সেঞ্চুরি বঞ্চিত হয়েছেন। ডান হাতের অফ স্পিনে জানিকে মুকিদুলের ক্যাসে পরিণত করে দলকে ম্যাচে ফেরান শামিম হোসেন। ৪৮তম ওভারে মাত্র ৪ রানের খরচায় অধিনায়ক মোহাম্মাদ শরিফ এবং জাহিদুজ্জামানকে তুলে নিয়ে ম্যাচে রোমাঞ্চ আনেন মুকিদুল। সব মিলে ইনিংসে ১৮ বছর বয়সী তরুণ পেসার নেন ৬২ রানে ৪ উইকেট। আর সুমন খানের করা শেষ ওভারে ১২ রানের হিসাব মেলাতে গিয়ে আরো দুই উইকেট হারায় ব্রাদার্স। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে করা বিকেএসপির ২৬৭ রান তাড়া করতে গিয়ে ৯ উইকেটে ২৬৫ রানে থেমে যায় ব্রাদার্সের ইনিংস। জানি ছাড়াও ব্রাদার্সের ইনিংসে ব্যাক্তিগত ফিফটি আছে জুনায়েদ সিদ্দিকীর, ৩৪ বলে ৪২ রান করেন শরিফুল্লাহ। এর আগে মিডিল অর্ডারে শামিম হোসেন, পারভেজ হোসেন ইমন ও অধিনায়ক আকবর আলির ফিফটিতে লড়াইয়ের পুঁজি পায় বিকেএসপি। ৫ ম্যাচে ব্রাদার্সের এটি তৃতীয় হার। সমান ম্যাচে দ্বিতীয় জয় বিকেএসপির।
ফতুল্লায় ব্যাটে বলে দুর্দান্ত নৈপুন্য দেখিয়ে দলকে জিতিয়েও মাত্র এক রানের আক্ষেপ রয়ে গেছে সাব্বিরের। এক রান নিলেই দলের জয় নিশ্চিত হওয়ার সাথে সেঞ্চুরিও পূর্ণ হবে সাব্বিরের। এমন সময় সাইদুল ইসলামের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ২২ বছর বয়সী তরুণ অলরাউন্ডার। তার ৭২ বলে ৯৯ রানের ইনিংসে ছিল ৭টি করে ছক্কা ও চারের মার। ১৪৯ বল হাতে রেখেই আসরের প্রথম জয় নিশ্চিত করে শাইনপুকুর।
এর আগে বল হাতেও ঝড় তোলেন সাব্বির। ১০ ওভারে মাত্র ২৭ রানের খরচায় তুলে নেন ৩ উইকেট। উত্তরা ৪৪.৪ ওভারে গুটিয়ে যায় মাত্র ১৪৫ রানে। সাতে নামা মিনহাজুল আবেদিন ৫১ রানে অপরাজিত থাকেন। প্রথম ম্যাচ জয়ের পর টানা চার ম্যাচ হারল উত্তরা।
সাভারে অনুষ্ঠেয় দিনের আরেক ম্যাচে টপ অর্ডারে সাদিকুর রহমান ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের ফিফটিতে ভালো শুরু পায় খেলাঘর। কিন্তু শেষ ১৫ ওভারে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ায় দোলেশ্বরের বোলাররা। আগের ম্যাচে ৫ উইকেট পাওয়া ফরহাদ রেজা এদিন নেন ৩ উইকেট, ২টি করে নেন আবু জায়দ ও সৈকত আলি। ৯ উইকেটে খেলাঘরের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৫৭।
জবাবে ৩৩ রানে উদ্বোধনী জুটি বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর আর পিছনে ফিরে তাঁকাতে হয়নি দোলেশ্বরকে। শুরুতে নেমে দলের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন সাইফ। তুলে নেন লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারের চতুর্থ শতক। ৩ উইকেট হারিয়ে ২০ বল বাকি থাকতে জয় পায় ফরহাদ রেজার দল।
আগের ম্যাচে গাজী গ্রুপের বিপক্ষে শতক হাঁকানো সাইফ এবার ক্যারিয়ার সেরা ব্যাটিংয়ে ১৩৪ বলে করেন অপরাজিত ১৩২ রান, সেখানে চার ছিল ৯টি, ৩টি ছক্কা। ৫ ম্যাচে দোলেশ্বরের এটি চতুর্থ জয়। অন্যদিকে মাত্র এক জয় খেলাঘরের।

সংক্ষিপ্ত স্কোর
বিকেএসপি-ব্রাদার্স, ফতুল্লা
বিকেএসপি : ৫০ ওভারে ২৬৭/৯ (শামিম ৭১, আকবর ৫৬, পারভেজ ৬৯; ইবাদত ২/৫৭, শরীফ ৩/৬৫, শরিফউল্লাহ ১/২৯, জানি ১/৫১, নাঈম জুনিয়র ১/৪৫)। ব্রাদার্স ইউ.: ৫০ ওভারে ২৬৫/৯ (মিজানুর ২৩, জুনায়েদ ৫২, জানি ৯৬, ইয়াসির ৩৮, শরিফউল্লাহ ৪২*; মুকিদুল ৪/৬২, শামিম ২/৪৩ ইকবাল ১/৪৬)। ফল : বিকেএসপি ২ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা : শামিম হোসেন।

খেলাঘর-প্রাইম দোলেশ্বর, সাভার
খেলাঘর : ৫০ ওভারে ২৫৭/৯ (সাদিকুর ৫৮, মাহিদুল ৮৬, মেনারিয়া ২১; রেজা ৩/৫২, আবু জায়েদ ২/৫৩, সানি ১/৩৫, সৈকত ২/৪৩)। প্রাইম দোলেশ্বর : ৪৬.৪ ওভারে ২৫৮/৩ (সাইফ ১৩২*, মাহমুদুল ২৪, মার্শাল ৪০, নাসিম ৩৪*; রবি ১/২৭, ইফরান ১/৬৭, ইফতেখার ১/১৮)। ফল : প্রাইম দোলেশ্বর ৭ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা : সাইফ হাসান।

উত্তরা স্পোর্টিং-শাইনপুকুর, মিরপুর
উত্তরা স্পোর্টিং : ৪৪.৪ ওভারে ১৪৫ (তানজিদ ২৫, মোহাইমিনুল ২১, মিনহাজুল ৫১*; শরিফুল ১/২৯, দেলোয়ার ১/২৪, শুভ ১/২৪, সাব্বির ৩/২৭, রকিবুল ২/১৮)। শাইনপুকুর : ২৫.১ ওভারে ১৪৯/২ (সাদমান ৩৮, সাব্বির ৯৯; জাহাঙ্গীর ১/২৪, নাইমুল ১/৪৭)। ফল : শাইনপুকুর ৮ উইকেটে জয়ী। ম্যাচসেরা : সাব্বির হোসেন।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন