বিশিষ্ট আইনজীবী ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, সড়ক দুর্ঘটনা রোধে সরকার ব্যর্থ। সড়কে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে তারা কোনোদিনই যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি। এ জন্য এটা বাড়তে বাড়তে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সুশাসনের অভাবে সরকারের কোন নির্দেশ কার্যকর হচ্ছে না। গতকাল গণফোরাম-এর উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবের ৩য় তলায় মাওলানা আকরাম খাঁ হলে পরিবহন খাতে নৈরাজ্য বন্ধ - নিরাপদ সড়কের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
ড. কামাল হোসেন বলেন, পত্র-পত্রিকায়ও লেখালেখি হচ্ছে, চারিদিকে বিষয়টির নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্টাও দেখা দিয়েছে। তিনি সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে সংসদে বিস্তারিত আলোচনার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এনিয়ে সংসদে বিস্তারিত আলোচনার দরকার আছে। সেখান থেকে যার যার দায়িত্ব রয়েছে তাদের নির্দেশ দিতে হবে। কেননা সুশাসনের অভাবে কোন নির্দেশ কার্যকর হচ্ছে না।
তিনি বলেন, সুশাসনের জন্য দরকার আইনের কার্যকর পদক্ষেপ। পুলিশ যে দায়িত্ব পালন করবে সে লক্ষ্য নিয়ে আইন করা হবে। কিন্তু পলিশকে যদি অন্যভাবে দুর্বল করে ফেলে তখন সে আইনের শাসন থেকে সড়ে গেলে সড়কে বিশৃংখলা দেখা দেয়। রাস্তায় গেলে বোঝা যায় কিভাবে বিশৃংখলা ঘটে। এখন আইন মেনে চলাতো দুরের কথা, অমান্য করাটা মহামারি আকার ধারণ করেছে। আইন শৃংখলা রক্ষায় নিয়োজিত বাহিনী সড়ক শৃংখলা ফেরাতে কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না, দায়িত্বে অবহেলা।
এদিকে লিখিত বক্তব্যে পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য গণফোরাম নেতা মেজর জেনারেল (অব.) আমসা আমিন বলেন, জনগণ আশা করেছিল শিক্ষাথীদের আন্দোলনকে ব্যবহার করে সরকার সত্যিকার অর্থে জনবান্ধব গণবান্ধব পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে উদ্যোগী হবে। কিন্তু সরকার উদ্যোগী হয়নি। উল্টো সড়কে দুর্ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছেই, দীর্ঘ হচ্ছে লাশের মিছিল। এবিষয়ে সরকার আন্তরিক নয়। তারা রাষ্ট্রের অর্থবিত্ত লুটপাটে ব্যস্ত। গণপরিবহনে নৈরাজ্য দীর্ঘদিন ধরে নানান অনিয়মের কারণে সৃষ্টি হচ্ছে। এর কারণ রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার। পরিবহন মালিক এবং শ্রমিক সংগঠনের নেতৃত্বে থাকেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। তারা তাদের চাঁদাবজির স্বার্থে গণপরিবহন ব্যবস্থায় বিশৃংখল পরিবেশ বজায় রাখে। তবে গণপরিবহন ব্যবস্থার এই নৈরাজ্যের দায় বিআরটিএ এড়াতে পারেনা। এ প্রতিষ্টানটি সুশাসনের অভাব,দুর্বল ব্যবস্থাপনা ও লোকবল সঙ্কটে আক্রান্ত। নৈরাজ্য বন্ধ ও জীবনের নিরাপত্তার জন্য ১৪ দফা দাবি তুলে ধরেন তিনি। তিনি বলেন, গণপরিবহন আইন ন্যায্যতার ভিত্তিতে যুগপোযোগী করে তার সুষ্ঠু প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে। দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ নিতে হবে। চালক-শ্রমিকের মজুরি ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্টকরণ এবং যাত্রাপথে বিশ্রামের ব্যবস্থা করতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনায় দোষী চালক ও মালিকের সাজা নিশ্চিত করতে হবে। মেয়াদোত্তীর্ণ সব গণপরিবহন রাস্তা থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। গণপরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে দলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু, মফিজুল ইসলাম খান কামাল, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, অ্যডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক, সাঈদুর রহমান, মোশতাক আহমেদ, রওশন ইয়াজদানী, কাজী হাবিব প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।#
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন